English

39 C
Dhaka
সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
- Advertisement -

কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে: বন ধ্বংসের মহোৎসব

- Advertisements -
সুস্থ জীবনের জন্য চাই সুস্থ পরিবেশ। কিন্তু সেই পরিবেশ কি আমাদের আছে? সুস্থ পরিবেশের জন্য একটি দেশে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। ধারণা করা হয়, বাংলাদেশে বন রয়েছে ৫ শতাংশের মতো ভূমিতে। তা-ও ঘনত্ব ও বৈশিষ্ট্য বিচারে সেগুলো মানসম্মত বনভূমি নয়।
তার পরও প্রতিনিয়ত চলছে বন ধ্বংসের মহোৎসব। গণমাধ্যমে নিয়মিতভাবে আসছে এসব খবর। প্রকাশিত খবরে বলা হয়, টাঙ্গাইলের মধুপুর ভাওয়াল গড়ের ঘাটাইল অংশে থাকা সংরক্ষিত বন থেকে শাল বা গজারিগাছ কেটে উজাড় করা হচ্ছে।

রাতের আঁধারে কিংবা দিনেও অবাধে চলছে গাছ কাটার এই উৎসব। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, সংঘবদ্ধ গাছচোর চক্র, অসাধু কাঠ ব্যবসায়ী, বন কর্মকর্তা এবং বনের ভেতর গড়ে ওঠা অবৈধ করাতকল মালিকরা মিলেমিশেই এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন।

সংরক্ষিত বনের গাছ কাটায় নিষেধাজ্ঞা আছে। এর ওপর গজারিগাছ কাটায়ও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

কিন্তু এসব নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করবে কে? বনাঞ্চলের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল থাকতে পারবে না। তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা থাকা নিষিদ্ধ। বাস্তবে বনের ঘা ঘেঁষেই রয়েছে বহু করাতকল ও ইটভাটা। কোথাও কোথাও বনের জায়গা দখল করেও গড়ে তুলতে দেখা যায় এসব স্থাপনা। ইটভাটার প্রধান জ্বালানি বনের কাঠ।
আর করাতকলে দিনরাত সমানে চলে কাঠ চেড়াই। উল্লেখ্য, এসব ইটভাটা ও করাতকলের প্রায় সবই অবৈধ বা লাইসেন্সবিহীন। ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহজ উত্তর, আমরা কাউকে লাইসেন্স দিইনি।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বন বিভাগ বা পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকজনকে ‘ম্যানেজ’ না করে এর কোনোটাই চলতে পারে না। এসব কর্তৃপক্ষের নিয়মিত ‘চাঁদাবাজি’ একটি ওপেন সিক্রেট। শুধু তা-ই নয়, বনের পাশে চুল্লি বানিয়ে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা বানানোর ব্যবসাও বেশ জমে উঠেছে।

স্বাধীনতার পরও মধুপুরের বনাঞ্চল ছিল ঘন ও সমৃদ্ধ। তথ্য-প্রমাণে দেখা যায়, পঞ্চাশ কিংবা ষাটের দশকেও সেখানে বাঘ, বুনো মোষের দেখা মিলত। আজ সেখানকার খণ্ড খণ্ড বনে শিয়াল, শজারু থাকার মতো পরিবেশও নেই। এর প্রধান কারণ, গাছ কেটে বন উজাড় করে দেওয়া এবং বনের জায়গা দখল করে চাষাবাদ কিংবা নানা ধরনের স্থাপনা নির্মাণ।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, সারা দেশে দুই লাখ ৫৭ হাজার ১৫৮ একর বনভূমি অবৈধ দখলে রয়েছে।

এভাবে বনভূমি কমার পেছনে বহু ধরনের অপপ্রয়াস রয়েছে। সিএস রেকর্ড অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে থাকা বনভূমি পরবর্তী সময়ে এসএ/আরএস/বিএস জরিপে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে রেকর্ড করা হয়েছে। বনের ওপর দিয়ে রাস্তা গেছে, সেই রাস্তার দুই পাশে প্রভাবশালীরা বনের জমি দখল করে স্থাপনা, এমনকি শিল্প-কারখানা তৈরি করেছে। অনেককে বনভূমি লিজও দেওয়া হয়েছে।

আমরা আশা করি, বনভূমি ও বনের বৈশিষ্ট্য রক্ষায় সরকার কঠোর অবস্থান নেবে। সিএস রেকর্ড অনুযায়ী বনের সম্পূর্ণ ভূমি উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে হবে। আইনের বরখেলাপ করে নির্মিত সব ইটভাটা ও করাতকল ধ্বংস করতে হবে। বৃক্ষ নিধন বন্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন