শামুককে আমরা ধীরগতির প্রাণী হিসেবে চিনি। কিন্তু তাদের ঘুমের অভ্যাস আরও বিস্ময়কর। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রয়োজন হলে শামুক টানা তিন বছর পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকতে পারে। মূলত জীবন বাঁচানোর কৌশল হিসেবেই তারা এ দীর্ঘ ঘুমে যায়।
শামুকের বেঁচে থাকার জন্য ভেজা ও আর্দ্র পরিবেশ খুব জরুরি। আবহাওয়া অতিরিক্ত শুকনো হয়ে গেলে তাদের শরীরের পানি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তখন মৃত্যুর ঝুঁকি তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে শামুক ‘হাইবারনেশন’ (শীতনিদ্রা) বা ‘এস্টিভেশন’ (গরমে বাঁচার জন্য দীর্ঘ ঘুম) অবস্থায় যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, এ সময় শামুক সম্পূর্ণভাবে নিজের খোলসের ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং শরীর থেকে শ্লেষ্মা বা মিউকাস বের করে খোলসের মুখ শক্ত করে বন্ধ করে দেয়। এই বন্ধের স্তরকে বলা হয় ‘এপিফ্রাগম’। এটি খোলসের মুখে প্রাকৃতিক ঢাকনার মতো কাজ করে এবং শামুকের শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
দীর্ঘ ঘুমের সময় শামুকের হৃৎস্পন্দন ও শরীরের কাজ (বিপাক ক্রিয়া) অনেক কমে যায়। তাই খাবার বা পানি ছাড়াই তারা মাসের পর মাস, এমনকি তিন বছরও বেঁচে থাকতে পারে। আবহাওয়া আবার অনুকূল হলে তারা জেগে উঠে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা শুরু করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব শামুক তিন বছর ঘুমায় না। এটি তাদের বেঁচে থাকার একটি কৌশল, যা কঠিন পরিবেশে জীবনের জন্য অত্যন্ত কার্যকর।
শামুক দিনের-রাতের নিয়ম মানে না। তারা কয়েক ঘণ্টা পরপর ঘুমায় এবং কখনো টানা ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। তাই বৃষ্টির পর হঠাৎ শামুক বের হয়ে আসা—এটাই তাদের স্বাভাবিক আচরণের অংশ।
গবেষকদের মতে, শামুক খুবই সহনশীল প্রাণী। প্রয়োজন হলে নিজের খোলসেই আশ্রয় নিয়ে দীর্ঘ সময় স্থির হয়ে থাকতে পারে। এটি তাদের অনন্য জীবনধারার একটি বৈশিষ্ট্য।
