English

32 C
Dhaka
শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
- Advertisement -

মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিন: অতি তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে দেশ

- Advertisements -
দেশের একটি বড় অংশজুড়েই চলছে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ। কোথাও কোথাও চলছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ অর্থাৎ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, হিট স্ট্রোকে অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। সব খবর গণমাধ্যমে আসেও না।
পরিস্থিতি যে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। হাসপাতালগুলোতে রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে না। প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ধারণক্ষমতার তিন গুণ বেশি রোগী রয়েছে। মেঝেতে রেখে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
সেবাদাতাদের হিমশিম অবস্থা। দেশের অন্যান্য হাসপাতালেও প্রায় একই অবস্থা। এই অবস্থায় আবহাওয়া বিভাগ এবং আবহাওয়াসংক্রান্ত অন্যান্য সূত্র থেকে জানা যায়, চলতি মাসের বাকি সময়ও তাপমাত্রার প্রায় একই অবস্থা থাকতে পারে। মে মাসেরও অনেকটা সময় ধরে চলতে পারে তাপপ্রবাহ। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও প্রস্তুতি নিতে হবে।
তাপপ্রবাহে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে নিম্ন আয়ের মানুষ, যাদের প্রচণ্ড রোদের মধ্যে কাজ করতে হয়। তাদের মধ্যে আছে রিকশা, ভ্যান, ঠেলাগাড়ির চালক, দিনমজুর, ফেরিওয়ালা, ইটভাঙা শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। দেশে এখন বোরো ধান কাটার মৌসুম চলছে। হাওরে কিংবা বড় বড় মাঠে কৃষি শ্রমিকদের কাজ করতে হয়।
কাছাকাছি কোনো গাছের ছায়াও থাকে না। এসব মানুষের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন। মাথাল, ক্যাপ ইত্যাদি সরবরাহ করা যেতে পারে। নিয়োগকর্তারা যাতে মধ্যদুপুরে অন্তত দু-তিন ঘণ্টা বিশ্রাম দেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।নিয়োগকর্তারা যাতে কর্মক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করেন কিংবা প্রয়োজন অনুযায়ী খাওয়ার স্যালাইন সরবরাহ করেন, তা দেখতে হবে। এ সময় ঢাকা মহানগরীসহ বড় শহরগুলোতে পথে পথে প্রচুর শরবতের দোকান দেখা যায়। বেশির ভাগ দোকানেই শরবতের জন্য যে পানি ব্যবহার করা হয়, সেগুলো বিশুদ্ধ হয় না।

এ ছাড়া পথের পাশের খাবারের দোকানে যে পানি পাওয়া যায়, সেগুলোও খুব একটা বিশুদ্ধ হয় না। অথচ প্রচণ্ড তৃষ্ণা নিয়ে মানুষ সেই পানিই পান করে। এর ফলে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পেটের পীড়া মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়ে।

বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নিতে হবে। একটানা বেশিক্ষণ রোদে থাকলে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ারও আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সচেতনতা সৃষ্টি এবং পরামর্শের ব্যবস্থা করাও জরুরি।

এমন গরম বা তাপপ্রবাহে শিশু ও বৃদ্ধরা অনেক ঝুঁকিতে থাকেন। এ ছাড়া যাদের দীর্ঘমেয়াদি অসুখ, যেমন—হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, ক্যান্সারের মতো রোগ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

এ সময়ে ডায়রিয়া, জ্বর, টাইফয়েড, জন্ডিস, হাঁপানির মতো রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়।

তাই হাসপাতালে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায়, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন দেশের সরকারি হাসপাতালের পরিচালক ও সিভিল সার্জনদের সঙ্গে ভার্চুয়াল সভায় হাসপাতালগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেন। আমরা আশা করি, সে নির্দেশ যথাযথভাবে পালিত হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়া ক্রমেই চরমভাবাপন্ন হচ্ছে। ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, অতিবৃষ্টি, বন্যা, ঠাণ্ডা, গরম—সবই অস্বাভাবিক রূপে আঘাত হানছে এবং হানতে থাকবে। সেই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য আমাদেরও সব রকম প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন