English

29 C
Dhaka
শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

অবৈধ দখলে বনের জমি: উদ্ধারে কঠোর পদক্ষেপ নিন

- Advertisements -

দেশে সুযোগসন্ধানী মানুষের অভাব নেই। তারা কখনো বনের জমি, কখনো রেলওয়ে বা অন্য কোনো সরকারি সংস্থার জমি, কখনো খাসজমি দখল করে নেয়। এদের হাত থেকে রক্ষা পায় না খালবিল, নদীনালার জমিও। সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এমন কিছু তথ্য উঠে এসেছে।

বৈঠকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সারা দেশে বন বিভাগের দুই লাখ ৫৭ হাজার ১৫৮ একর ভূমি অবৈধ দখলে চলে গেছে। এই সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ১০ হাজার ১৯৭ কোটি ১৭ লাখ ৩২ হাজার ৪৯০ টাকা। মৌজা মূল্য ও কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় বাজারদর অনুযায়ী বেদখল হওয়া জমির মোট মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

দখলকারীরা এসব জমিতে কৃষিকাজের পাশাপাশি হাট-বাজার, দোকানপাট ও ভারী শিল্পসহ ছোট-বড় অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। দখলকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক লাখ ৬০ হাজার ৫৬৬। এরই মধ্যে অবৈধ দখলদারদের তালিকা চূড়ান্ত করে মামলা দায়েরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দ্রুতই শুরু করা হবে উচ্ছেদ অভিযান।

দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে এই দখলদারি। এতে স্থানীয় প্রভাবশালী, রাজনৈতিক প্রভাবশালী, এমনকি এনজিও প্রভাবশালীরাও বড় ভূমিকা রেখেছে। ব্রিটিশ আমলে যে সিএস রেকর্ড করা হয়, তাতে বন বিভাগের জমির মোটামুটি সঠিক পরিমাণ যায়। এরপর এসএ, আরএস বা বিএস জরিপে কেবলই কমেছে বন বিভাগের জমি।

বনের জমি রেকর্ড করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে। আবার ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত বনভূমি (সংরক্ষিত বনভূমি ছাড়া অন্যান্য, যেমন—রক্ষিত, অর্পিত বনভূমি) অনেক ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বন্দোবস্ত দিয়েছে। কমিটির বৈঠকে প্রধান বন সংরক্ষক জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে অবৈধ দখলে থাকা এক লাখ ৩৮ হাজার একর বনভূমি উদ্ধারের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ভারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮২০ একরে।

তার পরও এক লাখ ১৯ হাজার একর জমি অবৈধ দখল উচ্ছেদ প্রক্রিয়ার বাইরে থেকে যাবে। তাও মন্দের ভালো যে অবৈধ দখলে থাকা বনের একটি বড় অংশ উদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু করা হচ্ছে। জানা যায়, অতীতেও বন বিভাগ অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে অনেক মামলা করেছে। অনেক দিন ধরেই সেসব মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। মামলা পরিচালনায় সংশ্লিষ্টদের গাফিলতির কারণেও অনেক মামলায় কোনো ফলোদয় হয়নি।

সংসদীয় কমিটি বেদখলে থাকা বনের জমি উদ্ধারে যে ভূমিকা নিয়েছে তা প্রশংসনীয়। এখন বন মন্ত্রণালয়কে উঠেপড়ে লাগতে হবে। কমিটির পক্ষ থেকে বনভূমি উদ্ধারে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দখলে থাকা বনভূমিকে অগ্রাধিকার দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এমন পদক্ষেপ আরো অনেক আগে নেওয়া উচিত ছিল। অতীতে বন বিভাগের অবহেলা এবং বন কর্মকর্তাদের অবৈধ সংযোগ দখলদারদের উৎসাহিত করেছে। ভবিষ্যতে যেন আর তেমনটি না ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন