English

27.2 C
Dhaka
শনিবার, জুলাই ৫, ২০২৫
- Advertisement -

তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত ইউরোপ, জারি হলো রেড অ্যালার্ট

- Advertisements -

নজিরবিহীন তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, জার্মানি, পর্তুগাল, গ্রিসসহ অনেক দেশে জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ মাত্রার তাপ সতর্কতা। শুধু ফ্রান্সেই মঙ্গলবার প্যারিসসহ অন্তত ১৬টি অঞ্চলে জারি করা হয়েছে ‘রেড অ্যালার্ট’। পাশাপাশি আরও ৬৮টি অঞ্চলে রয়েছে কম ঝুঁকির ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’। দেশটির জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী এটিকে ‘নজিরবিহীন’ পরিস্থিতি বলে উল্লেখ করেছেন।

এদিকে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা এই তাপপ্রবাহের কারণে ফ্রান্সজুড়ে প্রায় ২০০টি স্কুল সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনেক দেশে প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি চিকিৎসা সেবা। জনসাধারণকে ঘরের বাইরে না যেতে এবং রোদে কাজ না করতে বলা হচ্ছে।

ইতালির ২১টি শহরে রেড অ্যালার্ট জারি হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে রোম, মিলান, ভেনিস এবং সার্ডিনিয়া দ্বীপ। দেশটির জরুরি চিকিৎসা বিভাগের সহ-সভাপতি জানিয়েছেন, তাপজনিত অসুস্থতা ও হিটস্ট্রোকের ঘটনা অন্তত ১০ শতাংশ বেড়েছে।

ফ্রান্সের দক্ষিণ কর্বিয়েরেস পর্বতমালায় রবিবার কয়েকটি বনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয় একটি মোটরওয়ে। ইতোমধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

তুরস্কের ইজমির অঞ্চল থেকেও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষকে। দাবানলে পুড়ে গেছে অন্তত ২০টি ঘরবাড়ি। ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ক্রোয়েশিয়া ও গ্রিসের উপকূলীয় এলাকাতেও দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে, সরিয়ে নেওয়া হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

যুক্তরাজ্যে হিথ্রো বিমানবন্দরে সোমবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উইম্বলডনে ছিল ৩২.৯ ডিগ্রি, যা টেনিস টুর্নামেন্টটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

পর্তুগালের রাজধানী লিসবনসহ সাতটি জেলায় রেড অ্যালার্ট। জার্মানিতে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাস। সার্বিয়ায় ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণতম দিন পার করেছে বুধবার। বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার রাজধানী সারায়েভোয় বৃহস্পতিবার রেকর্ড করা হয় ৩৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তর ম্যাসেডোনিয়ার স্কোপজেতে শুক্রবার তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তাপপ্রবাহ শুধু জনস্বাস্থ্য নয়, পরিবেশের ওপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এড্রিয়াটিক সাগরের উষ্ণ পানিতে দেখা যাচ্ছে বিষাক্ত ‘লায়নফিশ’-এর মতো মাছ। পাশাপাশি পাহাড়ি হিমবাহগুলো দ্রুত গলে যাচ্ছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, “তাপমাত্রা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা, বন্যা, খরা ও দাবানল—সব মিলিয়ে মানবাধিকার ও পরিবেশ চরম হুমকির মুখে।”

জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যানেল জানায়, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই এই তাপপ্রবাহ বাড়ছে। তাপমাত্রা যত বাড়ছে, তত বেশি ও তীব্র গরম পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের রিডিং ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া বিজ্ঞানী রিচার্ড অ্যালান বলেন, “গ্রিনহাউস গ্যাস বৃদ্ধির ফলে পৃথিবী অতিরিক্ত তাপ আর সহ্য করতে পারছে না। বাতাস ও মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে, ফলে মাঝারি গরমও এখন ভয়াবহ তাপপ্রবাহে পরিণত হচ্ছে।”

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/ckus
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন