English

30.9 C
Dhaka
সোমবার, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৫
- Advertisement -

কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে ২১ কোটি টাকা আত্মসাৎ, সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা

- Advertisements -

কর্মচারীকে মালিক সাজিয়ে নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) ঢাকার কারওয়ান বাজার শাখা থেকে ২১ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী ও ব্যাংকটির এমডিসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপ-সহকারী পরিচালক মো. রুবেল হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

মামলার আসামিরা হলেন— সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী ও ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামান, মডেল ট্রেডিং-এর মালিক ও আরামিটের জুনিয়র অফিসার মোহাম্মদ মিছবাহুল আলম, হিসাব খোলার পরিচয়দানকারী মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবিএল) সাবেক পরিচালক ইউনুছ আহমদ, আনিসুজ্জামান চৌধুরী, আখতার মতিন চৌধুরী, এম এ সবুর, হাজী আবু কালাম, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, আসিফুজ্জামান চৌধুরী, রোকসানা জামান চৌধুরী, বশির আহমেদ, আফরোজা জামান, সৈয়দ কামরুজ্জামান ও মো. শাহ আলম।

এ ছাড়া, ব্যাংকের সাবেক ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ কাদরী ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বজল আহমেদ বাবুল, সাবেক সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার শ্রাবন্তী মজুমদার, সাবেক এফএভিপি ও কারওয়ান বাজার শাখার ম্যানেজার (অপারেশন) মোসাদ্দেক মো. ইউসুফ, সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার মুঝায়োনা সিদ্দিক, সাবেক এভিপি ও ক্রেডিট অফিসার মোহাম্মদ গোলাম রাকিব, ইউসিবির সাবেক এফভিপি ও কারওয়ান বাজার শাখার প্রধান আলমগীর কবিরকে আসামি করা হয়েছে।

অন্যদিকে আরামিট পিএলসির এজিএম (ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং) মো. আব্দুল আজিজ ও আরামিট থাই অ্যালুমিনিয়ামের এক্সিকিউটিভ (একাউন্টস) মো. ইউসুফ চৌধুরীকেও আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর মালিকানাধীন আরামিট-এর এক জুনিয়র অফিসার মোহাম্মদ মিছবাহুল আলমের নামে ভুয়া প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবিএল) থেকে ২১ কোটি টাকা ঋণ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। মোহাম্মদ মিছবাহুল আলম ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন থেকে নিজেকে মডেল ট্রেডিংয়ের মালিক হিসেবে দেখিয়ে ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করেন। এরপর ওই প্রতিষ্ঠানকে ব্যবসায়িক সত্তা হিসেবে উপস্থাপন করে ইউসিবিএল-এর কারওয়ান বাজার শাখায় একটি চলতি হিসাব খোলা হয়। শাখার তৎকালীন কর্মকর্তা শ্রাবন্তী মজুমদার এবং অপারেশন ম্যানেজার মোসাদ্দেক মো. ইউসুফ কোনো রূপ যাচাই ছাড়াই হিসাব খোলেন।

পরবর্তী সময়ে ৩০ কোটি টাকার ঋণের আবেদন করা হয়, যার মধ্যে ২১ কোটি টাকা অনুমোদিত হয়। ঋণের প্রস্তাবনায় শাখার কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম রাকিব (এফএভিপি ও ক্রেডিট ইনচার্জ), মোসাদ্দেক মো. ইউসুফ (এসভিপি ও অপারেশন ম্যানেজার) এবং আলমগীর কবির (এসভিপি ও শাখা প্রধান) মিথ্যা পরিদর্শন প্রতিবেদন প্রস্তুত করে গ্রাহককে অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী হিসেবে উপস্থাপন করেন। প্রতিবেদনে কাগুজে গুদামঘর, হাজার হাজার মেট্রিক টন স্টক ও শত কোটি টাকার পণ্য মজুদের ভুয়া তথ্য দেওয়া হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের জুলাই-আগস্টে ঋণের অর্থ মডেল ট্রেডিং-এর হিসাবে জমা হয় এবং পরবর্তী সময়ে তা নগদে উত্তোলন ও বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তরের মাধ্যমে পাচার করা হয়। ইউসিবিএলের অন্য এক গ্রাহকের নামে অনুমোদিত ২৫ কোটি টাকার আরেকটি ঋণের অর্থ ঘুরিয়ে এনে মডেল ট্রেডিং-এর ২১ কোটি টাকার দায় সমন্বয় দেখানো হয়। অর্থাৎ একটি অপরাধলব্ধ ঋণ অন্য অপরাধলব্ধ ঋণের অর্থ দিয়ে পরিশোধ দেখানো হয়েছে। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের ঋণ অনুমোদন ও আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছে বলে দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৪০৬/৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২)(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/z4j4
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন