শুধু গ্যাসজনিত অগ্নিদুর্ঘটনা নয়, অন্যান্য অগ্নিদুর্ঘটনার সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ২০২২ সালে মোট ৮৩ হাজার ২৪৫ জন দগ্ধ রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এ সময়ে এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৯৮৪ জন। বার্ন ইনস্টিটিউট ছাড়া দেশের অন্যান্য হাসপাতালেও অনেক রোগীর চিকিৎসা হয়।
মৃত্যুও হয় অনেক রোগীর। দগ্ধ রোগীদের মধ্যে গ্যাসজনিত অগ্নিদুর্ঘটনার শিকার রোগী যেমন আছে, তেমনি আছে রান্না করার সময় আগুন লাগা, শীতে আগুন পোহানোর সময় দগ্ধ হওয়া, গরম পানি বহনের সময় দুর্ঘটনা, বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হওয়া ইত্যাদি। একেক সময় রোগী এত বেশি বেড়ে যায় যে বার্ন ইনস্টিটিউটে তাদের স্থান সংকুলান হয় না।
এ অবস্থায় সরকার আরো পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রতিটিতে ১০০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করেছে। কিন্তু দুর্ঘটনার সংখ্যা যদি না কমে, তাহলে শুধু হাসপাতালের শয্যা বাড়িয়ে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে কি?
বিস্ফোরক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, গ্যাসলাইনে যুক্ত হোজপাইপ, রেগুলেটর, গ্যাস ভালভ ইত্যাদি সঠিকভাবে লাগানো না হলে ফাঁকফোকর গলিয়ে গ্যাস বেরিয়ে আসতে পারে। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ থাকলে বা ভালো ভেন্টিলেশন না থাকলে ঘরেই গ্যাস জমা হতে থাকে। এ সময় ঘরে আগুন জ্বালালে বা স্পার্ক হলেও বিকট শব্দে সারা ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে।
গ্যাস সিলিন্ডার, রেগুলেটর ও পাইপের মেয়াদ দেখে অনুমোদিত বিক্রেতাদের কাছ থেকে সেগুলো কিনে অভিজ্ঞ কারিগর দিয়ে চুলায় গ্যাসের সংযোগ দেওয়া উচিত। অধিদপ্তরের বিধিমালায়ও বেশ কিছু সতর্কতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা কয়জন সেসব জানি বা মেনে চলি?
গ্যাসের ব্যবহারে আমরা যদি সচেতন না হই, তাহলে এমন যন্ত্রণাময় মৃত্যুর হাত থেকে আমরা রক্ষা পাব না। নিজের ও পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে না। এ জন্য নিয়মিত গ্যাসের সংযোগ পরীক্ষা করাতে হবে।
ঘরের বায়ু চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে। আরো যেসব সতর্কতামূলক পদক্ষেপের কথা বলা হয়, সেগুলো মেনে চলতে হবে। মানুষকে সচেতন করার উদ্যোগ নিতে হবে।