English

31.5 C
Dhaka
মঙ্গলবার, জুলাই ১৫, ২০২৫
- Advertisement -

ব্রেন টিউমারের আধুনিক চিকিৎসা

- Advertisements -

ব্রেন টিউমার বা ব্রেন ক্যান্সার শুনলেই আমরা আঁতকে উঠি। খুব দুশ্চিন্তায় পড়ি। ধনী হলে অপারেশনের জন্য বিদেশে নিয়ে যায় আর গরিব হলে চোখে-মুখে সরিষার ফুল দেখি। মূলত বিষয়টি এতটা জটিল নয়। শরীরের অন্যান্য অঙ্গে যেমন টিউমার হয়  ব্রেনেও সে রকম টিউমার হয়। ব্রেন যেহেতু মূল্যবান অঙ্গ, শরীরে এর গুরুত্ব বেশি। এ ছাড়া ব্রেন বা মস্তিষ্কের ভেতরে এর বৃদ্ধি পাওয়ার জায়গা কম; যে কারণে মৃত্যু ঝুঁকি বেশি থাকে। এ জন্য এত বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়। ব্রেন টিউমারের ঝুঁকিতে কারা আছেন? এ রকম করে কাউকে নির্দিষ্ট করা যায় না। যে কেউ ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হতে পারেন।

ব্রেন টিউমার রোগ নির্ণয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন। সবচেয়ে আশার কথা হলো, স্বল্প খরচে বিশ্বমানের ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা এখন আমাদের দেশেই হচ্ছে।

ব্রেন টিউমার  হলো- 

শরীরে যেকোনো কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকেই বলা হয় টিউমার। ব্রেন টিউমার হলো ব্রেনের কোনো কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। যখন মাথার অভ্যন্তরে ব্রেনে টিউমার বৃদ্ধি পায় তখন ব্রেনের ভেতরে চাপ পড়ে যা  ব্রেনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের ব্রেন দুটি কম্পার্টমেন্টে বিভক্ত, একটি সুপরেটেনটোরিয়াল কম্পার্টমেন্ট আরেকটি ইনফেরেটেনটোরিয়াল কম্পার্টমেন্ট। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের সুপরেটেনটোরিয়াল কম্পার্টমেন্টে শতকরা ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ এবং ইনফেরেটেনটোরিয়াল কম্পার্টমেন্টে শতকরা ১৫ থেকে ২০ ভাগ টিউমার হতে পারে। শিশুর ক্ষেত্রে সুপরেটেনটোরিয়াল কম্পার্টমেন্টে শতকরা ৪০ ভাগ এবং ইনফেরেটেনটোরিয়াল কম্পার্টমেন্টে শতকরা ৬০ ভাগ টিউমার হতে পারে। ব্রেন টিউমার প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত। যথা: ক্যান্সার যুক্ত টিউমার এবং ক্যান্সার নয় এমন টিউমার।

লক্ষণ 

সাধারণত মাথাব্যথা যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে। মাথাব্যথার সঙ্গে খিঁচুনিও হতে পারে, কিছু ক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তিতেও সমস্যা হয়। এ ছাড়াও হঠাৎ মাথায় চাপ অনুভব করা, সকালের দিকে তীব্র মাথাব্যথা, ঘুম থেকে ওঠার সময় মাথা ঘোরানো, বমি বমি ভাব, ডবল ভিশন এই সব সমস্যাও থাকতে পারে। টিউমারের অবস্থানের উপর নির্ভর করে বাকি সমস্যা দেখা দেয়। যেমন: খিঁচুনি, চোখের অস্বাভাবিক নড়াচড়া, কথা বলতে গিয়ে আটকে যাওয়া, চোখে ক্ষীণ দৃষ্টিশক্তি, ভারসাম্যহীনতা, অস্বাভাবিক আচরণ, স্মৃতিলোপ, বার বার ভুলে যাওয়া ইত্যাদি। ব্রেন টিউমার যদি বড় হয় তখন তা  ব্রেনে চাপ ফেলে এবং টিউমার খুলির মধ্যে থাকায় তা প্রসারণের জন্য জায়গা পায় না। ফলে, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, বমি-বমি ভাব, দৃষ্টিশক্তি হারানো এবং কিছু সময় রোগী অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে।

ব্রেন টিউমার নির্ণয়:

উপরোক্ত লক্ষণসমূহ দেখা দিলে ব্রেনের স্ক্যান অথবা এম.আর.আই করা হয়। তবে, এম.আর.আই পদ্ধতি সব থেকে আধুনিক এবং ব্রেন টিউমার নির্ণয়ের জন্য উন্নত পরীক্ষা।

চিকিৎসা 

সাধারণত ব্রেন টিউমার হলে বিশেষজ্ঞগণ অপারেশনের পরামর্শ দেন। তবে নির্ভরযোগ্য বিকল্প চিকিৎসা থাকলে কেন ব্রেনের মতো জটিল এবং ব্যয়বহুল অপারেশনের ঝুঁকি নিব? বিকল্প চিকিৎসাসেবা অর্থাৎ হোমিওপ্যাথিতে টিউমার ভালো হয়- একথা সকলেই জানেন। ‘ব্রেন টিউমারে’ টিউমারটি হয় ব্রেনে অর্থাৎ মস্তিষ্কে। এজন্য প্রয়োজন ব্রেন টিউমার চিকিৎসায় অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক। চিকিৎসক রুগীকে বিনা অপারেশনে এবং কম খরচে ঝুঁকিমুক্তভাবে সুস্থ করে তুলবেন। চিকিৎসা শুরু করলে যদি রুগীর কষ্ট কমতে থাকে তাহলে বুঝতে হবে চিকিৎসা সঠিক হচ্ছে। এ ছাড়াও প্রয়োজন মনে করলে ব্রেনের স্ক্যান অথবা এম.আর.আই করেও চিকিৎসার অগ্রগতি দেখে নিতে পারেন। ব্রেন বা মস্তিষ্ক যেহেতু অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ সেহেতু চিকিৎসক নির্বাচনের সময় অবশ্য গুরুত্ব দিতে হবে। ব্রেন টিউমারের চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথির সফলতা এবং ঝামেলা মুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতিতে আকৃষ্ট হয়ে ক্রমেই এই চিকিৎসার প্রতি রুগীদের আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ব্রেন টিউমারের চিকিৎসায় আমি রুগীর ‘মায়াজমের’ দিকে খেয়াল রেখে প্রধানত থুজা, মেডোরিনাম, সিফিলিনাম, টিউবারকুলিনাম, সোরিনাম, সালফার, ক্যালকেরিয়া কার্ব, ক্যালকেরিয়া ফস, ক্যালকেরিয়া ফ্লোর, কস্টিকাম, বেলেডোনা, ব্রায়োনিয়া, মার্কসল, ন্যাট্রাম-মিউর, ন্যাট্রাম-সালফ ইত্যাদি ঔষধ ব্যবহার করি। তবে স্মরণ রাখতে হবে, কোনো চিকিৎসকের ব্রেন টিউমারের রুগী চিকিৎসায় অভিজ্ঞতা না থাকলে তার এই চিকিৎসা না করায় উত্তম। তবে, আশার কথা হলো আমাদের দেশে ব্রেন টিউমারের চিকিৎসায় অভিজ্ঞতাসম্পন্ন চিকিৎসক রয়েছেন। ফলে, স্বল্প খরচে বিশ্বমানের ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা এখন আমাদের দেশেই হচ্ছে।

লেখক: ডা. এম এ হক, পিএইচ.ডি (স্বাস্থ্য), এম. ফিল (স্বাস্থ্য), ডিএইচএমএস। জটিল ও দুরারোগ্য রুগীর অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও গবেষক। চেম্বার: ড. হক হোমিও ট্রিটমেন্ট অ্যান্ড রিসার্র্স সেন্টার, বিটিআই সেন্ট্রা গ্রান্ড, গ্রাউন্ড ফ্লোর (জি-৪), ১৪৪ গ্রীন রোড, পান্থপথ, ঢাকা।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/70gp
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন