English

32 C
Dhaka
বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
- Advertisement -

‘কার কখন ডাক আসবে জানি না, পরিবারের সবার সাথে দূরত্ব কমিয়ে চলেন সুখ-দুঃখ ভাগ করি’

- Advertisements -

চলে গেলেন ওয়াসিম ভাই, সাংবাদিক লোদী ভাই।
একের পর এক চলে যাওয়া দেখে বারবার মানসিকভাবে ভেঙে চুরমার হচ্ছি, আবার কোনওমতে উঠে দাঁড়াচ্ছি।
জানি না এই যাত্রা আমাদের কোথায় নিয়ে দাড় করাবে।
যাই হোক কোনও এক সময় কক্সবাজার শুটিংয়ের ডেট পড়লে দীর্ঘ সময়ের জন‍্য। কিছুদিন থেকে আমাকে ঢাকা চলে আসতে হবে, তাও প্লেনে।
আমার তো আবার কলিজায় পানি নাই।
এমনি ভয় পাই, তার মধ‍্যে একা কিছুতেই প্লেনে উঠব না। কেউ ঢাকা যাচ্ছে কি না খবর নিয়ে জানা গেলে দু’জন যাচ্ছেন। খলিল ভাই আর ডান্স ডিরেক্টর বাবু ভাই।

আমি ভয় পাচ্ছি বুঝতে পেরে, বাবু ভাই বিভিন্ন রকম জোক বলে বলে আমার ভয় কাটানোর চেষ্টা করলেন। খলিল ভাই ও আমাকে বারবার বুঝাতে থাকলেন, প্লেন কোনও ব‍্যাপার না।

ঢাকা নেমে দু’জনে আমাকে তাজমহল রোডের বাসায় নামিয়ে দিয়ে গেলেন। মনে হয়নি উনারা আমার আত্মীয় নন, বরং মনে হচ্ছিল আত্মীয়ের চেয়ে বেশি।এক পরিবার ছিলাম আমরা।
বড্ড মন কাঁদে দু’জন ই আল্লাহর ডাকে চলে গেছেন।

Advertisements

আমজাদ ভাইয়ের একটা ছবি হয়েছিল হীরামতি নাম।
নায়ক নায়িকা ছিলেন সোহেল-দিতী। সেই ছবির রিলিজ উপলক্ষে যশোরের মনিহার সিনেমা হলে আমাদের দাওয়াত। যশোরের সেই মনিহার সিনেমা হল দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম।

আমাদের শিল্পীদের যাওয়া উপলক্ষে লাল গালিচাসহ বিভিন্ন লাইটে সাজানো মনিহার সিনেমা আমার কাছে পৃথিবীর আশ্চর্যতম জিনিস মনে হয়েছিল।

হলের ওপরে হোটেলের মতো রুম, রাজকীয় খাবার-দাবার, আমি কেবল মুগ্ধ হয়ে দেখতেই থাকলাম। হলের মালিক সিরাজ ভাইয়ের রাজকীয় মেহমানদারী সেই সময়ে আসলেই আমাকে আশ্চর্য করেছিল।

ওই ছবির মেইন শিল্পীদেরকে স্টেজে ডাকা হচ্ছে। হঠাৎ মাইকে আমারও ডাক আসল। আবার সেই হাটু কাঁপাকাঁপি শুরু। ওই প্রথম হলে এতো দর্শক একসঙ্গে দেখে অবাক হয়েছি কেবল।যতখানি চোখ যায় মানুষের মাথা আর মাথা। বাংলা সিনেমার সেই স্বর্ণালী দিন আর নেই।

পরেরদিন সবার শুটিং থাকার কারণে ওই রাতেই সবাই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিলাম। এক গাডড়িতে সোহেল-দিতী সাংবাদিক ইমরুল শাহেদ ভাই-সহ আমরা। গভীর রাতে মাঝ রাস্তায় গাড়ি নষ্ট হয়ে গেল। চারিদিকে এতো অন্ধকার  আমরা কেউ কারও চেহারা দেখতে পাচ্ছিলাম না। সবাই নার্ভাস।

Advertisements

অনেক চেষ্টা করে একটা মুড়ির টিন বাসে উঠার সৌভাগ্য হয়েছিল। সিট নেই, কোনওমতে আমি, দিতী, ইমরুল শাহেদ ভাই বসেছিলাম। রাজীব সাহেব আর সোহেল দাড়িয়ে ছিল।

অনেক্ষণ পরে ফেরিতে উঠলাম। সবাই ক্লান্ত। ধুলাবালি মাখা ফেরির ফ্লোরে বসে পড়লাম। এটা বোধহয় ৮৬/৮৭ সালের কথা। আমি আর দীতি পাশাপাশি বসে গল্প করছি। তখন দিতীর বড় মেয়েটা বোধহয় পাঁচ ছয়মাস বয়স। অনেক কথা হয়েছে,ওসব নাই বলি। হাঁসি-কান্নার সেই রাত এখনও মানসপটে সিনেমার মতো ভাসে।

সেই সফর সঙ্গীদের মধ‍্য আমি আর ইমরুল ভাই আছি। আমজাদ ভাই, সোহেল, দিতী, রাজীব সাহেব কেউ নেই কোথাও নেই। শূন‍্য এ বুকে এখন কেবল অপেক্ষা কখন আমার ডাক আসে। মমতার এই সংসার ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবলে কি ভয়ে কুকড়ে যাই?
হ‍্যা যাই। তারপরও যেতে হবে। আমাদের কার কখন ডাক আসবে জানি না। পরিবারের সবার সাথে দূরত্ব কমিয়ে চলেন সুখ-দুঃখ ভাগ করি।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন