English

32 C
Dhaka
শনিবার, মে ৪, ২০২৪
- Advertisement -

দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিন

- Advertisements -
বায়ুদূষণের দিক থেকে সারা বিশ্বের রাজধানী শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার অবস্থান এক নম্বরে। ফলে এখানকার মানুষ প্রতি মুহূর্তে নিঃশ্বাসে বিষ টানছে। শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। শুধু শ্বাসতন্ত্রের রোগ নয়, বায়ুদূষণের কারণে ক্যান্সার, হৃদরোগসহ আরো অনেক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।অথচ বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেই বললেই চলে। তার ফল হচ্ছে উত্তরোত্তর দূষণ বৃদ্ধি। এরই মধ্যে একটি গবেষণায় উঠে এসেছে গত এপ্রিল মাসে ঢাকার বায়ুদূষণ রেকর্ড করেছে। আগের সাত বছরের এপ্রিল মাসের গড় বায়ুদূষণের তুলনায় গত এপ্রিলে দূষণের মাত্রা বেড়েছে ২৬.৯৩ শতাংশ। এই এপ্রিলসহ গত আট বছরের কোনো এপ্রিলেই ঢাকার মানুষ এক দিনের জন্যও বিশুদ্ধ বাতাস পায়নি।

পরিবেশদূষণের কারণে বিশ্বে প্রতিবছর ৯০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু হয়। এর মধ্যে শুধু বায়ুদূষণের কারণে ২০১৯ সালে মারা গেছে ৬৭ লাখ মানুষ। সর্বাধিক দূষিত বায়ুর দেশ হিসেবে স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশে মৃত্যুর হারও বেশি। বেশি অসুস্থতার হারও।

গত জানুয়ারিতে ল্যানসেট প্লানেট হেলথ সাময়িকীতে প্রকাশিত ‘গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ, ইনজুরি অ্যান্ড রিস্ক ফ্যাক্টরস স্টাডি ২০১৯’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, একই সময়ে পানিদূষণের কারণে ১৪ লাখ এবং রাসায়নিক দূষণের কারণে ৯ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বলা বাহুল্য, সেসব দূষণেও বাংলাদেশ অগ্রগামী।

আমাদের শিল্পাঞ্চলগুলোর পাশে থাকা নদ-নদীর পানিই তার প্রমাণ দেয়। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বায়ুদূষণসংক্রান্ত একটি গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়। গবেষণাটি পরিচালনা করে ঢাকায় অবস্থিত স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। তাতেই উঠে আসে গত মাসে ঢাকার এমন অস্বাস্থ্যকর বায়ুদূষণের চিত্র।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী বায়ুমান সূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) ৫০-এর নিচে থাকলে তাকে ভালো বা বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১  থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তাকে সহনীয় বা গ্রহণযোগ্য অবস্থা বলে বিবেচনা করা হয়। সূচক ১০১  থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর ধরা হয়।

১৫১  থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১  থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়। অথচ শুষ্ক মৌসুমে ঢাকার বাতাস প্রায়ই দুর্যোগপূর্ণ পর্যায়ে থাকে।

দেশে বায়ুদূষণের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে পুরনো পদ্ধতির ইটভাটা, ফিটনেসহীন অতি পুরনো যানবাহন, নিয়ম না মেনে চলা নির্মাণকাজ, ঢাকনা ছাড়া মাটি-বালু পরিবহন, সারা বছর সরকারের বিভিন্ন সংস্থার খোঁড়াখুঁড়ি এবং সেগুলো খোলামেলা অবস্থায় ফেলে রাখা, কলকারখানার দূষণ, আবর্জনা পোড়ানো ইত্যাদি। জনস্বাস্থ্যের ওপর বায়ুদূষণের অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত বায়ুদূষণের উৎস নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। আমরা আশা করি সরকার এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন