দেশের সাত বিমানবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের সংবাদ ইতিবাচক। জানা যায়, এসব বিমানবন্দরের উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় ৩৫ হাজার ৮৫০ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, যা আগামী বছরের শেষ নাগাদ সমাপ্ত হবে। এর মধ্যে এভিয়েশন খাতের মেগা প্রকল্প হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের অপারেশনাল কার্যক্রম উদ্বোধন হবে ২০২৩ সালের অক্টোবরে। এটির কার্যক্রম শুরু হলে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত শাহজালালের যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের চাহিদা পূরণ হবে।
উল্লেখ্য, ২৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। এর বাইরে চট্টগ্রামে শাহ আমানত বিমানবন্দরের বিদ্যমান রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ের শক্তি বৃদ্ধীকরণ ও বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ফুল লোডেড বোয়িং ৭৭৭ বিমান রানওয়েতে উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারবে। সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরের বিদ্যমান রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ের শক্তি বৃদ্ধীকরণ প্রকল্পের ৯৯ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে। এটি বাস্তবায়ন হলে এখানে পুরোদমে বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজ অবতরণ করতে পারবে। একই সঙ্গে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, সৈয়দপুর বিমানবন্দরের অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিক মানের টার্মিনাল ভবন নির্মাণ, যশোর টার্মিনাল ভবন সম্প্রসারণ ও রাজশাহীর টার্মিনাল ভবন সম্প্রসারণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথে।
এছাড়া ৩৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল বিমানবন্দরের রানওয়ের উন্নয়ন কাজও চলছে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্পে ১৩৬ কোটি টাকার কাজ চলমান। এজন্য মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের ২টি স্থানকে প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা হচ্ছে বিনিয়োগ তথা উন্নয়নের পূর্বশর্ত। এক্ষেত্রে বিমান যোগাযোগ অন্যতম, তা বলাই বাহুল্য। আলোচ্য বিমানবন্দরগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পন্ন হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষের চলাচল ও পণ্য পরিবহণ সহজ হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। উচ্চতর প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার পূর্বশর্ত হচ্ছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন। দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন যত ঘটবে, প্রবৃদ্ধিও তত বাড়বে।
আশঙ্কার বিষয় হলো, দেশের অবকাঠামোগত উন্নযন এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছেনি। এ অবস্থায় শুধু বিমানবন্দর নয়; সড়ক, রেল ও সমুদ্রবন্দরসহ অন্যান্য অবকাঠামো উন্নয়নের প্রতিও সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত। পঞ্চাশের দশকে মাথাপিছু গড় আয়ের দিক থেকে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, কোরিয়া ও তাইওয়ানের তুলনায় বাংলাদেশ খুব একটা পিছিয়ে ছিল না। কিন্তু এসব দেশ বর্তমানে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তথা অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটিয়ে প্রভূত উন্নয়ন করেছে। এক্ষেত্রে দেশের সাত বিমানবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের সংবাদ আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য।