দেশের হাসপাতালগুলোতে মানসম্মত চিকিৎসাসেবার উপযোগী সুযোগ-সুবিধার অনেক ঘাটতি রয়েছে। অনেক হাসপাতালে ওষুধ পাওয়া যায় না। অ্যাম্বুল্যান্স নেই। এক্স-রে মেশিন কিংবা অতি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও থাকে না অনেক হাসপাতালে। আবার অনেক সময় যন্ত্রপাতি থাকলেও অচল হয়ে পড়ে থাকে। দীর্ঘ সময় ধরে মেরামতের জন্য চিঠি চালাচালি চলতে থাকে। আবার বিশেষ সমঝোতায় পাশের ক্লিনিকগুলোর যন্ত্রপাতি সচল রাখতে হাসপাতালের যন্ত্রপাতি অচল করে রাখা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। অনেক হাসপাতালে সাধারণ প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার কাজটিও যথাযথভাবে সম্পন্ন হয় না। ফলে দরিদ্র রোগীদের নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
আবার বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকের চিকিৎসাসেবা নিয়েও মানুষের অভিযোগ আছে। অস্বাভাবিক ফি আদায়, অপ্রয়োজনীয়ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে ব্যয় বৃদ্ধি, অদক্ষ-অনভিজ্ঞ চিকিৎসকদের নামের আগে নানা ধরনের বিশেষজ্ঞ খেতাব বসিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা, পাস করা নার্সের বদলে আনাড়িদের দিয়ে সেবিকার দায়িত্ব পালন করা, প্রায়ই রোগীদের ভুল ওষুধ সেবন করানো, ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু—এমন অনেক অভিযোগ রয়েছে ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে।
জরিপের প্রতিবেদন সিটি করপোরেশনের মেয়র ও স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে সেবাকেন্দ্রগুলোর যেসব সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে—সেবার মান যথাযথ নয়, সেবা ব্যয়বহুল, বিভিন্ন টিকা বিনা মূল্যে পাওয়া যায় না, সেবাদানকারীরা মনোযোগী নয়, গর্ভবতী নারীদের প্রতিষেধক টিকা বেশি দামে কিনতে হয়, লাল কার্ড দেওয়ার জন্য টাকা নেওয়া হয়, স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহার খারাপ, জরুরি রোগী দেখতে ডাক্তাররা মনোযোগী নন, বস্তিবাসী অবজ্ঞার শিকার, পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা চিকিৎসক নেই এবং আরবান ক্লিনিকের সেবা সম্পর্কে এলাকায় প্রচার কম।
অন্যদিকে গত বছর খুলনায় অভিযান চালিয়ে প্রশাসন মহানগরীতে লাইসেন্সবিহীন ৩৯টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছিল।
উপজেলা পর্যায়ে একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সব প্রতিষ্ঠান আবারও তাদের ব্যবসা শুরু করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব ক্লিনিক কি যথাযথ ছাড়পত্র নিয়ে চালু হচ্ছে?