English

30 C
Dhaka
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪
- Advertisement -

বইমেলা থেকে বেইলি রোডে এসে দুই সন্তানসহ পপির মৃত্যু

- Advertisements -
Advertisements

দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে একুশে বইমেলা গিয়েছিলেন পপি পোদ্দার। বইমেলা থেকে বের হয়ে মেয়ে আদৃতা ও ছেলে সংকল্পকে নিয়ে যান বেইলি রোডে। কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে কাচ্চি খেতে ঢুকেছিলেন তারা। রেস্টুরেন্টে গিয়ে ভাই পীযূষ ও তার স্ত্রীকেও যেতে বলেছিলেন পপি।

কিন্তু পীযূষ টিভিতে ক্রিকেট খেলা দেখছিলেন, তাই রেস্টুরেন্টে যেতে আগ্রহ দেখাননি। ওই কাচ্চি খেতে গিয়ে দুই সন্তানসহ না ফেরার দেশে চলে গেছেন পপি।

Advertisements

শুক্রবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে বসে আহাজারি করছিলেন পপির মা বাসনা পোদ্দার আর ভাই পীযূষ পোদ্দার। তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন অন্য স্বজনরা।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে পীযূষ বলেন, ‘আমাকেও খেতে যাওয়ার জন্য ফোন করেছিল। কিন্তু আমি যাইনি। টিভিতে খেলা দেখছিলাম। একটু পর আমার বোন ফোন করে “আগুন লাগছে” বলে চিৎকার করতে থাকে। পাশে থাকা ভাগনি চিৎকার করে বলছিল “মামা আমাদের বাঁচাও।

আমরা বের হতে পারছি না।” আমি শান্তিনগরের বাসা থেকে এক দৌড়ে গিয়েছি। কিন্তু গিয়ে দেখি রেস্টুরেন্টে শ্মশানের মতো আগুন জ্বলছে। বাইরে থেকে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছু করার ছিল না।’

পপির মা বাসনা পোদ্দার বলেন, ‘ওরা রেস্টুরেন্ট থেকে বাইর হইতে চাইছিল। কিন্তু গেট আটকায়ে রাখছিল। তাই বাইর হইতে পারে নাই।’

স্বজনরা জানান, মৃত পপি পোদ্দার ছিলেন গৃহিণী। তার স্বামী শিপন পোদ্দার একজন আবাসন ব্যবসায়ী। বড় মেয়ে আদৃতা সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তো। আর ছেলে সংকল্প পড়তো প্রথম শ্রেণিতে, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে।’

স্বজনরা জানান, তারা পরিবারের সবাই মিলে আগুন লাগা ওই ভবনের সামনে যান। সেখানে তখন দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছিল। আগুন একটু কমে আসার পর কেউ একজন একটা ব্যাগ দেয় তাদের হাতে।
সেই ব্যাগটি দেখে পপির ভ্যানিটি ব্যাগ বলে চিনতে পারেন। ব্যাগে পপির মোবাইল ফোন, আইডি কার্ড, টাকা সবই ছিল।

বাসনা পোদ্দার আহাজারি করে বলছিলেন, ‘আমি এই ব্যাগ দিয়া কী করুম? আমার মেয়ে নাতি-নাতনিরা কেউ তো বারাইয়া আইতে পারলো না। আগুন তাদের শেষ কইরা দিলো।’

কাচ্চি ভাইয়ের দুই কর্মী মারা গেছেন

বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুনে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের দুই কর্মী মারা গেছেন। কাচ্চি ভাইয়ের ম্যানেজার জিসান বলেন, ‘আমাদের ২৫ জন স্টাফ ডিউটিতে ছিলেন। তাদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন। একজন  জিহাদ হোসেন (২২)। অন্যজন রকি (২০)। তারা কাচ্চি ভাইতে কাজ করতো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আগুন লাগার ঠিক পাঁচ মিনিট আগে বাইরে বের হয়েছিলাম। সে সময় রেস্টুরেন্টে ১০ থেকে ১৫ জন কাস্টমার ছিল। আগুনের সূত্রপাত হয় নিচতলার চুমুক নামে একটি চায়ের দোকান থেকে।’

রিফাত নামে এক প্রত্যক্ষদর্শীও জানান, আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল নিচতলা থেকে। আগুন ওপরের দিকে বাড়ার কারণে ভেতর থেকে অনেকেই বের হতে পারেননি।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামে একটি রেস্তোরাঁয় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এ আগুনের ঘটনায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা গেছেন ১০ জন। এ ছাড়া ভর্তি রয়েছে আরও অনেকে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে আরও ৩৩ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে কয়জন নারী, পুরুষ কিংবা শিশু তা এখনও জানার চেষ্টা চলছে। রাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন