English

29.3 C
Dhaka
রবিবার, আগস্ট ৩, ২০২৫
- Advertisement -

আত্মহত্যা মানতে নারাজ পরিবার: তাদের ভাষ্য, ‘ছাদ থেকে ফেলে সুমাইয়াকে মেরেছে জ্বীন!’

- Advertisements -

একমাসের ব্যবধানে দুইবার ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার পর অবশেষে মারা গেছেন মোসা. সুমাইয়া (১৯) নামে এক গৃহবধু। আজ শুক্রবার (১৮ মার্চ) সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

তবে সুমাইয়ার এই মৃত্যু আত্মহত্যা হিসেবে মানতে নারাজ তার পরিবার ও স্থানীয়রা।  তাদের ভাষ্য, সুমাইয়াকে জ্বীনে ধরেছিল। জ্বীনের কারণেই তাকে এভাবে মরতে হলো।

নিহত সুমাইয়া ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌরসভার কাপুড়িয়া সদরদি মহল্লার দাড়িয়ারমাঠ এলাকার হাফিজুর রহমানের (৫২) মেয়ে। তিনি কওমি মাদ্রাসার একজন শিক্ষক। পাশাপাশি হজ্ব এজেন্সির প্রতিনিধি হিসেবে সৌদিতে লোক পাঠান। বাবার মাদ্রাসা থেকেই পড়াশুনা শেষে আড়াই বছর আগে কাপুড়িয়া সদরদি গ্রামের হাশমত মুন্সির ছেলে মুন্সি চান মিয়ার (২৬) সাথে সুমাইয়ার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক বছরের একটি সন্তান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধায় স্বামীর বাড়ির ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হন সুমাইয়া। এরপর তাকে প্রথমে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স  ও পরে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সুমাইয়া।

আরও জানা যায়, এর মাসখানেক আগেও সে এভাবে ছাদ থেকে লাফিয়েছিলেন সুমাইয়া। তখন তার হাত পা ভেঙ্গে যায়। হাসপাতাল থেকে ব্যান্ডেজ করে বাসায় ফিরলেও সে পুরোপুরি সুস্থ হননি। তার চিকিৎসা চলছিলো। এর মধ্যেই  আবার লাফ দেয় সে।

সুমাইয়ার বাবা হাফিজুর রহমান বলেন, তার মেয়ের উপরে জ্বীনের নজর ছিলো। ওই খারাপ জিনিসটাই তাকে বারবার মেরে ফেলতে চেষ্টা করে যাচ্ছিলো। গত মাসে পারেনি। এবার সে হাত-পা ভাঙ্গা অবস্থাতেই লাফ দিয়ে মারা গেলো।

সুমাইয়ার স্বামী মুন্সি চাঁন মিয়া বলেন, ঘটনার সময় আমি বাইরে ছিলাম। খবর পেয়ে বাড়ি এসে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে ভোরের দিকে ফরিদপুরের মেডিকেল হাসপাতালে মারা যায় সে। সুমাইয়ার কোন শারিরীক সমস্যা ছিলো না। তবে মাঝেমধ্যে সে পাগলামি করতো। সবাই বলতো ওর উপর জ্বীনের প্রভাব আছে।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুন্সি জাকির হোসেন বলেন, মাসখানেক আগে সুমাইয়া এভাবে লাফ দেয়ার পর শরীরের হাড় ভেঙে যায়। তারপর হাসপাতালে অপারেশন করে রড দিয়ে হাড় জোড়া দেয়া ছিলো। গতকাল লাফ দেয়ার পর শরীরের ওই রড বের হয়ে রক্তক্ষরণ হয়।

তিনি বলেন, মাদ্রাসায় পড়া অবস্থাতেই সুমাইয়ার উপর জ্বীনের ভাব ছিলো। তার নিজেরও মাদ্রাসা পড়ুয়া একটি মেয়ের এমন জ্বীনের ভাব আছে বলে জাকির মুন্সি জানান। তিনি বলেন, সুমাইয়ার পরিবার খুবই পর্দানশিন। তার

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. মোহসিন ফকির জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধায় সুমাইয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার রক্তক্ষরণ হচ্ছিল এবং শরীরে ভাঙাচোরা ছিলো। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ফরিদপুরে পাঠানো হয়। রাতে সেখানে মারা যায় সে।

সুমাইয়ার ছাদ থেকে লাফ দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মেয়েটির মানসিক সমস্যা ছিলো কিন্তু পরিবার হতে সঠিকভাবে চিকিৎসা পায়নি। বরং এটি জ্বীনে ধরা বলে তারা তাদের উপায়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছিলো।

ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা জানান, এব্যাপারে তারা কোন অভিযোগ পাননি। এ দিকে শুক্রবার দুপুরে ভাঙ্গা ঈদগাহ মাঠে বাদ জুমা জানাযা শেষে সুমাইয়াকে দাফন করা হয়।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/a1pv
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন