English

34.4 C
Dhaka
বুধবার, জুলাই ২৩, ২০২৫
- Advertisement -

খালের সংযোগ নিশ্চিত করুন: ১৮ কোটি টাকাই কি গচ্চা!

- Advertisements -

সারা দেশেই নদী-খালের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। ক্রমাগতভাবে দখল, দূষণ ও ভরাটের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে থাকা খালগুলো দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। এসব খাল উদ্ধারে উচ্চ আদালতের নির্দেশও যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না।

সরকার খাল উদ্ধারে কিছু পদক্ষেপ নিলেও তার ধীরগতি, নিয়মিত তদারকির অভাব, অব্যবস্থাপনা এবং খালের নাব্যতা রক্ষার নিয়মিত উদ্যোগ না থাকায় সেসব পদক্ষেপও খুব একটা কাজে আসছে না। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, মানিকগঞ্জ শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হলেও খালে পানির প্রবাহ নেই। জানা যায়, কালীগঙ্গা নদীর সঙ্গে যুক্ত উৎসমুখটি না কাটায় খালে পানির প্রবাহ আসছে না। অন্যদিকে কালীগঙ্গা নদীতেও চর পড়েছে এবং খালে পানি প্রবেশ ক্রমেই বেশি করে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, তিন দশক আগেও খালটিতে অন্তত ছয় মাস নদীর পানির প্রবাহ থাকত। সে সময় বড় বড় নৌকা চলাচল করত। নদীতে চর পড়ে নাব্যতা কমে যাওয়ায় খালটিও দ্রুত ভরাট হতে থাকে। সেই সঙ্গে খালের দুই পাশের শত শত বাড়িঘর থেকে নিয়মিত গৃহস্থালি বর্জ্য, হোটেল-রেস্তোরাঁর বর্জ্য ও অন্যান্য বর্জ্য পড়ে খালটি ভরাট হতে থাকে এবং রীতিমতো ভাগাড়ে পরিণত হয়। এখন বর্ষা মৌসুমে খুব বেশি পানি হলে দুই মাসের মতো সামান্য পরিমাণে পানির প্রবাহ থাকে।

এ অবস্থায় ২০০৭ সালে খালটি খনন ও সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এর আওতায় ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত প্রায় সোয়া ১৮ কোটি টাকা খরচ করা হয়। উৎসমুখ বান্দুটিয়া থেকে বকজুরি পর্যন্ত খনন করা হয়। উত্তর সেওতা থেকে সিদ্দিকনগর পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশে দুই পার বাঁধাই করা হয় সিসি ব্লক দিয়ে। ওয়াকওয়ে ও ইট-সিমেন্টের বসার আসন বানানো হয়। রোপণ করা হয় গাছ। আশা করা গিয়েছিল, সংস্কারের ফলে খালটি তার আগের রূপ ফিরে পাবে।

কিন্তু খালে পানির প্রবাহ না থাকায় সেই আশায় গুড়ে বালি। বিশেষজ্ঞরা এ জন্য দুষছেন সঠিক পরিকল্পনার অভাবকে। তাঁদের মতে, উৎসমুখ খনন করে দ্রুত পানির প্রবাহ না আনা গেলে এই খনন ও সংস্কার হবে অর্থহীন। খালটিতে পানির প্রবাহ না থাকলে শিগগিরই আবার তা ভরাট হয়ে যাবে। ১৮ কোটি টাকার পুরোটাই গচ্চা যাবে।

সারা দেশে, বিশেষ করে শহরাঞ্চল ও তার আশপাশের নদী ও খাল উদ্ধারে একটি মহাপরিকল্পনা নিয়ে কাজে নামতে হবে। বিচ্ছিন্ন কিছু উদ্যোগ এ ক্ষেত্রে খুব একটা কাজে আসবে না। নদী ও খালে গৃহস্থালি বর্জ্যসহ নানা ধরনের আবর্জনা ফেলে খাল ভরাটের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। সংস্কার করা খালটির নিয়মিত পরিচর্যার দায়িত্ব নিতে হবে মানিকগঞ্জ পৌরসভাকে। আগামী বর্ষার আগেই কালীগঙ্গা নদীর উৎসমুখে খালের সংযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/ehpx
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন