মৌসুম শেষ না হতেই অ্যাস্টন ভিলা ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। বিশ্বকাপ ও দুটি কোপা আমেরিকা জয়ী গোলরক্ষক তিনি। বড় ক্লাব তাঁকে দলে নেবে এই বিশ্বাস তাঁর ছিল। এমনকি বার্সেলোনায় যাওয়ার স্বপ্নও দেখছিলেন তিনি। অথচ গ্রীষ্মকালীন দলবদলের দরজা এক মাস খুললেও বার্সা তো দূরে থাক চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা কোনো দলের পথও খোলেনি তাঁর জন্য। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাঁকে দলে নিতে চায়। এমিও রেড ডেভিলস শিবিরে যেতে আগ্রহী। যদি-কিন্তুর ওপর ঝুলে আছে অনেক কিছু।
গোলরক্ষক টের স্টেগানে ভরসা হারিয়েছে বার্সেলোনা। ইনজুরি প্রবণতা বাড়লেও ৩৩ বছর বয়সী এই জার্মান গোলরক্ষক ফুরিয়ে গেছেন বলা যাবে না। তিনি গো ধরে বসে আছেন, চুক্তি থাকায় বার্সা ছাড়বেন না। আসলে বড় কোনো ক্লাব থেকে আকর্ষণীয় প্রস্তাব পাননি তিনি। ম্যানসিটি তাঁর বিষয়ে খোঁজ রাখছে–এমন একটি গুঞ্জন বের হলেও এখন পর্যন্ত তা জোরালো নয়।
খ্যাতির আরও বড় বিড়ম্বনায় সম্ভবত ভুগছেন রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রদ্রিগো গোয়েস এবং লিভারপুলের কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড লুইস দিয়াজ। দুজনই চ্যাম্পিয়ন ফুটবলার। তাদের কিনতে চাওয়া ক্লাবের অভাব নেই। দাম, ক্লাবের সক্ষমতা কিংবা আর্থিক স্বচ্ছতার কারণে দলবদল নিয়ে কেবল গুঞ্জনই বের হচ্ছে। ‘ডিল ডান’ হচ্ছে না।
রদ্রিগোকে যেমন কিনতে চায় আর্সেনাল; আবার চেলসি, বায়ার্ন মিউনিখ ও লিভারপুল তাঁর দিকে জোর নজর রাখছে। পিএসজির পছন্দের তালিকাতেও নাকি আছেন তিনি। এমনকি সংবাদমাধ্যম ই-নোটিসেস দাবি করেছে, রদ্রিগোকে কেনার স্বপ্ন দেখেন বার্সা প্রেসিডেন্ট লাপোর্তে। রদ্রিগো রিয়াল মাদ্রিদকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লা লিগা জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছেন। টেকনিক্যালি তাঁকে নিঁখুত ফুটবলার মনে করা হয়। যে কারণে গত মৌসুমে ম্যানসিটি তাঁকে দলে নিতে মুখিয়ে ছিল। কিন্তু সিটিজেনরা শীতকালীন মৌসুমে ওমর মারমৌশকে কেনায় ওই লড়াই থেকে সরে এসেছে। ওদিকে আর্সেনাল ননি মাদুইকে ও ভিক্টর ইয়োকেরেসের কেনার কথা এগিয়ে রাখায় রদ্রিগোকে নিয়ে ব্যাকফুটে চলে গেছে। বায়ার্ন আবার ১০০ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে কেনার সাহস দেখাচ্ছে না।
দামের কারণে বায়ার্ন লুইস দিয়াজের ডিলেও ব্যাকফুটে আছে। তাদের ৬৫ মিলিয়ন ইউরোর প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে লিভারপুল। দিয়াজের পছন্দ ক্যাম্প ন্যু। কিন্তু বার্সা স্টেগান, আরাহো, ক্রিস্টেনসেনদের বিক্রি করতে না পারলে আর্থিক ভারসাম্যের কারণে নিবন্ধন করানো নিয়ে শঙ্কায় পড়ে যাবে। ভিক্টর ওসিমহেন আরেক উদাহরণ। দুই মৌসুম আগে তাঁকে ১৫০-১৮০ মিলিয়নে চেলসি, পিএসজি, ম্যানইউর মতো ক্লাব কিনতে চেয়েছিল। ওসিমহেন নাপোলি ছাড়েননি। গত মৌসুমে আবার তিনি দল ছাড়তে উঠে পড়ে লাগলেও নাপোলির সঙ্গে সমঝোতা হয়নি। ইউরোপের শীর্ষ লিগের দলবদলের দরজা বন্ধ হওয়ায় তিনি ধারে গালাতাসারায়েতে যোগ দেন। এবার মাত্র ৩০ মিলিয়নে গালাতাসারায়ে কিনে নিচ্ছে নাইজেরিয়ান তারকাকে।
খ্যাতি, প্রতিভা, তারুণ্য সব থাকতেও ব্রাডলি বারকোলাকে ভালো দামে বিক্রি করতে পারছে না পিএসজি। হুগো একিটিকের মতো তরুণ ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার বাজারে শো পিস হয়ে আছেন। লিভারপুল কেনাকাটায় অনেকটা এগিয়ে গেলেও ডারউইন নুনিয়েজকে এখনও বিক্রি করতে পারেনি। নতুন টনি ক্রুসকে ডাকা হলেও জার্মানির অ্যাঞ্জেলো স্টিলার এখনও স্টুটগার্টে পড়ে আছেন। এসব দলবদলের শেষ দেখতে এখনও অবশ্য হাতে প্রায় দেড় মাস সময় আছে।