English

30.7 C
Dhaka
শনিবার, আগস্ট ২, ২০২৫
- Advertisement -

স্বেচ্ছায় পাচার হয়ে ভারতের পতিতালয় থেকে নিজের মেয়েকে উদ্ধার করলেন এক মা!

- Advertisements -

এক মা ভারতের একটি পতিতালয় থেকে নিজের মেয়েকে উদ্ধার করে আনেন নিজে স্বেচ্ছায় পাচার হয়ে। মেয়ের মতোই মাকেও ভারতের পতিতালয়ে পাচার করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ লড়াই করে, জীবন মৃত্যুকে তোয়াক্কা না করে, পাচারকারীদের হাতে বারবার হাত বদল হয়ে, সর্বশেষ চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়ে মেয়েকে শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করে দেশে আনতে সক্ষম হয়েছেন।

ঢাকার মিরপুরে বসবাস করা মেয়েটিকে বিউটি পার্লারে চাকরির লোভ দেখিয়ে পাচার করে দেওয়া হয় ভারতে। গাবতলী থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সাতক্ষীরা সীমান্তে। তারপর নদী পার করে নিয়ে যাওয়া হয় সীমান্তের ওপারে। মীরপুরের অধিবাসী নাগীন সোহাগ ছিলেন এই পাচারের মূল হোতা। সোহাগ আরও অনেক মেয়েকে এভাবে পাচার করেছেন বলে র‌্যাবের কাছে আটকের পর স্বীকার করেছেন। মেয়েটি দেশে ফিরে তার দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে। অন্য দিকে লড়াই করা মায়ের কাহিনী প্রশংসা কুড়িয়েছে সবার কাছে।

শেষ মুহূর্তেও পাচারকারীরা ভুক্তভোগী মেয়েটিকে বলেছে, চিন্তার কারণ নেই, চাকরির কোনো সমস্যা নেই। ভারতীয় সীমান্ত পার হয়ে মেয়েটি বুঝতে পারে ভুল করে ফেলেছে। কিন্তু ততক্ষণে আর তার কিছু করার নেই। অবৈধভাবে ভারত যাওয়ার পর মেয়েটিকে প্রথম নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতায়। তারপর কয়েক হাত ঘুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয় উত্তর দিনাজপুরের একটি পতিতালয়ে। খুশি নামের মেয়েটির জীবন বিষাদে ভরে যায়। এই দিকে মেয়েকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে যান মা। খোঁজ নিতে থাকেন। অভিযোগ করেন পুলিশে। সন্দেহভাজন পাচারকারীদের নামে মীরপুরের পল্লবী থানায় জিডিও করেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অবশেষে মা গোপনে যোগাযোগ করেন পাচারকারীদের সঙ্গে। নিজের পরিচয় গোপন করে তাদের কাছে বিদেশে চাকরি চান। পাচারকারীদের হোতা সোহাগ তাকে জানান, বিদেশে করোনাকালে লোক পাঠানো বন্ধ। তবে ভারতে বিউটি পার্লারে চাকরি আছে। পাঠানো যাবে। মা রাজি হয়ে যান। মেয়েকে পাচার করা রুট সাতক্ষীরা ধরেই এই মাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ভারতে। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় দিল্লি। কিন্তু তিনি জানতে পারেন তার মেয়ে দিল্লি নেই। পশ্চিমবঙ্গে আছে। তিনি পাচারকারীদের ট্রেন থেকে পালিয়ে চলে আসেন কলকাতা। অনেক কষ্টে স্থানীয় পাচারকারী গ্রুপের আরেক দলের সহায়তায় জানতে পারেন, তার মেয়েকে পাঠানো হয়েছে উত্তর দিনাজপুরের একটি পতিতালয়ে। তিনি সেখানে যান। কিন্তু স্থানীয়রা তাকে সতর্ক করে, একবার ভেতরে প্রবেশ করলে আর বের হওয়া যাবে না। নতুন সমস্যা এড়াতে তিনি এবার স্থানীয় একজন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সহায়তা নেন। অনেক অনুনয়ের পর এই চেয়ারম্যানের সহায়তায় মেয়েকে উদ্ধার করেন। তারপর মেয়েকে নিয়ে আসেন সীমান্তে। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের আটক করে। পরে বিস্তারিত শুনে বিএসএফ সদস্যরা খবর দেয় বিজিবিকে। উভয় পক্ষের পতাকা বৈঠক শেষে মানবিক কারণে মা মেয়েকে বাংলাদেশে এনে ঢাকা ফিরতে সহায়তা করা হয়। ঢাকা এসে মামলা করতে গেলে পুলিশ সহায়তা করেনি। পুলিশের উপ-কমিশনার আ স ম মাহতার উদ্দিন সাংবাদিকের বলেন, তারা তো জিডি করেছে। মামলা করেনি। এ কারণে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। পরে অবশ্য র‌্যাব ও সিআউডি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় ও ব্যবস্থা নেয়।

অবিশ্বাস্য কষ্টে মেয়েকে উদ্ধার করা এই মা মিডিয়াকে বলেছেন, তিনি চান আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কঠোর ব্যবস্থা নিক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে। আগামীতে কোনো মেয়ে এভাবে যাতে পাচার হতে না পারে সে ব্যাপারে সব বাবা-মাকে তিনি সতর্ক করেন।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/qm6l
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন