স্বামী তোফায়েল আহম্মেদের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবিতে ৩৯ দিন বয়সের পুত্র সন্তানকে কোলে নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন স্ত্রী ডলি আক্তার (২৫)। আজ সোমবার তিনি আছিম বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করে স্বামী হত্যার বিচার দাবি করেন।
ডলি আক্তার বলেন, পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। একমাত্র শিশু সন্তানকে এতিম করে আমাকে করেছে বিধবা। আছিম বাজারের ইজারা প্রাপ্তিকে কেন্দ্র করেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। খুনিরা প্রভাবশালী হওয়ায় থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে হত্যার ঘটনাটি অপমৃত্যু মামলা করিয়েছে। বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে ডলি আক্তারের কান্যায় উপস্থিত কেউ চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি।
গত ১১ অক্টোবর রাতে ফুলবাড়িয়া উপজেলার আছিম পাটুলী ইউনিয়নের জঙ্গলবাড়ি চকপাড়া গ্রামে একটি মুরগির ফার্মের পাশে তোফায়েল আহম্মেদের (৩৩) লাশ পাওয়া যায়। তিনি একই ইউনিয়নের তিতারচালা গ্রামের মৃত ছোরহাব আলী মাস্টারের পুত্র। পরদিন ফুলবাড়িয়া থানা পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন এবং লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মচিমহায় প্রেরণ করেন।
হত্যার অভিযোগে গত ২৫ অক্টোবর তোফায়েল আহাম্মেদের ভগ্নিপতি আবুল কালাম বাদী হয়ে ময়মনসিংহ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফুলবাড়িয়া ২ নং আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয় এমদাদুল হক, দুলাল মিয়া, সোহেল মিয়সহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিদের সাথে আছিম বাজার ইজারা প্রাপ্তিকে কেন্দ্র করে তোফায়েলের সাথে বিরোধ চলে আসছিল দীর্ঘদিন যাবৎ। ঘটনার রাতে ১০টার দিকে আছিমের নিজ বাসা থেকে তোফায়েলকে এমদাদুলহসহ ২/৩ জনে ডেকে নিয়ে যায়। ঐ রাতেই তাঁর লাশ পাওয়া যায় জঙ্গলবাড়ি গ্রামের একটি মুরগির খামারের পাশে। তোফায়েলের মাথার পিছনে রক্তাক্ত আঘাত ও বাম হাতের কনুর মাঝে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে।
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফুলবাড়িয়া ২ নং আমলী আদালতের হাকিম মো. হাফিজ আল আসআদ মামলাটি ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে সরেজমিন তদন্ত করে স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ সংযুক্তকরে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী আবুল কালাম বলেন, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় তোফায়েলকে। ঘটনার সাথে জড়িতরা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ার হত্যার ঘটনায় তারাহুড়া করে অপমৃত্যু মামলা রুজু করায়। তোফালের স্ত্রী সদ্য সন্তান প্রসব করায় তাঁর পক্ষে মামলা করা সম্ভব হয়নি বিধায় মামলার বাদী হয়েছি আমি।
নিহতের স্ত্রী ডলি আক্তার বলেন, বাসা থেকে ডেকে নিয়ে স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। স্বামী হত্যার সুষ্ঠ তদন্ত, আসামিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে শিশু পুত্রকে নিয়ে প্রয়োজনে একাই আন্দোলন করে যাব।
ফুলবাড়িয়া থানার ওসি মোহা. আজিজুর রহমান বলেন, তোফায়েল আহম্মেদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। যে কারণে অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন আসলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিবিআই ওসি মো. আবুল কাশেম বলেন, মামলাটি আমার নামে তদন্তের জন্য ইস্যু করা হয়েছে শুনেছি। আমি অসুস্থ। এখনো মামলার কাগজ হাতে পাইনি।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/3ynf
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন