English

28.8 C
Dhaka
বুধবার, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫
- Advertisement -

দেশে চিকিৎসার মান বাড়াতে হবে: বাড়ছে বিদেশগামী রোগীর সংখ্যা

- Advertisements -
বাংলাদেশের চিকিৎসাব্যবস্থার প্রতি রোগীদের আস্থার ঘাটতি আছে। বিশেষ করে আর্থিক সামর্থ্য আছে এমন পরিবারগুলো জটিল রোগে দেশে চিকিৎসা করাতেই চায় না। দেশের বাইরে চিকিৎসা নিয়েছে এমন অনেকের অভিযোগ হচ্ছে, দেশে চিকিৎসার খরচ বেশি, রোগ নির্ণয় যথাযথ হয় না, চিকিৎসকরা রোগীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন না এবং অপ্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে থাকেন। ফলে প্রতিবছর শুধু চিকিৎসার জন্য কয়েক শ কোটি ডলার দেশের বাইরে চলে যায়।

দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে এই অবস্থা। তার পরও বিদেশগামী রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

সম্প্রতি পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই) ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘ক্রস বর্ডার ডেটা ফ্লো : আ বাংলাদেশ পারসপেক্টিভ’ শীর্ষক কর্মশালায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, বাংলাদেশিরা বিদেশে চিকিৎসার জন্য বছরে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ করে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি।

সম্পতি ‘চিকিৎসাসেবায় বিদেশমুখিতা : আমাদের উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ২০২৩ সালে চার লাখ ৪৯ হাজার ৫৭০ জন বাংলাদেশি স্বাস্থ্যসেবার জন্য বিদেশ ভ্রমণ করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪৮ শতাংশ বেশি।

পিআরআইয়ের গবেষণায় বছরে পাঁচ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলারের কথা বলা হলেও এই খাতের অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, বাস্তবে এর চেয়ে চার-পাঁচ গুণ বা তারও বেশি অর্থ প্রতিবছর বাইরে চলে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ মনে করেন, এ ক্ষেত্রে যত অর্থ বাইরে যায় তার অতি সামান্য অংশ যায় বৈধভাবে কিংবা ব্যাংকের মাধ্যমে।
অনেকে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ডলার কিনে নেয়, কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথভাবে সে হিসাব দেয় না। অনেকে ট্যুরিস্ট ভিসায় বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করায়।

অনেকে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা নিয়ে যায়। তিনি বলেন, বিদেশে স্বাস্থ্য খাতের ব্যয়গুলোকে চিহ্নিত করার মতো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা এখনো গড়ে ওঠেনি বাংলাদেশে।

কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে বিদেশমুখী রোগীদের ৫১ শতাংশ যায় ভারতে। থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরে যায় ২০ শতাংশ করে। যুক্তরাজ্যে রোগী যাওয়ার হার ৩ শতাংশ।২ শতাংশ করে যায় জাপান ও মালয়েশিয়ায়।

১ শতাংশ করে যায় চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতার পালাবদলের পর ভারত ভিসা সীমিত করায় দেশের রোগীদের বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের রাজধানী কুনমিংয়ের চারটি হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের জন্য বিশেষভাবে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে দোভাষীসহ নানা রকম সুযোগ রাখা হয়েছে। ঢাকা-কুনমিং ছাড়াও চট্টগ্রাম-কুনমিং ফ্লাইট চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফলে ভারতে যাওয়া রোগীদের অনেকেই এখন চীনে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশগামিতা কমাতে হলে দেশে বিশ্বমানের হাসপাতাল ও চিকিৎসাসেবা তৈরি করতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে সরকারের উদ্যোগ আরো বাড়াতে হবে। সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি এই পেশায় নিয়োজিতদেরও উদ্যোগী হতে হবে। সেবার মান ও আন্তরিকতা বাড়াতে হবে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/d5ej
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন