English

23 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
- Advertisement -

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ: প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশগুলো বিবেচনায় নিন

- Advertisements -

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে ঝড়ঝঞ্ঝা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা। পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। বেশি করে গলছে মেরু অঞ্চলের বরফ। এতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে আর ডুবে যাচ্ছে বহু দেশের উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, ২০৫০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা দেড় ফুটেরও বেশি বাড়তে পারে এবং তাতে বাংলাদেশও ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারে। এ অবস্থায় সারা পৃথিবী উদ্বিগ্ন। প্রতিকারের উপায় খুঁজতে বিশ্বনেতারা প্রায়ই মিলিত হচ্ছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন যৌথভাবে গত সোমবার নিউ ইয়র্কে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকের আয়োজন করেন। এতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেক বিশ্বনেতা যোগদান করেন। এতে তিনি ‘সার্বিক বৈশ্বিক’ উদ্যোগের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন উপলক্ষে বর্তমানে তিনি নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন এবং আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর তিনি সেই অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বিশ্বনেতাদের বিবেচনার জন্য ছয়টি সুপারিশ তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে—বৈশ্বিক তাপমাত্রার বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে প্যারিস চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন, উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জলবায়ু তহবিলে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদান নিশ্চিত করা, তহবিলের অর্থ অভিযোজন ও প্রশমনের ক্ষেত্রে ৫০ঃ৫০ অনুপাতে ব্যবহার, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সবুজ প্রযুক্তি হস্তান্তর, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সহযোগিতা সম্প্রসারণ এবং জলবায়ু উদ্বাস্তু সমস্যা মোকাবেলা। ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এবং ভি২০-এর চেয়ার হিসেবে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত হিসেবে ক্রমবর্ধমান প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সিভিএফ দেশগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে উন্নত দেশগুলোর নানা প্রকার সহযোগিতা প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত ‘জলবায়ু ও জ্বালানি বিষয়ে বড় অর্থনীতিগুলোর ফোরাম’ শীর্ষক সম্মেলনে আগে ধারণ করা ভাষণে অনুরূপ সুপারিশ রেখেছিলেন।

বিশ্বের বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডসহ গ্রিনহাউসগুলো দ্রুত বেড়ে যাচ্ছে। এতে পৃথিবী বেশি পরিমাণে তাপ ধরে রাখছে এবং তাপমাত্রা দ্রুত বাড়ছে। এ জন্য প্যারিস চুক্তিতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর কথা বলা হয়েছে। অথচ সাম্প্রতিক এক হিসাবে দেখা যায়, ২০১৮ সালে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে।

আর এই কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন সবচেয়ে বেশি হয় উন্নত দেশগুলো থেকেই। এই ধ্বংসাত্মক প্রবণতা রোধ করা না গেলে মানবজাতির অস্তিত্ব সংকটের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। জলবায়ু তহবিলে অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতিও রক্ষিত হচ্ছে না বললেই চলে। এ অবস্থায় পৃথিবী নামক গ্রহটিকে মনুষ্য বসবাসের উপযোগী রাখতে বিশ্বনেতৃত্বকে একযোগে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই। আমরা আশা করি, বিশ্বনেতারা তেমন বিচক্ষণতারই পরিচয় দেবেন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ছয় দফা সুপারিশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন