English

38 C
Dhaka
বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
- Advertisement -

টানা ৬ দিন বন্যার পানিতে ডুবে আছে সিলেট নগরীসহ ১৩ উপজেলা

- Advertisements -

জহিরুল ইসলাম মিশু,সিলেট ব্যুরো: টানা ৬ দিনের অব্যাহত বন্যার পানিতে নাকাল সিলেট মহানগরী সহ ১৩ উপজেলার প্রায় ২৫ লাখ মানুষ।দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে (সিলেট অঞ্চল) ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এ অঞ্চলে বৃহস্পতিবারও বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। এতে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হওয়ার শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সিলেট অঞ্চলে ভারি বৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এদিকে ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

Advertisements

সিলেটের ১৩ উপজেলা ছাড়াও সিলেট নগরীর কয়েকটি এলাকার লক্ষ লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। পানির নিচে তলিয়ে আছে বেশ কয়েকটি আবাসিক এলাকার রাস্তাঘাট। এসব এলাকার অধিকাংশ বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগে আছেন বাসিন্দারা। বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য ও শৌচাগারের অভাবে অনেকে তাদের বাসাবাড়ি ছেড়ে অন্যস্থানে যাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট সদর, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। প্লাবিত এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও বাঁধ ও পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন লোকজন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, ঔষধ, জ্বালানি তেলের দোকান পানির নিচে থাকায় এসব উপজেলায় মানবিক বিপর্যয়ের শংকা দেখা দিয়েছে।

সিলেট নগরীসহ জেলার অন্তত ১৩ টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে মানুষজন। সেখানেও পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটছে তাদের। একতলা বিশিষ্ট অনেক আশ্রয়কেন্দ্রের ভেতরেও বন্যার পানি উঠে গেছে। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাটে এমন চিত্র দেখা গেছে।

স্হানীয় সূত্রে জানা যায়, অনেকগুলো আশ্রয়কেন্দ্রের নিচতলায় পানি উঠেছে। আর একতলা আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে পানিবন্দি থাকায় জরুরি প্রয়োজনে নৌকা ব্যবহার করে অন্যত্র ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে।

Advertisements

সিলেটের অন্তত সাড়ে ৫০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া ২০০-এর মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। ফলে জেলার প্রায় ৭০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জেলার শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া পানি বৃদ্ধির ফলে আরও দু-একটি উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে একই দশা হতে পারে।

সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১ হাজার ৪৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৫০০টি পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।জেলার গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) ইয়াসমিন নাহার রুমা জানান, পাঠদান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্ষতি তো হবেই। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে তো আমাদেরও কিছু করার নেই। পানি কমলে এই ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হবে।

এদিকে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সিলেটের বিদ্যুৎব্যবস্থা। জেলার লক্ষাধিক গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। সিলেট নগরীতে অর্ধ লক্ষাধিক গ্রাহক এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন গেল দুইদিন ধরে। সিলেটে বরইকান্দি সাবস্টেশন ও শাহজালাল উপশহরে একটি ফিডার পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এসব স্টেশন পুরো চালু করা সম্ভব নয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন