জুলাই আন্দোলনের একটি হত্যা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সানাউল্লাহ জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার বাদী নোয়াখালী বেগমগঞ্জ থানার নরোত্তম গ্রামের মো. আলাউদ্দিন। তিনি জুলাই আন্দোলনে নিহত আবদুল কাইয়ুম আহাদের বাবা।
মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, হাসানু হক ইনু, শিরিন শারমিন চৌধুরী, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াসহ এজাহারনামীয় মোট আসামি ৪৬৭ জন। এর মধ্যে খায়রুল হক ৪৪ নম্বর আসামি। গত ৬ জুলাই মামলাটি দায়ের করেন মো. আলাউদ্দিন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জুলাই আন্দোলনের সময় গত বছর ১৮ জুলাই যাত্রাবাড়ি থানাধীন কাজলা এলাকায় আবদুল কাইয়ুম আহাদ গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়।
এর আগে আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বাসা থেকে তাকে আটক করা হয় বলে জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
আপিল বিভাগে থাকাকালে খায়রুল হক একটি মামলার রায়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেন। ওই রায়কে ঘিরে তিনি রাজনৈতিকভাবে সমালোচিত ছিলেন।
গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত বছরের ২৫ আগস্ট ওই রায় নিয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় খায়রুল হকের বিরুদ্ধে জাল-জালিয়াতি করে রায় দেওয়া এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে একটি মামলা হয়।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারী ভূঁইয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এ ছাড়া ঢাকায় জুলাই আন্দোলনের একাধিক মামলায় তিনি আসামি রয়েছেন।
দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে ২০১০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর নিয়োগ পান খায়রুল হক। পরের বছর ১৭ মে অবসরে যান তিনি।
অবসরের পর ২০১৩ সালের ২৩ জুলাই খায়রুল হককে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত বছর ১৩ আগস্ট তিনি ওই পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
আপিল বিভাগে থাকাকালে তিনি ফতোয়া অবৈধ ঘোষণা করেও রায় দেন। হাইকোর্ট বিভাগে থাকাকালে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়, সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী মামলার রায় ও স্বাধীনতার ঘোষকসহ বিভিন্ন মামলায় রায় দিয়েছিলেন খায়রুল হক।