English

31 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
- Advertisement -

নিয়ন্ত্রণ করতে হবে: বাড়ছে কিশোর অপরাধ

- Advertisements -
যে বয়সে বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা, মাঠে খেলার কথা, সৃজনশীল কাজের মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রতিভা বিকাশের পথে এগিয়ে যাওয়ার কথা সেই বয়সের কিশোররা এখন ছুরি, চাকু, এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়।মাস্তানি করে, মাদকের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকে। রাস্তাঘাটে ছিনতাই করে। মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে।
বাধা দিলে রক্তারক্তিখুুনাখুনি করে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বখাটে কিশোর-তরুণদের নিয়ে এমন অনেক অপরাধীচক্র গড়ে উঠেছে। নানা অপরাধে অনেক কিশোর-তরুণ জড়িয়ে পড়ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তালিকা অনুযায়ী, রাজধানীতে ৫২টি কিশোর গ্যাং রয়েছে।
ডিএমপির আটটি অপরাধ বিভাগের অধীন ৩৫টি থানা এলাকায় এসব চক্রের সদস্যসংখ্যা প্রায় ৬৯২। শুধু রাজধানী নয়, সারা দেশেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে কিশোর অপরাধীরা। মাঝেমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী অভিযান চালালেও কিশোর অপরাধ কমছে না।
কিশোরদের একটি অংশের বেপরোয়া আচরণ এখন পাড়া-মহল্লায় আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।খুন, ধর্ষণ, মাদক চোরাচালান, মাদক সেবনসহ সাম্প্রতিক সময়ের কিছু ঘটনা কিশোর অপরাধের ভয়াবহতা আবার নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে।
রাজনৈতিকভাবেও এসব কিশোর অপরাধীকে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় অনেক নেতার ছত্রচ্ছায়ায় কিশোর গ্যাংগুলো গড়ে ওঠে এবং তারা বিভিন্ন নৃশংস অপরাধ করতেও সাহস পায়। রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার কারণে তাদের মধ্যে এক ধরনের ‘গ্যাং কালচার’ গড়ে উঠছে। র‌্যাবের একটি সূত্র জানিয়েছে, বেশির ভাগ কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠার পেছনে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মদদ রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করেন স্থানীয় ‘বড় ভাইয়েরা’।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজে নানা অসংগতি রয়েছে। নিজেদের সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে কিশোররা। তাদের আচরণে পরিবর্তন হচ্ছে। তারকাখ্যাতি, হিরোইজম, ক্ষমতা, বয়সের অপরিপক্বতা, অর্থলোভ, শিক্ষাব্যবস্থার ঝুঁকি এবং পারিবারিক বন্ধন দুর্বল হওয়ায় তাদের সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টি ও মানসিক বিকাশ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এর ফলে সমাজের বিভিন্ন গ্যাং কালচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছে কিশোররা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন, আকাশ সংস্কৃতি ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা বা তথ্য-প্রযুক্তি কিশোরদের অপরাধপ্রবণতা বাড়ার অন্যতম কারণ বলেও মনে করেন তাঁরা। এখন এলাকাভিত্তিক সামাজিক কর্মকাণ্ড নেই বললেই চলে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে না, খেলার মাঠ কমে এসেছে। সামাজিকভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন না থাকায় কিশোররা সাইবারজগতে ঢুকছে।

অপরাধ ও সমাজ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরিবার ও সামাজিক পর্যায়ে সঠিক পরিচর্যা ও পর্যবেক্ষণ কিশোর অপরাধ কমাতে অনেক সাহায্য করবে। তাঁদের মতে, পরিবার ও সমাজে যদি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ থাকে, তাহলে কিশোররা অপরাধমূলক ঘটনায় কম জড়াবে। সেই সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকেও কঠোর হতে হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন