English

27 C
Dhaka
বুধবার, এপ্রিল ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মাহবুব জামিলের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

এ কে আজাদ: মাহবুব জামিল। চলচ্চিত্র সংসদ সংগঠক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। এ দেশে চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব তিনি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি সিঙ্গার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চেয়ারম্যান, সিঙ্গার এশিয়া ও হংকং এর আঞ্চলিক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন।

বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ছিলেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠান নির্মাতা ও উপস্থাপক হিসেবেও ছিলেন সুপরিচিত। চলচ্চিত্র বিষয়ক অনেক লেখালেখি করেছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়।

২০০৮ সালে গঠিত তত্বাবধায়ক সরকারের মন্ত্রী পদমর্যাদায়, উপদেষ্টা দায়িত্ব পালন করেছেন মাহবুব জামিল। আমাদের দেশের এই বরেণ্য সজ্জন মানুষটির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ । তিনি ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর (১৫ নভেম্বর দিবাগত রাত ২টা ৪০ মিনিটে) রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। প্রয়াত এই বরেণ্য গুণী মানুষটির স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

মাহবুব জামিল ১৯৪১ সালের ১১ নভেম্বর, বীরভূমে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান এবং সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘স্টুডেন্টস ফিল্ম ক্লাব’-এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মাহবুব জামিল । পরে পাকিস্তান চলচ্চিত্র সংসদ-এর সাধারণ সম্পাদক হন ১৯৬৯ সালে। স্বাধীনতাপরবর্তিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংসদ ফেডারেশন-এর সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।

মাহবুব জামিল ১৯৭৮ সালে, লোকার্ণো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
অবার হাউজেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জুরি বোর্ডের সদস্য হিসেবেও কাজ করছেন।

পেশাগত জীবনে মাহবুব জামিল প্রথমে ফিলিপস বাংলাদেশ লিঃ-এ উর্ধতন কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরী করেন। পরে তিনি দীর্ঘদিন সিঙ্গার বাংলাদেশ লিঃ-এর সাথে ছিলেন। সিঙ্গার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান, সিঙ্গার এশিয়া এবং হংকং-এর আঞ্চলিক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।

ফখরুদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে যোগদান করেন মাহবুব জামিল। দায়িত্বের অংশ হিসেবে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি শিল্প, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী পদমর্যাদায় দায়িত্ব পালন করেন।
২০১১ সালের ২৮ জুলাই রবি আজিয়াটা লিমিটেডের পরিচালক বোর্ডের উপদেষ্টা হিসেবে যোগদান করেন।
তিনি আইস টেকনোলজি লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

সমাজবিজ্ঞান, চলচ্চিত্র ও নাটকের উপর লেখা বেশ কিছু গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে মাহবুব জামিলের। এর মধ্যে তাঁর গল্প নিয়ে ‘নিঝুম অরণ্যে’ নামে, পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় ‘নিঝুম অরণ্যে’ চলচ্চিত্রটি মুক্তিপায় ২০১০ সালে। তাঁর লেখা বেশ কয়েকটি নাটকও টেলিভিশনে প্রচারিত হয়ছে।

মাহবুব জামিল তাঁর কর্মের স্বীকৃতি হিসেবে বহু পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। যারমধ্যে উল্লেখযোগ্য- ব্যবসা ব্যবস্থাপনায় স্যার জগদীশচন্দ্র স্বর্ণপদক (১৯৮৪) ও
ব্যবস্থাপনা উৎকর্ষতায় বাংলাদেশ শিক্ষা ব্যবস্থাপনা ট্রাস্ট স্বর্ণপদক (১৯৯৫)।

মাহবুব জামিল বিয়ে করেন রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী নাহার জামিলকে। তাদের দুই সন্তান- মেয়ে অদিতি জামিল অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী, ছেলে রুবাইয়াত জামিল ঢাকায় ব্যবসা করেন।

এ দেশের চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের পুরোধাদের মধ্যে অন্যতম একজন তিনি। ৬০-৭০ দশকে চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলন, যে ক’জন সংগঠকের পরিশ্রম ও মেধায় বিকশিত হয়েছিলো তাদের মধ্যে অন্যতম মাহবুব জামিল । তিনি একজন সফল ব্যবসায়ীও। তাঁর অমায়িক ব্যবহার, তাঁর ব্যক্তিত্ব সবাইকে আকর্ষণ করতো। তিনি একজন সুবক্তাও ছিলেন। ছিলেন একজন উঁচুমানের লেখক ও শিল্প সমলোচক । সর্বোপরি তিনি একজন বরেণ্য চলচ্চিত্র তথা শিল্প-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।
একজন স্বপ্নদ্রষ্টা, একজন দূরদর্শী, উৎসর্গীকৃত প্রাণপুরুষ সর্বজন প্রিয় বরেষু মাহবুব জামিল এর স্মৃতির প্রতি জানাই সশ্রদ্ধ অভিবাদন, গভীর ভালোবাসা ও অতল শ্রদ্ধা।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন