জহিরুল ইসলাম মিশু,সিলট: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন যতো দেরি হবে, দেশ ততো পিছিয়ে যাবে। বিনিয়োগ আসবে না, মায়ের-মেয়েরা নিরাপত্তা হারাবে, জুডিশিয়াল ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে, আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে। সেই জন্য দরকার একটা নির্বাচিত সরকার। যেই সরকারের পেছনে রয়েছে জনগণ।
এ সময় তিনি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের মানুষের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন।মানুষ যাতে বুঝতে পারে বিএনপি ছাড়া আমাদের কোন উপায় নাই।সোমবার দুপুরে সিলেট নগরীর পাঠানটুলা এলাকায় একটি অভিজাত সেন্টারে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এমএ মালেক আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনায় দোয় মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনুসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি লন্ডনে তারেক রহমানের সাথে বৈঠক করে ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের সময় ঠিক করেছেন, এই জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি ইলিয়াস আলীসহ সকল গুম হওয়া নেতাদের কথা স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, এমনি এমনি হঠাৎ করে হাসিনা পালায় নাই, বহু মানুষের সংগ্রাম, রক্ত, ত্যাগ মিলিয়ে আমরা ফ্যাসিবাদ মুক্ত হলাম। আমরা তো লড়াই করেছি গণতন্ত্রের জন্য। আমরা একটা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই যেখানে মানুষ কথা বলতে পারবে, বাকস্বাধীনতা থাকবে, মহিলারা নিরাপত্তা পাবে, তরুণরা কাজের সুযোগ পাবে, মানুষ চিকিৎসার সুযোগ পাবে এমন একটা দেশ আমরা চাই। সেই দেশ তৈরীর জন্য নতুন করে লড়াই শুরু করেছি। আর আমাদের এই সংগ্রামের নেতা হচ্ছেন তারেক রহমান। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনো অসুস্থ অবস্থায় আমাদের পরমার্শ দিয়ে যাচ্ছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সেই দল সেই যে দল স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে।
আমরা একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই, কর্মস্থান সৃষ্টি করতে চাই এবং বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্র করতে চাই। সেজন্য বিএনপি ৩১ দফা দিয়েছি। শহীদ জিয়ার রহমান যেই বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই দেশ আমরা গড়তে চাই। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কেউ যাতে আঙ্গুল তুলে না বলতে পারে আমরা জমি দখল করেছি, চাঁদাবাজি করেছি, জায়গা দখল করেছি। জয় আমাদের সুনিশ্চিত, ইনশাআল্লাহ।তিনি বলেন এটা আমাদের পূণ্যভূমি। সিলেট আমাদের কাছে আরো প্রিয় আরেকটা কারণ আছে তা হচ্ছে আমাদের নেতা তারেকে রহমান সাহেবের শ্বশুর বাড়ি। সেই জন্য আমরা এখানে আসতে আনন্দ পাই, শান্তি পাই।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, এই সরকার নির্বাচন করতে পারবে না। হাসিনা চলে গেছে তার দোসররা দেশেই আছে। সচিবালয় থেকে জেলা উপজেলায় তারা আছে। তারা ভোট চায় না। নির্বাচন না দিয়ে দির্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, এই সরকারের ভেতরে আ.লেগের আমলারা যা করেছে, তাতে এই সরকার নির্বাচন করতে পারবে না। তবে আমরা আমলাদের এই চক্রান্তকে প্রতিহত করবো, প্রতিরোধ করবো। অতঃপর নির্বাচন আদায় করবো।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ, ইকবাল মাহমুদ টুকু, নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, যুগ্ম সম্পাদক খাইরুল কবির খোকন,চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির,সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি. কে. গউছ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের শামীম, জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মহানগর বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।