English

31 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
- Advertisement -

আবাসস্থল রক্ষার উদ্যোগ নিন: দুই বছরে ১৯ হাতির মৃত্যু

- Advertisements -

বাংলাদেশে যে কয়েকটি এলাকার বনে এখনো খুব সামান্য পরিমাণে হাতির বিচরণ রয়েছে তার মধ্যে কক্সবাজারের চকরিয়ার বনাঞ্চলগুলো অন্যতম। আগে কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকায় হাতির বিচরণ থাকলেও লাখ লাখ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর সেখানকার পরিবেশের এত অবনতি হয়েছে যে সেখানে আর হাতি দেখাই যায় না। চকরিয়ায়ও দ্রুত নষ্ট হচ্ছে বনের পরিবেশ। ইটখোলায় লাকড়ির জোগান দিতে গিয়ে উজাড় করা হচ্ছে বনভূমি।

তার পরও আছে মানুষের নিষ্ঠুরতা। বিষ দিয়ে, বিদ্যুতের ফাঁদ পেতে, এমনকি গুলি করেও হত্যা করা হচ্ছে হাতি। প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত দুই বছরে কক্সবাজারের বিভিন্ন বনে ১৯টি হাতির মৃত্যু হয়েছে। গত রবিবার চকরিয়ার খুটাখালী বনবিটের গহিন অরণ্যে ছয় বছর বয়সী একটি হাতির মৃতদেহ পাওয়া গেছে। হাতিটিকে হত্যা করা হয়েছে নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে হাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
এই খুটাখালী বনবিটে আগেও অনেক বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে। গত বছরের নভেম্বর মাসে এখানে দুটি বন্য হাতিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। এক দল লোক বন্য শূকর শিকার করতে গেলে হঠাৎ তাদের সামনে একটি হাতি চলে আসে। তখন ১২ বছরের মাদি হাতিটিকে তারা মাথায় গুলি চালিয়ে হত্যা করে। একই এলাকায় আরেকটি বন্য হাতিকে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে হত্যা করা হয়। একই মাসে ঈদগাঁও উপজেলার গজালিয়া সাতঘরিয়া এলাকায় একটি হাতির মৃতদেহ পাওয়া যায়। এভাবে প্রতিনিয়ত হাতি নিধন চলছেই। জানা যায়, বনের ভেতরে অনেক অবৈধ বসতি গড়ে উঠেছে। সেখানকার লোকজন খালি জায়গায় ও নিচু এলাকায় ধান বা অন্যান্য ফসল চাষ করে। হাতির পাল থেকে সেসব ফসল রক্ষার জন্য বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে রাখে। অথচ বন বিভাগ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়। সচেতনতামূলক নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়। কোথাও হাতি নামলে বাঁশি, হর্ন ও পটকা ফুটিয়ে কিভাবে হাতি তাড়াতে হবে তার কৌশল শেখানো হয়। কিন্তু কিছুতেই কোনো কাজ হচ্ছে না।
বাংলাদেশে হাতি প্রবলভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। হাতির বিচরণ ভূমি বা বসবাসযোগ্যতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশে কক্সবাজারকে হাতির শেষ আশ্রয়স্থল মনে করা হয়। এখানে যেভাবে বন নষ্ট হচ্ছে তাতে এই আবাসস্থলটিরও দ্রুত অবনতি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বনের আশপাশ থেকে ইটখোলাগুলো দ্রুত সরিয়ে নিতে হবে। বন ধ্বংস কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বনের ভেতরে থাকা অবৈধ বসতি উচ্ছেদ করতে হবে। হাতি হত্যার প্রতিটি ঘটনা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা চাই না বাংলাদেশের প্রকৃতি থেকে হাতি চিরতরে হারিয়ে যাক।
সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন