English

34 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৪
- Advertisement -

মেয়ের নগ্ন ছবি ছড়ানোর অভিযোগে সালিশে মাকে বেতের বাড়ি

- Advertisements -
Advertisements

স্কুল পড়ুয়া মেয়ের নগ্ন ছবি ছড়ানোর অভিযোগ তুলে গ্রাম্য সালিশে তারই মাকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি সালিশে করা জরিমানার টাকা দিতে না পারায় তার বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয় ফ্রিজ।

নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় ঘটে এ ঘটনা। এ ঘটনায় সোমবার রাতে আত্রাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।

Advertisements

অভিযোগের বিষয়ে ওই নারী বলেন, উপজেলার হাতিয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (৩৫) তার স্কুল পড়ুয়া মেয়ের ছবি তুলে কম্পিউটারের মাধ্যমে নগ্ন করে বেশ কয়েকজনকে দেখায়। তিন থেকে চারদিন আগে এ ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার সূত্র ধরে রোববার রাতে সমাজের পক্ষ থেকে হাতিয়াপাড়া গ্রামে সালিশ বসানো হয়। মেয়ের এমন নগ্ন ছবি ধারণে আমার সহযোগিতা আছে অভিযোগ তুলে আমাকে ১০টি বেত্রাঘাত ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া সাদ্দাম হোসেনকে ৫টি বেত্রাঘাত ও জরিমানা করা হয় দুই হাজার টাকা। সালিশে আমার স্বামীকে দিয়ে বেত্রাঘাত করানো হয়। পরে জরিমানার টাকা দিতে না পারায় বাসা থেকে মাতব্বররা ফ্রিজ নিয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ের ঘাড়ে কলঙ্কের দাগ দিয়ে উল্টো আমাকেই নির্যাতন করার পর জরিমানা করা হয়েছে। সালিশে যেতে না চাইলেও মাতব্বর আব্দুস ছালামের হুকুমে স্থানীয় মেম্বার ইসমাইল হোসেন, মহিলা মেম্বার আফরুজা বেগমসহ কয়েকজন এসে আমাকে নিয়ে গেছে। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার জন্য সোমবার রাতে আত্রাই থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগের পর রাতেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে ফ্রিজ।

এ বিষয়ে মেম্বার ইসমাইল হোসেন বলেন, শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সমাজের পক্ষ থেকে সালিশ ডাকা হয়েছিল। এতে গ্রামের প্রায় সবাই উপস্থিত ছিলেন। মেয়ের অপকর্মে মা বেশি সহায়তা করেছে। সালিশে গৃহবধূ, সাদ্দাম ও সমাজের পক্ষের লোকজন দিয়ে জুরিবোর্ড গঠন করা হয়েছিল। জুরিবোর্ডের রায় অনুযায়ী, তার স্বামীকে দিয়ে তাকে ১০টি বেত্রাঘাত করা হয়েছে এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে গৃহবধূ জরিমানার টাকা দিতে না পারায় ফ্রিজ নেওয়া হয়েছিল, পরে তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে সোমবার রাতে। এ ছাড়া ওই কিশোরীর ছবি কয়েকজনকে মোবাইলে ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে সাদ্দামকে ৫টি বেত্রাঘাত এবং দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

স্থানীয় মহিলা মেম্বার আফরুজা বেগম বলেন, সালিশে উপস্থিত মাতব্বরদের নির্দেশে ইসমাইল মেম্বারসহ কয়েকজন গিয়ে গৃহবধূ ও তার স্বামীকে ডেকে এনেছিলাম। সালিশের রায়ে গৃহবধূকে বেত্রাঘাতের জন্য আমাকে বলেছিল, কিন্তু আমি বেত্রাঘাত না করায় তার স্বামীকে দিয়ে বেত্রাঘাত করানো হয়েছে। এ ছাড়া গৃহবধূকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর সাদ্দাম হোসেনকে পাঁচ থেকে সাতটি বেত্রাঘাত করে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

সালিশে উপস্থিত মাতব্বর আব্দুস ছালামের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে নামাজের পর কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। নামাজের পর একাধিকবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কল রিসিভ হয়নি।

আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, সোমবার রাতে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন