English

27.4 C
Dhaka
বুধবার, জুলাই ১৬, ২০২৫
- Advertisement -

সব ভবন ঝুঁকিমুক্ত করুন: সিদ্দিকবাজার ট্র্যাজেডি

- Advertisements -

গত রবিবার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় মিরপুর রোডে তিনতলা একটি ভবন বিস্ফোরণে আংশিক ধসে পড়ার পর একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে। সংশ্লিষ্ট সব মহলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। সবার জিজ্ঞাসা, কেন এবং কিভাবে এই প্রাণঘাতী বিস্ফোরণ ঘটল?

এটা কি নিছকই একটি দুর্ঘটনা, নাকি এটা ‘ম্যান-মেড’ দুর্যোগ? বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই যেখানে ‘ম্যান-মেড’ ডিজাস্টার হয়নি। কিন্তু প্রতিটি দেশ এই ডিজাস্টার থেকে ‘লার্নিং প্রসেসে’ যায়, অর্থাৎ কিছু শিক্ষা নেয়। ২০১০ সালে নিমতলীর রাসায়নিক গুদাম থেকে লাগা আগুনে প্রাণ হারান শতাধিক মানুষ।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ৭০ জন। কিন্তু আমরা কি এসব থেকে কোনো শিক্ষা নিয়েছি? আমাদের দুর্ভাগ্য হলো, আমরা এসব দুর্ঘটনা থেকে কোনো শিক্ষা গ্রহণ করিনি।

সিদ্দিকবাজারের এই ভবনটি নিয়ে নানা কথা উঠেছে। বলা হচ্ছে, তিনতলার অনুমোদন নিয়ে ভবনটি সাততলা করা হয়েছে। সেটাই যদি সত্যি হয়, তাহলে তার দায় কার? যেদিন থেকে গ্রেটার ঢাকা করা হয়েছে, সেদিন থেকেই গ্রেটার ঢাকার দায়িত্ব রাজউকের। যখন এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় তখন থেকেই এই গ্রেটার এলাকায় বিল্ডিং অনুমোদন করার অধিকার রাজউকের।

যেকোনো ভবন নির্মাণের, এমনকি একটি অস্থায়ী ঘর তৈরি করতে হলেও রাজউকের কাছ থেকে অনুমোদন লাগবে। বিস্ফোরণের পর নাজুক অবস্থায় থাকা ভবনটি পরিদর্শন করেছেন রাজউক কর্মকর্তারা। জানিয়েছেন, ভবনটি আপাতত ব্যবহার করা যাবে না। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, সাততলা এই ভবনের বেজমেন্ট থেকে তিনতলা পর্যন্ত ছিল অফিস, গুদাম ও মার্কেট। এর ওপরে আবাসিক। অথচ রাজউক জানে না ভবনটি আবাসিক নাকি বাণিজ্যিক—কোন শ্রেণির অনুমোদনপ্রাপ্ত।

এমনকি তিনতলার অনুমোদন পাওয়া বাড়িটি কী করে সাততলা হলো সেটা কি রাজউক জানে? আরো বড় প্রশ্ন হচ্ছে, এত বড় ঢাকাকে কিভাবে মনিটর করছে রাজউক।

১৯৯৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানীতে অর্ধশতেরও বেশি ভবন ধসে বা হেলে পড়ার ঘটনার হিসাব তো রাজউকের কাছেই আছে। প্রাণহানি হয়েছে এমন বড় দুর্ঘটনাও রয়েছে। কিন্তু এর কোনোটির জন্য কারো শাস্তি হওয়ার নজির কি আছে?কোন ভবন বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হবে বা কোন ভবন শিল্প হিসেবে ব্যবহৃত হবে, তা কিভাবে নির্ধারণ করা হয়? এমন কোনো নীতিমালা কি আছে? এ জন্য জোন ভাগ করা আছে। কোথায় কী হবে, তা বলা আছে। বাস্তবায়ন নেই।

সর্বোপরি রাজধানী ঢাকা রয়েছে ভূমিকম্পঝুঁকির মধ্যে। এই ঝুঁকি থেকে মুক্ত হওয়ার উপায় কী? ভূমিকম্পের বড় দুর্যোগ কিন্তু ভবন ভেঙে পড়া নয়।

বিশেষজ্ঞরা অনেক আগে থেকেই বলছেন, ঢাকা শহরে যদি কোনো দিন ভূমিকম্প হয়, বিল্ডিং চাপা পড়ে মারা যাবে ১০ শতাংশ মানুষ। ৯০ শতাংশ মারা যাবে আগুনে পুড়ে। কারণ এখানে মাটির নিচে জালের মতো যে গ্যাসের লাইন আছে, তার কোনো নকশা নেই।

ঝুঁকিপূর্ণ যে ভবনগুলো রয়েছে, সেসব ভবন ঝুঁকিমুক্ত করা সম্ভব। দায়িত্ব নিয়ে সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে। আরেকটা নিমতলী, চুড়িহাট্টা কিংবা সিদ্দিকবাজারের মতো ঘটনা যেন আর না ঘটে, তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/729j
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন