আবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়াল সরকার। সরকার বলছে, এ খাতের বিপুল ভর্তুকি কমাতে তার হাতে এর বিকল্প ছিল না। জ্বালানি তেলের এই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব যে জনজীবনে পড়বে, তা বলাই বাহুল্য। মূল্যবৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।
সরকার নির্বাহী আদেশে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিন ৮০ টাকা থেকে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অকটেন লিটারে ৮৯ টাকা থেকে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা এবং পেট্রল ৮৬ টাকা থেকে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন এ দর গত শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে কার্যকর হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ পেতে কাজ শুরু করেছে সরকার। আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল গত মাসে ঢাকা সফর করে গেছে। প্রতিনিধিদল দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের ভর্তুকির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে ভর্তুকি কমিয়ে আনতে পরামর্শ দিয়েছিল বলে জানা যায়।
ধারণা করা হচ্ছে, আইএমএফের পরামর্শে ভর্তুকি কমিয়ে আনতে এরই মধ্যে ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ছয় টাকা বাড়ানো হয়েছে। শুক্রবার রাতে বাড়ানো হয়েছে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম। জানা গেছে, বিদ্যুতের দাম ‘যৌক্তিক পর্যায়ে’ আনার কাজ চলছে। এর অর্থ হচ্ছে, বিদ্যুতের দামও শিগগিরই বাড়ানো হতে পারে।
জ্বালানি তেলের দাম এর আগেও অনেকবার বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এবার যে হারে বাড়ানো হলো, তা অতীতে কখনো হয়নি। অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন, এটা ধাপে ধাপে করলে ভালো হতো। এখন এটা সরকারের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এই মূল্যবৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে।
একটি জনকল্যাণকর সরকারের সব সিদ্ধান্ত জনসাধারণের পক্ষে যাবে—এটাই কাঙ্ক্ষিত।
কিন্তু জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তে বেড়ে যাবে জীবনযাত্রার ব্যয়, বাড়বে মূল্যস্ফীতি। এখন এই জায়গায় সরকারকে কাজ করতে হবে। কারণ যেকোনো সরকারই শেষ পর্যন্ত জনগণের কাছে দায়বদ্ধ।