English

31 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
- Advertisement -

সিলেটে ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত লাখ লাখ মানুষ

- Advertisements -

জহিরুল ইসলাম মিশু: সিলেটে টানা ৮ দিনের বন্যার পানিতে বিপর্যস্ত ১৩ উপজেলা সহ সিটি কর্পোরেশনের লাখ লাখ মানুষ।প্রতিদিন প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এদিকে জকিগন্জ উপজেলায় আমলসীদে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ত্রি মোহনা ডাইকে ভাঙ্গন দেখা দেওযায় প্রবল বেগে পানি ঢুকে উপজেলার অর্ধশতাদধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এছাড়াও বাকি উপজেলা গুলোতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বৃষ্টির বেগ এবং উজানের ঢলের তোড় কমে আসায় সিলেট মহানগরীর বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে শুরু করেছে। প্লাবিত এলাকা থেকে পানি নামছে ধীরে ধীরে। তবে পানি পুরোপুরি নেমে যেতে চার থেকে পাঁচদিন সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিলেট আবহাওয়া অফিস ও সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্র জানায়, সিলেটে গতকাল সন্ধ্যা থেকে বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। আজও পানি কমা অব্যাহত আছে। বন্যায় সিলেট জেলায় সওজ ও এলজিইডির আওতাধীন মোট ১২১টি সড়কের ৩৩২ কিলোমিটার সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়াও ভেঙে গেছে ২টি কালভার্ট।

এলজিইডি সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইনামুল কবীর জানান, বন্যায় ১১১টি রাস্তার ২৬৭ কিলোমিটার অংশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সদর উপজেলা ও কোম্পানীগঞ্জে ২টি কালভার্ট ভেঙেছে। যেহেতু রাস্তার উপরে এখনো পানি, তাই ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ নির্ধারণ করা যাচ্ছে না।

সড়ক বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সিলেটের আন্তঃজেলা ১০টি প্রধান সড়কের ৬৫ কিলোমিটার অংশ প্লাবিত হয়েছে, এর মধ্যে ৫টি সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ আছে। জকিগঞ্জে বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ২টি সড়কে পানি দ্রুত বাড়ছে।

এদিকে বন্যায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার ১৫৩টি সড়কের ৬৫৭ কিলোমিটার ডুবে গেছে। ২ জেলার বেশ কিছু উপজেলার অভ্যন্তরীণ ও জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে ব্যাপক দুর্ভোগে রয়েছেন ২ জেলার অন্তত ২০ লাখ মানুষ। তবে এখন পর্যন্ত এসব সড়ক পানির নিচে ডুবে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে পারেনি সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)।

ভয়াবহ বন্যার কারণে মানবতের দিন পার করছেন বানভাসি লোকজন।চারপাশে অথৈ পানি থাকায় বাড়িঘর থেকে বের হতে পারছেন না বন্যা কবলিতরা। পানির স্রোতে ভেসে গেছে অনেকের ঘরের মজুদ খাদ্য। হাতে কাজ নেই, ঘরে নেই খাবার। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে বানভাসীদের মধ্যে। ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা বানভাসীরা কোনো নৌকা দেখলেই আশায় বুক বাঁধেন- এই বুঝি এলো ত্রাণের নৌকা।

জানা গেছে, বন্যাদুর্গত বিভিন্ন এলাকায় সরকারি ত্রাণ বরাদ্দের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় একবারেই অপ্রতুল।তাই ত্রাণ তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন এলাকার বানভাসী মানুষেরা। সরকারি ত্রাণ সহায়তা শুরু করা হলেও অপ্রতুল ত্রাণ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা। একই সঙ্গে বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্যের মরাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। প্লাবিত এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে জ্বর, আমাশয়, ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগ। বানভাসীরা রোগে-শোকে ভুগলেও দুর্গত এলাকায় এখনো মেডিকেল টিম পৌঁছেনি। শ্রমজীবী মানুষরা খাবার সংগ্রহ করতে না পারায় অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। বন্যা কবলিত এলাকায় গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দেয়ায় গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

এদিকে বন্যাদূর্গতদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণের ব্যবস্থা করা আছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। মন্ত্রী শনিবার সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরের সিএনজি স্টেশন পয়েন্টে ৬ টি ইউনিয়নের বন্যাদুর্গত দুইশত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরন করেন।

মন্ত্রী ত্রাণ বিতিরন শেষে অনুষ্ঠানস্হল ত্যাগ করার পর ত্রাণের জন্য পুলিশের সাথে হাতাহাতি ও সংঘর্ষে লিপ্ত হয় ত্রাণের জন্য অপেক্ষমান বানভাসী মানুষ।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন