English

39 C
Dhaka
রবিবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৪
- Advertisement -

দেশে প্রতিবছর ৪০ হাজার শিশু অন্ধত্বের শিকার

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

অপরিণত নবজাতকদের চোখে অন্ধত্ব বয়ে আনতে পারে রেটিনোপ্যাথী অব প্রিম্যাচুরিটি (আরওপি)। জন্মগ্রহণের সময় কোনও নবজাতকই এই রোগে আক্রান্ত থাকে না। এমনকি প্রথম ১৪ দিনের মধ্যে তা হয় না। অপরদিকে অপরিণত যে শিশু সময়ের ৩৫ সপ্তাহ আগেই জন্মগ্রহণ করে। যাদের ওজন ২ কেজির নিচে তারা এই ঝুঁকিতে পড়ে যায়। এই ধরনের শিশুদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য নিউন্যাটোলজিতে (এনআইসিইউ) ভর্তি করা হয়। এসময় রোগটি শিশুদের মাঝে দেখা যেতে পারে। রোগটি ধরা পড়ামাত্রই সুচিকিৎসা না হলে শিশু অন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এজন্য দুই হাজার গ্রামের নিচে বা ৩৫ সপ্তাহের আগে জন্মগ্রহণকারী নবজাতকদের ৩০ দিন অন্তর একবার চক্ষু পরীক্ষা করতে হবে। এদের চেয়েও অল্প ওজনের বা ২৮ সপ্তাহের আগে জন্ম হয়েছে, এমন শিশুদের স্ক্রিনিংয়ের সময় নির্ধারণ করা হয়নি। তাদের ক্ষেত্রে আরও আগেই চিকিৎসা করা না হলে শিগগিরই অন্ধত্বের দিকে যেতে পারে।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ‘রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচুরিটি’ শীর্ষক মাসিক সেমিনারে এসব কথা তুলে ধরেন বক্তারা। এ সেমিনারের আয়োজন করে বিএসএমএমইউ’র সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটি।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, দেশে অপরিণত শিশুদের কত ভাগ আরওপির কারণে অন্ধ হয়েছে, দুঃখজনক ভাবে সেই জরিপ কখনও করা হয়নি। কারণ, এই বিষয়ে তেমন সচেতনতা নেই। এজন্য কোনও ডকুমেন্টেশন করা হয়নি। তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় উঠে এসেছে, অপরিণত এবং স্বল্প ওজনের নবজাতকের ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ আরওপি রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তবে এদের সবারই চিকিৎসা লাগবে এমন নয়। অনেকের ক্ষেত্রে ক্লিনিকে ভালো হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ আরওপি প্রতিরোধ যোগ্য। কিন্তু এই রোগে একবার অন্ধ হয়ে গেলে সেটি আর কোনও চিকিৎসায় ভালো হবে না।

সেমিনারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউন্যাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সঞ্চয় কুমার দে ‘আরওপি: এ চ্যালেঞ্জ ফর ইনট্যাক্ট সারভাইভাল অফ প্রিটার্ম নিউবর্ন’ এবং চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী ‘আরওপি : ব্লাইন্ডিং অব নিউন্যাটোস’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

দেশের বিভিন্ন তথ্যে দেখা যায়, আরওপি ২০ থেকে ৩০ শতাংশ প্রিম্যাচুরড বাচ্চাদের ক্ষেত্রে হয়। যেসব নবজাতক সময়ের আগে জন্ম নেয়, অতিরিক্ত অক্সিজেন পায়, সংক্রমণে ভোগে, মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশন সেবা পায়, যাদের বারবার রক্ত সঞ্চালন করা হয়, তারা ঝুঁকিতে থাকে। স্ক্রিনিং একটি পরীক্ষা, যার মাধ্যমে কম বয়সে আরওপি নির্ণয় করা যায়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নবজাতক বিভাগ ২০১৩ সাল থেকে চক্ষু বিভাগের সঙ্গে আরওপি স্ক্রিনিং এবং চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। দেশে পর্যাপ্ত চক্ষু চিকিৎসক যারা এ ধরনের চিকিৎসা করে, তাদের স্বল্পতা আছে। আরওপি চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হলো-সচেতনতা ও রেফারেলের অভাব। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বড় শহরে এই চিকিৎসা সীমাবদ্ধ। বিষয়গুলো সমাধান করার জন্য বিএসএমএমইউ’র আরওপি ক্লিনিকের চিকিৎসকরা সচেষ্ট আছেন। সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, পেশাজীবী, উন্নয়ন সহযোগী, সামাজিক সংগঠন ভূমিকা রাখতে পারে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আরওপি এবং অন্যান্য চোখের সমস্যার কারণে দেশে ৪০ হাজার শিশু অন্ধত্ব বরণ করছে। আরওপি বিষয়টি অনেকের কাছে নতুন। নবজাতকদের অক্সিজেন বেশি দিলে এটি হয়। আজকাল কিছু সিজারিয়ান সেকশন সময়ের আগে করা হয়। টেস্টটিউব বেবির সময় মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য আরলি সিজারিয়ান সেকশন করা হয়। এসব নবজাতকদের মধ্যে অনেক শিশুর আরওপি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএসএমএমইউ’র উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সেন্ট্রাল সাব কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন