English

33 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
- Advertisement -

আইনের যথাযথ প্রয়োগ দরকার: বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

একবিংশ শতাব্দীতে এসেও বাল্যবিবাহের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারেনি আমাদের সমাজ। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হবে। আর জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বাল্যবিবাহ নির্মূল করতে হবে ২০৪১ সালের মধ্যে। বাল্যবিবাহ রোধে সরকার নানা ধরনের কর্মসূচি নিয়েছে।

শাস্তির ব্যবস্থা রেখে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। কম বয়সী মেয়েদের বিবাহ পড়ানো বা ভুল তথ্য দিয়ে কাবিন রেজিস্ট্রির জন্য অনেক কাজি বা অভিভাবকের শাস্তিও হয়েছে। তবু বাল্যবিবাহ এখনো সমাজে একটি কলঙ্ক হিসেবে বিরাজ করছে। এমনই এক ঘটনায় বাগেরহাটের শরণখোলায় বর, বরের চাচা ও মামাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রশাসনের কাছে খবর ছিল এসএসসি পরীক্ষার্থী ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীর বয়স বাড়িয়ে গোপনে বিবাহ দেওয়া হচ্ছে। ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এই দণ্ড দেওয়া হয়।
বাল্যবিবাহ, বিশেষ করে কন্যাশিশুদের ১৮ বছর বয়সপূর্তির আগেই বিবাহ একটি জাতীয় অভিশাপ। এটি রোধ করার জন্য আইন আছে। কিন্তু বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে অহরহ চলছে বাল্যবিবাহ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গরিব মা-বাবা মেয়ের বয়স লুকিয়ে তাঁদের পছন্দের ‘সুপাত্রের’ সঙ্গে বিবাহের আয়োজন করেন। এসব ক্ষেত্রে গ্রামের তথাকথিত নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের বাধা প্রদান তো দূরের কথা, বরং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁদের আনুকূল্য থাকে।
বাল্যবিবাহের কারণ হিসেবে দারিদ্র্য, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা, নিরাপত্তাহীনতা ইত্যাদি বিষয়কে চিহ্নিত করা হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ না করা এবং সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি না করতে পারাও বাল্যবিবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণ। গবেষণায় দেখা গেছে, বাল্যবিবাহ এবং স্কুল ছেড়ে দেওয়ার পেছনে দারিদ্র্যের চেয়েও বড় ভূমিকা পালন করেছে নিরাপত্তার অভাব ও পারিবারিক সম্মান হারানোর ঝুঁকি।

বাল্যবিবাহ নারী-পুরুষ উভয়ের সমস্যা নয়। প্রজনন স্বাস্থ্যের বিবেচনায় মেয়েদের বাল্যবিবাহের একটি অতিরিক্ত ক্ষতিকর দিক রয়েছে। সমাজ ও রাষ্ট্রের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে বাল্যবিবাহ। মেয়েদের বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হলে গ্রামীণ সমাজব্যবস্থার দিকে নজর দিতে হবে। সেখানে বেশির ভাগ মানুষের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হচ্ছেন বিত্তশালী, প্রভাব-প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তি। এসব ব্যক্তির কারো দাপট বিত্তের, কারো সামাজিক-রাজনৈতিক প্রতিপত্তির।

আমাদের নীতিনির্ধারকদের বিষয়টি গভীরভাবে ভাবতে হবে এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে দেশ কখনো বাল্যবিবাহের অভিশাপ থেকে মুক্ত হবে না। অর্থনৈতিক সমস্যা যেন কিশোরীদের শিক্ষাজীবনকে ধ্বংস করে না দেয় তার উপায় খুঁজতে হবে। একই সঙ্গে কিশোরীদের নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। সব উপজেলার সব নির্বাহী কর্মকর্তা, সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও স্থানীয় শিক্ষিতজনরা যদি এগিয়ে আসেন, তাহলেই শুধু আমরা বাল্যবিবাহের এ অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে পারি।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন