English

29 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
- Advertisement -

‘মৌসুমী ইস্যু ইন্ডাস্ট্রির খুব ক্ষতি করেছে’: ইলিয়াস কাঞ্চনের সাথে সাংবাদিকদের মতিবিনিময় সভা

- Advertisements -

মৌসুমী ইস্যু চলচ্চিত্র শিল্পের খুব ক্ষতি করেছে বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের সাথে এক মতবিনিময় সভায়। এ সময় আরো বলা হয়, যে শিল্পীদের প্রতি দর্শকের প্রবল আকর্ষণ রয়েছে, যাদের অনেকে আইডল মনে করেন, তাদের যেকোনো নেতিবাচক কর্মকাণ্ড ও অপকর্ম তাদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। চলচ্চিত্রেরও বদনাম হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে চলচ্চিত্র অঙ্গনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন একদল সাংবাদিক। মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সেগুনবাগিচায় ইলিয়াস কাঞ্চনের ‘নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন’র অফিস কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেন দৈনিক আজকালের প্রতিবেদক আহমেদ তেপান্তর।

এ সময় বাংলাদেশ প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জল বলেন, ‘মৌসুমী ইস্যুটা আমাদের ইন্ডাস্ট্রির খুব ক্ষতি করেছে। আমরা ইমেজ সঙ্কটে পড়েছি। এ মুহূর্তে কেবল সাংবাদিক ভাইদের ইতিবাচক মানসিকতাই পারে অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে।’

এ সময় তিনি অন্যান্য সমিতির কাছেও ইতিবাচক মানসিকতা বজায় রাখার আহ্বান জানান।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক লিটন এরশাদ, দুলাল খান, কামরুল হাসান দর্পণ, আহমেদ সাব্বির রোমিও, জাহাঙ্গীর বিপ্লব, আবুল কালাম, নিথর মাহবুব, রাহাত সাইফুল, পান্থ আফজাল, রঞ্জু সরকার, আশরাফুল আলম আসিফ, রুহুল আমিন ভূঁইয়া, মুহিব আল হাসান, নাজমুল আহসান, মইনুল ইসলাম, লিটন মাহমুদ প্রমুখ।

সভার শুরুতে কামরুল হাসান দর্পণ শিল্পী সমিতির সভাপতির কাছে কিছু প্রস্তাব তুলে ধরে বলেন, ‘বিগত কয়েক মাস ধরে চলচ্চিত্রের বিশেষ করে শিল্পীদের মধ্যকার নানা নেতিবাচক ঘটনা ঘটে চলছে, যা শিল্পী সমাজের ভাবমর্যাদা থেকে শুরু করে পুরো চলচ্চিত্র সম্পর্কে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সচেতন মহলে সমালোচনার সৃষ্টি করছে। এতে আমাদের বিনোদন সাংবাদিক সমাজকেও বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি ও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। পুরো চলচ্চিত্র নিয়ে হাস্যরস ও সমালোচনা তৈরি করছে। বিগত কয়েক মাসে যেসব নেতিবাচক ঘটনা ঘটেছে, তার প্রায় সবকটির সাথে শিল্পী সমিতির সদস্যরা কোনো না কোনোভাবে জড়িত। যে শিল্পীদের প্রতি দর্শকের প্রবল আকর্ষণ রয়েছে, যাদের অনেকে আইডল মনে করেন, তাদের যেকোনো নেতিবাচক কর্মকাণ্ড ও অপকর্ম তাদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। চলচ্চিত্রেরও বদনাম হয়। এমনিতেই চলচ্চিত্রের চরম দুরবস্থা চলছে, তার মধ্যে শিল্পীদের এমন আচরণ ও অপকর্ম আরো খারাপের দিকে ঠেলে দেবে।’

‘কোনো শিল্পী ফেসবুক লাইভে কিংবা ইউটিউবে এসে এমনসব বিষয় নিয়ে হাজির হন এবং যেসব অশালীন ভাষা ব্যবহার করেন, তাতে পুরো চলচ্চিত্র সমাজকে দুর্নামের ভাগিদার করছে।’

তিনি বলেন, বিগত ছয় মাসে যত ঘটনা ঘটেছে তার সবই নেতিবাচক। প্রশংসা করার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।

তিনি ইলিয়াস কাঞ্চনকে শিল্পী সমিতির সভাপতি হিসেবে, এর সদস্যদের মধ্যে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং তারা যাতে এমন কোনো কাজে জড়িয়ে না পড়েন, এ ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন করার উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান। শিল্পীদের মর্যাদা রক্ষায় সমিতির পক্ষ থেকে অফিসিয়ালি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘শিল্পীরা যদি নিজেদের সুশৃঙ্খল ও আচরণে সংযত এবং মর্যাদা বজায় রেখে চলেন, তাহলে চলচ্চিত্রে অপ্রীতিকর ঘটনা যা সবচেয়ে বেশি আলোচিত-সমালোচিত হয়, তা অনেকাংশে কমে যাবে। কারণ, চলচ্চিত্রের অন্য যে কারোর চেয়ে শিল্পীদের ঘটনা সবচেয়ে বেশি দ্রুত ছড়ায় এবং মানুষের আগ্রহও সবচেয়ে বেশি। তাদের ছোট্ট ঘটনাও অনেক বড় হয়ে দেখা দেয়।’

দুলাল খান ইলিয়াস কাঞ্চনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনার উদ্যোগ ও আহ্বানই পারে শিল্পীদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে, শিল্পী সমাজের মান-মর্যাদা রক্ষা করতে।’

তিনি বলেন, ‘সমিতির সভাপতি, সর্বোপরি শিল্পীদের অভিভাবক হিসেবে এ দায়িত্ব আপনার পালন করা উচিৎ। যেসব শিল্পী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিংবা ইউটিউবে চলচ্চিত্রের সম্মান ক্ষুণ্ণ হয় এমন কথাবার্তা বলেন, তাদেরকে সতর্কবার্তা প্রদান ও সচেতন হওয়ার দিকনির্দেশনা দিতে পারেন। কিছু শিল্পীর অগ্রহণযোগ্য আচরণ ও অপকর্মের কারণে পুরো চলচ্চিত্রের বদনাম মেনে নেয়া যায় না। আমরা যারা সাংবাদিকতা করি, তাদেরও এই বদনামের ভাগিদার হতে হচ্ছে। বিভিন্ন মহলে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কর্মস্থলে ও সাংবাদিক সমাজেও তির্যক কথা শুনতে হচ্ছে। সর্বোপরি আমাদের সুস্থ সাংবাদিকতার জায়গাটি সংকুচিত হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতির উত্তরণে আপনার অগ্রণী ভূমিকা আমরা আশা করছি।’

সভায় উপস্থিত অন্য সাংবাদিকরাও একই মতামত দেন এবং এ ব্যাপারে শিল্পী সমিতির সভাপতি হিসেবে ইলিয়াস কাঞ্চনকে তার সদস্যদের সংযত হওয়া এবং তারকাসুলভ আচরণ বজায় রাখার ক্ষেত্রে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করার অনুরোধ জানান।

ইলিয়াস কাঞ্চন ধৈর্য সহকারে সকলের বক্তব্য শোনার পর বলেন, ‘আমিও কিছু শিল্পীর নানা নেতিবাচক ঘটনায় বিব্রত। আপনাদের নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এসব প্রশ্নের উত্তর দিতেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। আমরা ইতোমধ্যে শিল্পীদেরকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং অন্যান্য মাধ্যমে যাতে শিল্পীসুলভ কথাবার্তা ও আচরণ করেন, এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছি। তাদের সচেতন হওয়ার জন্য সমিতির পক্ষ থেকে আহ্বান ও সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অচিরেই এ ব্যাপারে মিটিং করে অফিসিয়ালি সমিতির সকল সদস্যদের এ বার্তা পৌঁছে দেয়া হবে। এ ব্যাপারে আপনাদের সহযোগিতাও প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে প্রত্যাশা, এমন কোনো সংবাদ পরিবেশন করবেন না, যাতে বিষয়টি আরো ব্যাপক আকার ধারণ করে। আমরা পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। চলচ্চিত্রের কল্যাণে এর ইতিবাচক দিকগুলো বেশি করে তুলে ধরবেন বলে আশা করছি।’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি নায়িকা মৌসুমীকে ডিস্টার্ব করা হচ্ছে- এমন অভিযোগে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে নায়ক জায়েদ খানকে চর মারেন মৌসুমীর স্বামী ও নায়ক ওমর সানী। পরে জায়েদ খান তাকে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করার হুমকি দেন। পরে অবশ্য জায়েদ খানের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো জায়েদ খানের পক্ষে বিবৃতি দেন মৌসুমী। এরপর ফেসবুক লাইভে এসে নিজের বক্তব্য দেন ওমর সানী। তিনি এ ঘটনার বিস্তারিত জানানোর ব্যাপারে তাদের ছেলে ফারদিনের কথা উল্লেখ করেন। তবে ফারদিনও তার বাবার অভিযোগের সাথে একমত পোষণ করে এবং বলে, জায়েদ খান যে তার মাকে ডিস্টার্ব করেন সে ব্যাপারে তাদের জন্য যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন