English

29.3 C
Dhaka
রবিবার, জুলাই ১৩, ২০২৫
- Advertisement -

পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোর সর্বোচ্চ সামর্থ্য কাজে লাগান: কোভিড পরীক্ষা

- Advertisements -

বাংলাদেশে কোভিড–১৯ সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়িয়ে গেল। গতকাল শুক্রবার দুপুরে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশে মোট রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৫২ হাজার ৫০২। এক দিন আগে বাংলাদেশ ইতালিকে পেছনে ফেলে বিশ্বের কোভিড–আক্রান্ত দেশগুলোর তালিকায় ১৫ নম্বর অবস্থানে উঠে আসে। ইতালিসহ অধিক আক্রান্ত দেশগুলোতে যখন সংক্রমণ নিম্নমুখী হয়েছে, তখন বাংলাদেশে তা ঊর্ধ্বমুখীই থেকে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর যে সংখ্যা সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রকৃত রোগীর সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে—এমন অনুমান বিশেষজ্ঞ মহল থেকে বারবার প্রকাশ করা হচ্ছে। এ রকম অনুমানের যথেষ্ট ভিত্তি আছে। কারণ, দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষার সংখ্যা যত বেশি হচ্ছে, শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও তত বাড়ছে। কিন্তু পরীক্ষা করা হচ্ছে অনেক কম। ফলে আক্রান্ত অনেক রোগীই শনাক্ত হচ্ছেন না; আমরা জানতে পারছি না দেশে কোভিড–১৯ মহামারির প্রকৃত পরিস্থিতিটা কী।

শুক্রবার দুপুরে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আগের ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ৬৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৮৫১ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এই সময়ে সংক্রমণের হার ছিল ২২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ২৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। ২০ শতাংশ সংক্রমণের হারকেই উচ্চ হার বলে ধরা হয়; জুনের দ্বিতীয়–তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বাংলাদেশে সংক্রমণের হার ২০–২১ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করছিল; সেখান থেকে আমাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রকৃত পরিস্থিতি জানা যাচ্ছে না এই কারণে যে পরীক্ষার সংখ্যা অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে।

জুলাইয়ের মাঝামাঝি প্রতি ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার গড় সংখ্যা ১৮ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকে তা কমানো শুরু হয়, এবং কমতে কমতে ঈদুল আহজার ছুটির সময় ৭ হাজারে পর্যন্ত তা নেমে এসেছিল। তারপর থেকে বাড়ানো হয়েছে বটে, কিন্তু এখনো যথেষ্ট কম পরীক্ষা করা হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার দুপুরে জানানো হয়েছিল, আগের ২৪ ঘণ্টায় ৭ হাজার ৭১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল; আর শুক্রবার দুপুরে পাওয়া তথ্যে জানা গেল, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার সংখ্যা বেড়ে সাড়ে ১২ হাজার ছাড়িয়েছে।

কিন্তু দৈনিক পরীক্ষার এই গড় সংখ্যা এখনো খুবই কম। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতি ৫টি নমুনা পরীক্ষায় ১ জন রোগী শনাক্ত হলে দৈনিক ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা প্রয়োজন, নইলে সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু দুর্বোধ্য কারণে বাংলাদেশে পরীক্ষা কমানো হয়েছে নানা কৌশলে। সর্দি, জ্বর, কাশি ও গলাব্যথা—এই চারটি উপসর্গ না থাকলে কোনো ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষার জন্য গ্রহণ করা হবে না, এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হলো। পরীক্ষার জন্য ফি নির্ধারণ করা হলো। নমুন সংগ্রহের কেন্দ্রগুলোতে দৈনিক সংগ্রহের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হলো। তা ছাড়া কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশে–বিদেশে যে কেলেঙ্কারির সৃষ্টি হলো, তার ফলে বাংলাদেশে কোভিড পরীক্ষার বিষয়ে মানুষের আস্থাও কমে যায়।

কিন্তু সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত রয়েছে। উদ্বেগের বিষয়, ঢাকার বাইরে সংক্রমণ দ্রুতগতিতে বেড়েছে এবং বৃদ্ধি এখনো অব্যাহত আছে। ঈদুল আজহার সময় গণপরিবহন চালু ছিল, কোথাও কোনো লকডাউন ছিল না। ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষের চলাচল ও স্থানান্তর ঘটেছে। ফলে সংক্রমণ বিস্তারের ঝুঁকি আরও বেড়েছে। তাই এখন পরীক্ষার সংখ্যা অনেক বাড়ানো উচিত। পরীক্ষাকেন্দ্রের সংখ্যা যেহেতু বেড়েছে, সেহেতু সব পরীক্ষাকেন্দ্রের সর্বোচ্চ সামর্থ্য কাজে লাগিয়ে দৈনিক পরীক্ষার সংখ্যা ২০ হাজারে উন্নীত করা জরুরি।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/2okx
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন