English

42.2 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
- Advertisement -

ভাঙছে ডলার সিন্ডিকেট, প্রতিদিন কমছে দাম

- Advertisements -

আমদানি বৃদ্ধিসহ নানা কারণে বেড়ে যায় ডলারের চাহিদা। ফলে দেশে ডলারের সংকট দেখা দেয়। এর প্রভাব পড়ে ডলারের দামে। টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ায় সরকার। তবে ব্যাংক থেকে পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহ না থাকায় খোলাবাজার থেকে কিনতে থাকেন ক্রেতারা। এ সুযোগে খোলাবাজারে হু হু করে বাড়তে থাকে ডলারের দাম। মূলত খোলাবাজারে সিন্ডিকেটের হাতেই ছিল ডলারের লাগামহীন দর। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই উচ্চমূল্যে ডলার কেনেন।

ডলারের সংকটও আরও বাড়িয়ে তোলে কিছু সুযোগসন্ধানী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর যোগসাজশে পরিস্থিতি আরও অস্থির করে তোলে তারা। কারসাজিতে জড়িত থাকার দায়ে ছয়টি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠিও দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সুযোগসন্ধানী ব্যাংকার ও দালালচক্রের কারণে ৯৫ টাকার ডলার ১১৮ টাকায় কিনতে বাধ্য হন সাধারণ ক্রেতারা।

ডলার, ইউরো ও পাউন্ড কেনাবেচায় শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে  একাধিক চক্র। এ চক্রটি রাজধানীর মতিঝিল, ফকিরাপুল, পল্টন, গুলশান এলাকায় এক্সচেঞ্জ হাউজের সামনে অবস্থান নিয়েই অবৈধভাবে রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেলেই সটকে পড়েন তারা। কিছুক্ষণ পরই আবার ফিরে আসেন একই স্থানে। এভাবে দিনভর চলছে রমরমা ব্যবসা, যাতে পকেট কাটা যাচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।

এদিকে, ডলার নিয়ে কারসাজিতে গড়ে ওঠা চক্রকে ধরতে তৎপর বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। তবে দালালদের দৌরাত্ম্য থামেনি। ক্রেতারা এক্সচেঞ্জ হাউজে যাওয়ার আগেই দালালচক্র তাদের ফাঁদে ফেলেন। বিভিন্ন প্রলোভনে তাদের কাছে ডলার বিক্রি করেন। অভিযোগ রয়েছে, দালালচক্রের সদস্যদের সঙ্গে এক্সচেঞ্জ হাউজের মালিক ও কর্মচারীদের যোগাযোগ রয়েছে।

Advertisements

এই অবস্থায় সংকট নিরসনে রিজার্ভ থেকে ডলার ছাড় করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে টান পড়েছে রিজার্ভে। রিজার্ভ কমে এখন ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।

খোলাবাজারে ডলারের লাগামহীন মূল্য নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই মধ্যে মানি এক্সচেঞ্জ হাউজ ও ব্যাংকগুলোকে ডলার কেনাবেচার সীমা বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে মানি এক্সচেঞ্জ যে দামে ডলার কিনবে, তার চেয়ে এক থেকে সর্বোচ্চ দেড় টাকা বেশি দামে বিক্রি করতে পারবে। এছাড়া বাংক বিক্রি করবে এক টাকা বেশি দরে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এ পদক্ষেপে এখন উল্টো পথে খোলাবাজারের ডলারের দাম। মঙ্গলবার খোলাবাজারে প্রতি ডলারের দাম ১১৪ টাকা ছিল। দুইদিনের ব্যবধানে তা কমে বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) ১০৮ থেকে ১০৯ টাকায় নেমে এসেছে।

খোলাবাজারের ডলার বিক্রেতারা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়াকড়ি আরোপের কারণে বাজার বাড়ি খেয়েছে (দাম কমে গেছে)। যেভাবে টাকার মান বাড়ছে অর্থাৎ ডলারের দাম কমছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যে ১০৫ টাকায় নেমে আসতে পারে।

রাজধানীর পল্টন এলাকায় খুচরা বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রেতা ইসরাফিল জানান, এখন প্রতিদিন অভিযান চালানো হচ্ছে। ব্যবসার পরিবেশ নেই। এরপরও কিছু বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু সে অনুপাতে ক্রেতা নেই। এখন ডলার সরবরাহ বেড়েছে, দামও কমেছে।

Advertisements

আবু ইউসুফ নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, বাজারের অবস্থা বুঝে কিছু (ডলার) কিনে রেখেছিলাম। এখন ডলারের মান হারাচ্ছে, ক্রেতা নেই। বাজারে এখন ডলারের ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা বেশি। আজ ১০৯ টাকাতেও ক্রেতা নেই, অথচ আমার ১১৩ টাকায় কেনা রয়েছে। এভাবে দাম কমলে আগামী সপ্তাহে ১০৫-১০৬ টাকায় নেমে আসবে।

এদিকে, আন্তঃব্যাংকে এখন প্রতি ডলার ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে এ দামেই ডলার কিনছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ডলারের সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রতিদিনই রিজার্ভ থেকে ছাড়া হচ্ছে। আশা করছি কম সময়ের মধ্যেই ডলারের (সংকট) পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

এদিকে, ডলারের বাজার অস্থিতিশীল করার অভিযোগে দেশি–বিদেশি ছয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) ব্যাখ্যা তলব (নোটিশ) করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো- ডাচ্–বাংলা, সাউথ ইস্ট, প্রাইম, দি সিটি, ব্র্যাক ও বিদেশি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।

বুধবার (১৭ আগস্ট) এসব ব্যাংকের এমডিদের এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়। এর আগে বাজার অস্থিতিশীল করে অতিরিক্ত মুনাফা করার অভিযোগে এসব ব্যাংকের ট্রেজারিপ্রধানদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন