English

28.2 C
Dhaka
মঙ্গলবার, আগস্ট ৫, ২০২৫
- Advertisement -

২৫ বছরের বড় শিক্ষিকাকে বিয়ে, সহপাঠীকে দত্তক নেন ম্যাখোঁ!

- Advertisements -

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ও তার স্ত্রী ব্রিজিত গার্সিয়ার সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বয়সের ব্যবধান, সামাজিক প্রতিবন্ধকতা ও রাজনৈতিক উচ্চতার মধ্যেও টিকে থাকা তাদের প্রেম ও বৈবাহিক সম্পর্ককে অনেকেই দেখেন ব্যতিক্রমী এক ভালোবাসার দৃষ্টান্ত হিসেবে।

ম্যাখোঁ যখন অ্যামিয়ঁ শহরের লা প্রোভিদঁস ক্যাথলিক স্কুলের ১৫ বছর বয়সী ছাত্র, তখনই তার পরিচয় হয় ৩৯ বছর বয়সী নাট্যশিক্ষিকা ব্রিজিতের সঙ্গে। ব্রিজিত ছিলেন বিবাহিত এবং তিন সন্তানের মা।১৫ বছরের সেই কিশোর ম্যাখোঁ তার শিক্ষিকার প্রেমে হাবুডুবু খেতে শুরু করেন।

ব্রিজিত ছিলেন এক ব্যাংকারের স্ত্রী, তিন ছেলে-মেয়ে। স্বামী-সন্তান নিয়ে ঘোরতর সংসারী। প্রথম সাক্ষাতের ঠিক দুই বছর পরে প্রস্তাবটা আসে তার কাছ থেকেই।

মুগ্ধতা তত দিনে প্রেমে বদলেছে। ম্যাখোঁ রাখঢাক না করেই শিক্ষিকাকে বলেছিলেন, ‘তুমি যা-ই করো না কেন, আমি তোমাকেই বিয়ে করব।’ প্রথমে তেমন আমল না দিলেও ম্যাখোঁর জেদের কাছে শেষমেশ হার মানতে হয়েছিল ব্রিজিতকে। তাদের সম্পর্কের শুরু ১৯৯৪ সালের বসন্তে।
তখন মাখোঁর বয়স ছিল ১৬ বছর, আর ব্রিজিতের ৪০। 

এই সম্পর্ক আমিয়েঁ শহরের ক্যাথলিক মধ্যবিত্ত সমাজ ভালোভাবে নেয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অনেক চিঠি আসে, যেগুলোর বেশির ভাগই ছিল বেনামি এবং তাতে শিক্ষিকা ব্রিজিতের আচরণকে কঠোর ভাষায় নিন্দা করা হয়। এমনকি ব্রিজিতের পরিবারের কাছেও একই ধরনের কটু ও বিরূপ চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ম্যাখোঁর মা-বাবাও সরাসরি ব্রিজিতকে বলেন, যেন তিনি তাদের ছেলেকে ছেড়ে দেন।

বহু ঘাত-প্রতিঘাত সামলে শিক্ষিকা ও তার ছাত্রের মধ্যে প্রেমের যে বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল তা শেষ পর্যন্ত এক সাহসী বিবাহ-উপসংহারে থিতু হয়েছিল। কারণ ছাত্রকে বিয়ে করে ব্রিজিত যে সাহস দেখিয়েছেন, সেটাই আধুনিক পৃথিবীর রূপকথা।

ব্রিজিতের মেয়ে ও প্রেমিক ম্যাখোঁ সহপাঠী ছিলেন। বহু পরে ২০০৬ সালে, ওই দাম্পত্য ভেঙে প্যারিসে এসে প্রেমমুগ্ধ ছাত্রটিকে বিয়ে করেন। তবে বিয়ের সময়ও পড়াশোনা শেষ করে উঠতে পারেননি ম্যাখোঁ। নতুন সংসারের হাল ধরতে পরে ব্রিজিতকেই আবার শিক্ষিকার চাকরি নিতে হয়েছিল। ব্রিজিতের আগের পক্ষের তিন ছেলে-মেয়ের একজন আইনজীবী, একজন ইঞ্জিনিয়ার, অন্যজন চিকিৎসক। ম্যাখোঁ তার সমবয়সী বা বয়সে বড় তিনজনকেই দত্তক নিয়েছেন। দত্তক পুত্র-কন্যার সুবাদে নাতি-নাতনিও রয়েছে তার।

এই অসমবয়সী প্রেম আর বিয়ে নিয়ে অবশ্য ফরাসি সংবাদমাধ্যমে একসময় কম হাসাহাসি হয়নি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নানা আলোচনা হয়। ‘প্রৌঢ়া’ স্ত্রীকে নিয়ে শুরু থেকেই হাসি-মশকরা চলেছে ফরাসি সংবাদমাধ্যমে।

এ বিষয়ে ব্রিজিতের বক্তব্য, ‘বিষয়টা উল্টো হলে এত কথা হতো না। ডোনাল্ড ট্রাম্প আর মেলানিয়ারও বয়সের তফাত এতটাই। কিন্তু ট্রাম্প পুরুষ বলে কোনো কথা হয় না। আমি নারী, তাই সব তির্যক মন্তব্য আমাকে ঘিরেই। মেলানিয়া যদি বয়সে বড় হতেন, আমি নিশ্চিত ওকেও কেউ ছাড়ত না।’

পরবর্তী সময়ে ২০১৭ সালে দেশের কনিষ্ঠতম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন ৩৯ বছরের ম্যাখোঁ। ব্রিজিত হন ফার্স্ট লেডি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী লড়াইয়ে স্বামীর প্রতিটি প্রচার পর্ব তিনি সামলে নিয়েছেন। কখনো বক্তৃতা ঠিক করে দিয়েছেন। কখনো প্রচারকৌশল ঠিক করে দিয়েছিলেন।
The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/8gbj
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন