English

27.7 C
Dhaka
মঙ্গলবার, জুলাই ১, ২০২৫
- Advertisement -

মেসিকেন্দ্রিক মার্কিন ফুটবল: ফিফার পরিকল্পনাও ব্যর্থ!

- Advertisements -

প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) যখন ক্লাব বিশ্বকাপে ইন্টার মায়ামিকে প্রথমার্ধেই ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে দেয়, তখন প্রশ্ন উঠতে থাকে—এই ম্যাচের মানে কী? ফিফা কিংবা মার্কিন মিডিয়া যে ভাবে এই ম্যাচকে সাজিয়ে তুলেছিল, বাস্তবতা তার ছিটেফোঁটাও বহন করছিল না।

মাঠে একপেশে দাপট, মানহীন প্রতিরোধ এবং গোলকিপারের অসহায়তায় যেন পুরোটা ছিল একতরফা অনুশীলন সেশন।

ইন্টার মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাচেরানো পরবর্তী সময়ে ম্যাচটিকে আখ্যা দেন ‘রক্তপাতের মতো কিছু’, কিন্তু একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, ‘মেসি দুর্দান্ত খেলেছেন’—যা মাঠের চিত্রের সঙ্গে মেলেনি।

এটাই আজকের মার্কিন ফুটবল বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। এখানে খেলোয়াড় বড়, দল নয়। চরিত্র বড়, কাঠামো নয়।

মেসির সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি মুহূর্ত, পাস বা ফ্রি-কিক যেন মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের কাঁচামাল। এমএলএস, অ্যাপল টিভি থেকে শুরু করে ফিফা—সবাই একসূত্রে গাঁথা এক বৈশ্বিক বাণিজ্যিক কনসার্টে।

২০২৪ মৌসুমে ইন্টার মায়ামি যখন এমএলএসের ‘সাপোর্টারস শিল্ড’ জেতে, তখন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো নিজেই মাঠে নেমে ঘোষণা দেন—মায়ামি ক্লাব বিশ্বকাপে খেলবে। অথচ এমএলএস কাপ জয়ীদের কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। এই ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত ছিল মূলত মেসিকে বিশ্বমঞ্চে রাখারই এক কৌশল।

এমনকি পরবর্তী সময়ে ইনফান্তিনো ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকেও টুর্নামেন্টে আনার চেষ্টা করেন, যদিও সেটি বাস্তবায়ন হয়নি।

এই টুর্নামেন্ট ঘিরে টিকিটের দাম শুরু হয়েছিল ৩৪৯ ডলার থেকে। পরে দর্শক না পেয়ে ২০ ডলারে ৫টি টিকিট বিক্রি করতে হয় কলেজ শিক্ষার্থীদের কাছে। এটাই ফিফার ‘স্টার-পাওয়ার’ নির্ভর বিপণনের বাস্তব ফলাফল।

অবশ্য মেসি কিছু জাদু দেখিয়েছেন—পোর্তোর বিপক্ষে তার একটি দুর্দান্ত ফ্রি-কিক ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। তার ম্যাচে গড়ে ৬০ হাজারের বেশি দর্শক এসেছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—মেসি চলে গেলে কি এ দর্শক ফিরবে?

এখানে পিএসজি হয়ে উঠেছে মার্কিন মডেলের প্রতিচ্ছবি। এক সময় তারা মেসি-নেইমার-এমবাপ্পে নিয়ে ‘গ্ল্যামার ফুটবল’ খেলত। এখন সেইসব তারকাকে বিদায় জানিয়ে তারা তৈরি করেছে এক পরিপূর্ণ দল। লুইস এনরিকের অধীনে তারা খেলছে সংগঠিত, কৌশলী, নিবেদিত ফুটবল।

নিজেই বলেছেন এনরিক, ‘ফুটবল ব্যক্তিগত খেলা নয়। মাঠে এবং মাঠের বাইরে দল হিসেবে একসঙ্গে কাজ করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ‘

ইন্টার মায়ামির রেকর্ড পয়েন্ট, মাঠ ভরতি দর্শক, মেসিকেন্দ্রিক উদযাপন—সব মিলিয়ে যেন একটা অস্থায়ী শো। কিন্তু এর স্থায়িত্ব কোথায়? নতুন প্রজন্ম কি মেসির পরে আর ফিরবে? আর এমএলএস কি চিরকাল ‘রিটায়ারমেন্ট লিগ’ হয়েই থাকবে?

যদি সত্যিকার প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল গড়তে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তাহলে হয়তো তারকামুখী চুম্বক থেকে বের হয়ে গঠনমূলক কাঠামো নির্মাণে মনোযোগ দিতে হবে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/0yuz
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন