English

31 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
- Advertisement -

নদী দখল থেমে নেই: উদ্ধারে কার্যকর ব্যবস্থা নিন

- Advertisements -

নদীখেকোরা শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশেই তৎপর। ছোট অনেক নদী খাওয়ার পর এবার তারা হাত দিয়েছে বাংলাদেশের প্রধান নদীগুলোর ওপরও। অবৈধ দখল উচ্ছেদের জন্য বছরব্যাপী ব্যাপক কার্যক্রম ঘোষণার মধ্যেও দখল হয়েছে নদ-নদী। এমনকি রাজধানী ঢাকা ঘিরে থাকা বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদ দীর্ঘদিন ধরে দখল-দূষণে জর্জরিত।

সেই নদীগুলো আজ মৃতপ্রায়, অর্ধেকেরও বেশি খালের চিহ্ন পর্যন্ত মুছে গেছে। অথচ শুধু নদীকে কেন্দ্র করে ঢাকা হতে পারত পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর এবং বসবাসযোগ্য শহর। পৃথিবীতে খুব কম শহরই আছে, যার চারপাশে এমন নদী রয়েছে কিংবা ভেতরে রয়েছে প্রায় অর্ধশত খাল। শীতলক্ষ্যা, বুড়িগঙ্গা, বালু ও তুরাগ—এসব নদী রক্ষায় ২০০৯ সালে হাইকোর্ট থেকে ১২ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তাতে সিএস মানচিত্র অনুযায়ী স্থায়ীভাবে নদীগুলোর সীমানা নির্ধারণ, নদীর পার দিয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ, প্রচুর বৃক্ষ রোপণ, নদীর মধ্যে থাকা সব ধরনের স্থাপনা উচ্ছেদ, খননের মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে আনাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি।

অভিযোগ আছে, অবৈধ উচ্ছেদসংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর গড়িমসি ও দায়িত্বহীনতার কারণে উচ্ছেদ অভিযান জোরদার হয়নি। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে উদ্ধৃত করে গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, কার্যত নদী দখল যতটা হয়েছে, উদ্ধার হয়েছে তার চেয়ে কম। নদী রক্ষা কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে নদী দখলদারের সংখ্যা আট হাজার ৮৯০; উচ্ছেদ করা হয় এক হাজার ৪৫২ জনের পাঁচ হাজার ৯৩৫টি স্থাপনা।

ঢাকা জেলায় বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা, ইছামতী, বালু, বংশী, গাজীখালী, কালীগঙ্গাসহ মোট ১১টি নদ-নদী ও ২০১টি খালের উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে। ঢাকা জেলায় নদী দখলদারের সংখ্যা ছয় হাজার ৭৫৮; উচ্ছেদ করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৭৯৯ জনের স্থাপনা। নারায়ণগঞ্জে নদী ও খাল দখলদারের সংখ্যা ৭৮৫। মানিকগঞ্জে নদী দখলদারের সংখ্যা এক হাজার ৩৯৯। ফরিদপুরে  নদী ও খাল দখলদারের সংখ্যা এক হাজার ৮৩৪। টাঙ্গাইলে নদী দখলদারের সংখ্যা এক হাজার ৭৮৮। এভাবে চলতে থাকলে আগামী দু-এক বছরের মধ্যেই আরো অনেক নদী অস্তিত্ব হারাবে।

নদ-নদী রক্ষায় হাইকোর্টের সুনির্দিষ্ট আদেশ রয়েছে। যেখানে সংশ্লিষ্ট আইনের ধারা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, নদীর জমি কোনো ব্যক্তি/গোষ্ঠী/প্রতিষ্ঠানের নামে মালিকানা থাকলে তা বাতিল করার ক্ষমতা রয়েছে জেলা প্রশাসকের। একইভাবে জমি কোনো ব্যক্তি/গোষ্ঠী/প্রতিষ্ঠানের নামে রেকর্ড হয়ে থাকলেও তা বাতিল ও সংশোধন করার ক্ষমতাও রয়েছে।

কিন্তু জেলা প্রশাসন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা নদীর ভূমির অবৈধ ইজারা বা বর্গা (সাব-লিজ) বাতিল করেনি। জরিপ রেকর্ডে কালেক্টর বা ভূমি কার্যালয়ে ইচ্ছাকৃত বিচ্যুতি ও প্রতারণামূলক ত্রুটি ধরা পড়লেও তা সংশোধনের কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। এটা কি প্রশাসনের নির্লিপ্ততা? নাকি শুধুই নির্লিপ্ততা নয়, ক্ষেত্রবিশেষে তারা দখলদারদের সহযোগিতা করছে?

অবিলম্বে দেশের সব নদ-নদী দখলমুক্ত হবে, এটাই  আমাদের প্রত্যাশা।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন