English

30 C
Dhaka
মঙ্গলবার, জুলাই ২২, ২০২৫
- Advertisement -

ব্যক্তির চিকিৎসা ব্যয় কমান: স্বাস্থ্য খাতে পিছিয়ে পড়া

- Advertisements -

বাংলাদেশ অনেক খাতেই ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবনে সবচেয়ে জরুরি যে খাত, সেই স্বাস্থ্য খাতেই বাংলাদেশের অর্জন খুব কম। কোথাও কোথাও তা নেতিবাচক। এমন তথ্য উঠে এসেছে খোদ সরকারি সংস্থারই গবেষণায়। গত মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের এক গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, গ্রাম পর্যায়ে সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর নয়।

শহর এলাকায়ও পর্যাপ্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা নেই। এ কারণে রোগীরা চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে যেতে বাধ্য হয়। সেখানে চিকিৎসা ব্যয় অনেক বেশি এবং সেই ব্যয়ের প্রায় পুরোটাই বহন করতে হয় রোগীর পরিবারকে। এ কারণে প্রতিবছর বহু মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। এমন তথ্য উঠে এসেছে বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) যৌথ গবেষণায়ও। সংস্থা দুটি এ জন্য বাংলাদেশে স্বাস্থ্য পরিষেবার সীমিত পরিধি ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবেলার কার্যকর কৌশলের অভাবকেই দায়ী করেছে।

স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের গবেষণায় উঠে এসেছে, স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তির নিজের ব্যয় ক্রমেই বাড়ছে। এখন প্রায় ৬৯ শতাংশ খরচ ব্যক্তি নিজেই বহন করে থাকেন। অথচ ২০১২ সালে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট যে কৌশলপত্র প্রণয়ন করেছিল, তাতে বলা হয়েছিল ক্রমান্বয়ে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় কমিয়ে আনা হবে এবং ২০৩২ সালে তা হবে মাত্র ৩২ শতাংশ। বাস্তবে হয়েছে উল্টোটা। ২০১২ সালে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় ছিল ৬৪ শতাংশ, ২০১৫ সালে তা বেড়ে হয় ৬৭ শতাংশ এবং সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এই পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৮.৫ শতাংশ। এই ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে ব্যক্তির সামগ্রিক জীবনযাত্রার ওপর।

গবেষণায় উঠে আসে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে প্রতিবছর ৪.৫ শতাংশ খানা বা ৮৬ লাখ মানুষের আর্থিক অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসাসেবা এখনো অপ্রতুল। মাত্র ১৪.৪১ শতাংশ মানুষ সরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিতে যায়। তার পরও সেখানে সেবা নিতে আসা ৯৩ শতাংশ রোগী হাসপাতাল থেকে কোনো ওষুধ পায় না। তাদের মধ্যে আবার প্রায় ৮৫ শতাংশ রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ছুটতে হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। সেখানেও তাদের প্রচুর ব্যয় করতে হয়। শুধু চিকিৎসা ব্যয় বেশি হওয়ার কারণে ১৬ শতাংশ খানা বা তিন কোটির বেশি মানুষ অসুস্থ হলেও চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে যায় না। এই ধারা দেশের স্বাস্থ্য খাতের অগ্রগতিকেই ব্যাহত করবে এবং স্বাস্থ্য খাতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে।

স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া ব্যক্তির মৌলিক অধিকার। এখানে রাষ্ট্রকে আরো বেশি উদ্যোগী হতে হবে। ব্যক্তির ওপর নিজস্ব চিকিৎসা ব্যয়ের চাপ নির্ধারিত কৌশলপত্র অনুযায়ী কমিয়ে আনতে হবে।

স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে। সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে যৌক্তিক স্বাস্থ্যসেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/ea46
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন