কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত জাহান। নামটা শুনলেই অনেকের মনে প্রথমেই আসে বিতর্কের কথা। গত কয়েক বছরে যেন একটার পর একটা বিতর্কে জড়িয়েছেন এই অভিনেত্রী ও রাজনীতিক। তবে এতদিন এসব নিয়ে খুব একটা প্রকাশ্যে কথা বলেননি তিনি। এবার এক সাক্ষাৎকারে নিজের জীবনের নানা অধ্যায় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।
নুসরাত বলেন, ‘মানুষ ভাবে, নুসরাত মানেই বিতর্ক। কিন্তু আমি তার চেয়েও অনেক বেশি কিছু। যারা সমালোচনা করে, তারা জানেই না আমার ভিতরে কী চলছিল। অনেকে যা বলে, তার অনেকটাই সত্যি নয়, অর্ধসত্য।’
কঠিন সময় পেরিয়ে এখন নিজের জীবনে স্থিরতা খুঁজে পেয়েছেন বলে মনে করেন তিনি। বলেন, ‘আগের চেয়ে অনেক বেশি মানসিক শক্তি পেয়েছি।’
বিয়ে, বিতর্ক ও ভুল বোঝাবুঝি
যশ দাশগুপ্তের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আগে কখনো খুব স্পষ্ট কিছু বলেননি নুসরাত। তবে এবার তিনি বলেন, ‘যশের সঙ্গে যখন সম্পর্কে জড়াই, তখন জানতাম সে একজন সন্তানের বাবা। হ্যাঁ, সবকিছু বুঝতে সময় লাগে। সেই সময়টা নিয়েছিলাম।’
তার সংসদে গিয়ে ‘বিয়ে হয়নি’ বলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেকে ভেবেছে আমি সংসদে গিয়ে বলেছি বিয়ে করিনি। আমি কি বোকা? বিয়ে করে, সংসদে শপথ নিয়ে আবার বলব বিয়েটা হয়নি! তাহলে তো আমাকে পাগলাগারদে যেতে হতো! আমি কখনো এমন বলিনি।’
তিনি জানান, তার প্রাক্তন স্বামীর পক্ষ থেকে আইনি চিঠি এসেছিল, যাতে বলা হয়েছিল তার আর যশের বিয়ে আইনগতভাবে বৈধ নয়। সে কথাটাও তিনি ঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারেননি। কিন্তু এ কথা সত্যি যে, বিয়ে তো হয়েছিল – সেটা বৈধ হোক বা না হোক।
বিয়ে রেজিস্ট্রি না করার কারণ হিসেবে তিনি জানান, বিয়েটা বিদেশে হয়েছিল। ফিরেই সংসদে শপথ ছিল, তারপর একের পর এক কাজ। সময়ই পাইনি রেজিস্ট্রির জন্য। এটা তারই ভুল। তবে অতীত তো মুছে ফেলা যায় না।
রাজনীতি ছাড়ার কারণ
রাজনীতি থেকে নিজেই সরে এসেছেন, না কি বাধ্য হয়েছিলেন- এমন প্রশ্নে নুসরাত বলেন, ‘আমি মন দিয়ে কাজ করছিলাম। কিন্তু নির্বাচনের ছয় মাস আগে অনেক ঘটনা ঘটল। আমাকে বলা হলো আমি মানুষকে ঠকিয়েছি! এটা কেন হবে?’
তিনি বলেন, ‘আমি কিন্তু সমস্ত পরিস্থিতি একা সামলেছি। যশ তখন মুম্বাইয়ে, ঈশান ছিল ছোট। ওকে দেখে সিদ্ধান্ত নিই, আর নয়। ও বড় হবে, স্কুলে যাবে- চাই না, আমার কারণে তার জীবনে কিছু প্রভাব পড়ুক।’
২০২৬ সালের নির্বাচনে যদি আবার ডাক আসে তাহলে কী করবেন?- এমন প্রশ্নের জবাবে নুসরাত বলেন, কে ডাকবে জানি না- তৃণমূল না বিজেপি। তবে রাজনীতিতে আসার একমাত্র কারণ ছিল দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)। তাকে আমি শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি। উনি আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মানুষদের স্নেহ করেন, আগলে রাখেন। দিদিকে না বলা আমার পক্ষে সম্ভব না।’