জহিরুল ইসলাম মিশু: রমজানের শুরুতেই আরেক দফা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ইফতার সামগ্রীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলোর দাম দুই-তিন দিনের ব্যবধানে আরেক দফা বেড়েছে।এ অবস্থায় ভোক্তারা বলছেন এখনই বাজার মনিটরিং করা না গেলে অবস্থা আরো খারাপের দিকে যাবে।
সোমবার ৪ এপ্রিল সিলেট নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
এদিকে রোজার শুরুতেই উত্তাপ ছড়িয়েছে গরু-খাসির মাংস ও মুরগির বাজারে। একদিন আগে ৬০০ টাকা বিক্রি হওয়া গরুর মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। আর মুরগির কেজি পৌঁছেছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।
রমজানের শুরুতে মাংস ও মুরগির বাজারে ক্রেতাদের ভিড় লেগেছে। ফলে গরুর মাংসের সংকট দেখিয়ে মাংসের দাম বাড়িয়েছেন ক্রেতারা।সাথে সাথে মুরগির বাজারে ও এর প্রভাব পড়েছে।
রমজান শুরুর আগে ব্রয়লার মুরগি ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও সরবরাহ কম থাকার অজুহাতে বর্তমানে বাজারে ২০০ থেকে ২২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর কক মুরগি দেড়শ’ টাকার স্থলে প্রতি পিস ২২০ টাকা এবং লাল মুরগি ৪৮০ টাকার স্থলে ৫২০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রোজার শুরুর আগে সিলেট সিটি কর্পোরেশন গরুর মাংস ৬০০ টাকা কেজি এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়।অথচ রোজা শুরুর সাথে সাথে গরুর মাংস হাড়সহ ৭০০ টাকা এবং হাড়বিহীন ৮০০ টাকা এবং খাসি মাংস ৯০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।
সুবিদবাজার এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, রোজার শুরুতে গরুর মাংস কিনতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। ৬০০ টাকার মাংস সাড়ে ৭শ’ টাকায় পৌঁছেছে। গরুর মাংস কিনতে না পেরে মুরগি কিনেছি, তাও বাড়তি দামে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জবাইয়ের জন্য সিটি করপোরেশন কর্তৃক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সিলমারা গরু বিক্রি করার কথা থাকলেও বিনা সিলে গরু জবাই করে বিক্রি করা হচ্ছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, আমরা গরুর মাংসের দাম ৬০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮০০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছি। তবে মুরগির বাজারে দাম নির্ধারণ করা যায়নি। দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, কিন্তু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেন।
এদিকে রোজার শুরুতে ইফতার সামগ্রীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলোর দাম দুই দিনের ব্যবধানে আরেক দফা বেড়েছে। সিলেট নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। রমজান মাসে ইফতারে অনেকে অন্যান্য খাবারের সঙ্গে বেগুনি খেতে পছন্দ করেন। তাই প্রতিবারই রমজান এলে বেগুনের দাম বেড়ে যায়। এবারও রমজানের প্রথম দিনে বেগুনের দাম দফায় দফায় বেড়ে আজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজিতে। গত শুক্রবার পর্যন্ত বেগুনের দাম ছিল সর্বোচ্চ ৬০ টাকা। আর গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩২ টাকা দরে, আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়, তেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ১৭০ থেকে ১৯০ টাকায়, আর পাম ওয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। ছোলা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬৫ টাকা দরে, ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, রসুন ১১০ টাকা ও আদা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা করে।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুন বেড়ে শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, মরিচের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।
নগরের বন্দরবাজার এলাকার এক সবজি বিক্রেতা জানান, নতুন করে শসা, বেগুন, গাজর, লেবু, মরিচ এগুলোর দাম বেড়েছে। রমজানে এসব সবজির চাহিদা বেশি থাকায় আড়ত থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন