English

32 C
Dhaka
শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
- Advertisement -

উপযুক্ত পদক্ষেপ নিন: বহু নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষা বিপন্ন

- Advertisements -
মাতৃভাষা নিয়ে বাঙালির আবেগ যেমন আছে, তেমনি আছে গর্ব ও অহংকার। বাঙালিই পৃথিবীতে প্রথম জাতি, যারা মাতৃভাষার সম্মান ও অধিকার রক্ষার জন্য বুকের তাজা রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে। বাঙালির সেই আত্মত্যাগের দিনটিকে সারা পৃথিবী আজ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। দিনটি বিশ্বব্যাপী ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়।
কিন্তু বাংলাদেশে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষার অবস্থা কী? আমরা কি তাদের মাতৃভাষার প্রতি যথেষ্ট সম্মান দেখাতে পারছি? সেসব ভাষা রক্ষায় রাষ্ট্র কি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে পারছে?
শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বেই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মাতৃভাষা অত্যন্ত অবহেলিত ও বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর তথ্য অনুযায়ী, গড়ে প্রতি ১৪ দিনে পৃথিবী থেকে একটি করে মাতৃভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের তিনটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে গেছে। এসব নৃগোষ্ঠীর সদস্যরাও এখন তাদের মাতৃভাষার কথা স্মরণ করতে পারে না।
বিলুপ্ত হওয়ার পথে রয়েছে আরো দুটি ভাষা। আর আটটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষা যথেষ্ট হুমকির মুখে রয়েছে। এর জন্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর আর্থিক দুরবস্থা ও উদ্যোগের অভাব যেমন দায়ী, তেমনি দায়ী এসব ভাষা সংরক্ষণে রাষ্ট্রের পরিকল্পিত প্রয়াসের অভাব।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তাগাদা ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ২০১৭ সাল থেকে কিছু নৃগোষ্ঠীর জন্য প্রাক-প্রাথমিক স্তরে তাদের মাতৃভাষায় পুস্তক প্রণয়ন, মুদ্রণ ও বিতরণের উদ্যোগ নেয়।
এসব নৃগোষ্ঠীর মধ্যে আছে পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা এবং সমতলের সাদ্রি ও গারো জনগোষ্ঠী। কিন্তু এসব ভাষায় অভিজ্ঞ শিক্ষকের অভাবে এই কার্যক্রম খুব একটা এগোতে পারছে না।
বাংলাদেশ সরকার ২০১৯ সালে ৫০টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দেয়। তাদের মধ্যে ১৩টি নৃগোষ্ঠীর ভাষা হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সেই ভাষাগুলো রক্ষার ব্যাপারে পরিকল্পিত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
বাংলাদেশে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর ভাষা নিয়ে কাজ করে সামার ইনস্টিটিউট অব লিঙ্গুইস্টিকস (এসআইএল) নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৫টি স্থানীয় নৃগোষ্ঠীর ভাষার ‘ল্যাঙ্গুয়েজ ম্যাপিং’ সম্পন্ন করেছে। তারা মোট ২০টি নৃগোষ্ঠীর ভাষা নিয়ে গবেষণা করছে। তারা তাদের ফলাফলগুলো সরকারকে অবহিত করবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটও এ লক্ষ্যে কাজ করছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুনির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ রয়েছে। কিন্তু সে সবের সফল বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন।
শুধু ভাষা নয়, অনেক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অস্তিত্বই আজ বিপন্ন। জীবনযুদ্ধে বিপর্যস্ত এসব মানুষের পক্ষে নিজস্ব ভাষার উন্নয়নে কিছু করা প্রায় অসম্ভব। তাই এসব নৃগোষ্ঠী ও তাদের ভাষা রক্ষায় রাষ্ট্রকেই উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।
সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন