English

27.3 C
Dhaka
রবিবার, জুলাই ৬, ২০২৫
- Advertisement -

ট্রাম্পের পালটা শুল্ক ৩ মাসের জন্য স্থগিত, প্রধান উপদেষ্টার ধন্যবাদ

- Advertisements -

গোটা দুনিয়ায় সাড়া ফেলে দেওয়া পালটা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রাখছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোয় যোগাযোগ করায় আগামী তিন মাসের জন্য পালটা শুল্ক স্থগিত রাখছেন তিনি। এ সময় এসব দেশের ওপর আরোপিত শুল্কের পরিমাণ হবে ১০ শতাংশ।

প্রায় সব দেশকে বাড়তি শুল্কের হাত থেকে রেহাই দিলেও বিপরীত অবস্থা চীনের। আগের ঘোষণা অনুযায় চীনের ওপর মোট ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা ছিল। নতুন ঘোষণায় চীনের ওপর মোট ১২৫ শতাংশ শুল্ক প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।

এদিকে এ শুল্কহার তিন মাসের জন্য স্থগিত করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এর আগে তিনি ট্রাম্পকে চিঠি দিয়ে পালটা শুল্ক তিন মাস পরে কার্যকর করতে বলেছিলেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বুধবার (৯ এপ্রিল) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোস্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। এ দিন থেকেই ট্রাম্পের ২ এপ্রিল ঘোষণা করা পালটা শুল্ক (রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ) কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।

ট্রাম্প লিখেছেন, প্রকৃত অবস্থার ভিত্তিতে ৭৫টিরও বেশি দেশ বাণিজ্য বিভাগ, অর্থ বিভাগ ও ইউএসটিআরসহ (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি) যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। দেশগুলো বাণিজ্য, বাণিজ্য বাধা, শুল্ক, মুদ্রা কারসাজি ও অশুল্ক বাধাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সমাধানে পৌঁছাতে সমঝোতা আলোচনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।

এসব আবেদনের কারণেই পালটা শুল্ক আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানান ট্রাম্প। বলেন, আমি ৯০ দিনের জন্য পালটা শুল্ক স্থগিত অনুমোদন করেছি। একই সঙ্গে এই সময়ের জন্য পালটা শুল্ক ১০ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। এটাও অবিলম্বে কার্যকর হবে।

সব দেশকে ছাড় দিলেও চীনকে ছাড় দেননি ট্রাম্প। বরং তিনি ২ এপ্রিল নতুন শুল্কহার ঘোষণার পর চীন পালটা শুল্ক আরোপ করায় দেশটির ওপর বাড়তি শুল্কের বোঝা চাপিয়ে দেন ট্রাম্প। সব দেশের জন্য নতুন শুল্কহার কার্যক্রম অন্তত ৯০ দিনের জন্য পিছিয়ে দিলেও তাই চীনকে সেই তালিকায় রাখেননি তিনি।

ট্রাম্প লিখেছেন, চীন বিশ্বের বাজারগুলোর প্রতি শ্রদ্ধার ঘাটতি দেখিয়েছে। এ কারণে আমি যুক্তরাষ্ট্রে চীনের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ নির্ধারণ করছি। এটা অবিলম্বে কার্যকর হবে। আশা করি, নিকট ভবিষ্যতে চীন ও অন্যান্য দেশ উপলব্ধি করতে পারবে যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণার দিন আর থাকবে না বা গ্রহণযোগ্য হবে না।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিটও জানিয়েছেন উচ্চ হারে আরোপ করা শুল্ক কার্যকর ৯০ দিনের জন্য পিছিয়ে দেওয়ার কথা। তিনি বলেন, এর অর্থ, অন্যান্য দেশের পণ্যে এখন সার্বজনীনভাবে ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকবে।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, কানাডা ও মেক্সিকোও এই ছাড়ের আওতায় আছে। এই দুটি দেশ তাদের কিছু পণ্যে ২৫ শতাংশ হারে শুল্কের মুখে ছিল। এখন শুল্ক ১০ শতাংশেই থাকবে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর পণ্যের শুল্কও এর আওতায় পড়বে কি না, তা স্পষ্ট করে জানাননি তিনি।

এদিকে ট্রাম্প নতুন শুল্কহার কার্যকরের সময় তিন মাস পিছিয়ে দেওয়ায় তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে তার ফেসবুক পেজে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাড়তি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ায় আপনাকে (ট্রাম্প) ধন্যবাদ। আমরা আপনার বাণিজ্য এজেন্ডাকে সমর্থন জানাতে আপনার প্রশাসনের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।

গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প যে নতুন শুল্কহার ঘোষণা করেন, তাতে বাংলাদেশের পণ্যে বাড়তি ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়। বাংলাদেশের পণ্যে আগে থেকেই ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র। নতুন বাড়তি শুল্ক আরোপ করায় বাংলাদেশি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি করলে মোট শুল্কের হার দাঁড়ায় ৫২ শতাংশ।

ট্রাম্পের এ ঘোষণার পরই নড়েচড়ে বসে সরকার। ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার ট্রাম্পকে চিঠি দেন অধ্যাপক ইউনূস। এ ছাড়া ইউএসটিআরকে চিঠি দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। উভয় চিঠিতেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের আরও ১০০ পণ্যকে শুল্কমুক্ত করা হচ্ছে বলে চিঠিতে লিখেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/e8x1
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন