English

31 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
- Advertisement -

আব্দুর রহমান বয়াতী’র আজ সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

লোকসঙ্গীত শিল্পী ও সুরকার আব্দুর রহমান বয়াতী’র আজ সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ আগস্ট, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। প্রয়াত এই গুণি শিল্পীর স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
আবদুর রহমান বয়াতী ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের ১ জানুয়ারি, পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থানার দয়াগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন । বাবার নাম তোতা মিয়া। দয়াগঞ্জ বাজারে তার বাবার একটি হোটেল ছিল । সেখানে মাঝে মধ্যেই আসতেন কিছু বাউল শিল্পী। তাঁরা গানের আসর বসাতেন । সেখান থেকেই ধীরে ধীরে তাঁর ভেতর সঙ্গীতের প্রতি আকর্ষন বারে । ছোটবেলা থেকেই বাউল পছন্দ করতেন। যেখানে বাউল গানের আসর বসত সেখানেই ছুটে যেতেন।
আলাউদ্দিন বয়াতী, মারফত আলী বয়াতী, হালিম বয়াতী, দলিল উদ্দিন বয়াতীসহ বিখ্যাতসব বাউলশিল্পীদের গান শুনে শুনে, নিজের ভিতরে বাউলশিল্পী হওয়ার তাগিদ অনুভব করেন। শুনা গানগুলো নিজে নিজে গাওযার চেষ্টা করতেন।
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে, সেই
কৈশর বয়সেই সুরের টানে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পরেন। গানের গুরু হিসেবে বেছে নেন বিখ্যাত বাউলশিল্পী আলাউদ্দিন বয়াতিকে। এরপর থেকে বাউলগানকেই জীবনের পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করেন।
তিনি ছিলেন মূলত বাউলশিল্পী। ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে ‘আবদুর রহমান বয়াতি’ নামে একটি বাউল দল গড়ে তোলেন । এই বাউল দল বায়না নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে গান পরিবেশন করতেন। আবদুর রহমান বয়াতী দোতারা, হারমোনিয়াম, খঞ্জনি ও ভায়োলিন বাজাতেন পারতেন।
দেশের বিভিন্ন অডিও প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় পাঁচশত একক গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে, আবদুর রহমান বয়াতীর। এছাড়া বিভিন্ন শিল্পীর সাথে তিনি গান গেয়েছেন এমন মিশ্র অ্যালবামেও বের হয়েছে ।
তিনি চলচ্চিত্রের গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন । বেশ কিছু চলচ্চিত্র, নাটক ও প্রামাণ্যচিত্রে কণ্ঠ দেয়ার পাশাপাশা অভিনয় করেছেন আবদুর রহমান বয়াতি । কসাই, অসতী, হৃদয় থেকে হৃদয়সহ কয়েকটি চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার পাশাপাশি অভিনয়ও করেছিলেন তিনি ।
টেলিভিশনের সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন চিত্রেও অভিনয় করেছেন কন্ঠশিল্পী হিসেবে। টেলিভিশনেও তিনি ছিলেন বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের বিশেষ গ্রেডের শিল্পী ছিলেন আবদুর রহমান বয়াতি।
তাঁর উল্লেখযোগ্য বিখ্যাত গানের মধ্যে রয়েছে- মন আমার দেহঘড়ি সন্ধান করি কোন মিস্তরি বানাইয়াছে…, আমি ভুলি ভুলি মনে করি প্রাণে ধৈর্য্য মানে না…, আমার মাটির ঘরে ইঁদুর ঢুকেছে.., মরণেরই কথা কেন স্মরণ কর না…,মা আমেনার কোলে ফুটল ফুল.., ছেড়ে দে নৌকা মাঝি যাবো মদিনা…, এই পৃথিবী যেমন আছে তেমনি ঠিক রবে.. দিন গেলে আর দিন পাবি না.., এত সুন্দর রঙমহল ঘর ইঁদুর কেটে বিনাশ করতেছে…, হাটের মাঝে ভাঙল হাঁড়ি…, আমি মরলে কেন…, ইত্যাদি।
আবদুর রহমান বয়াতি লোকসঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য স্বীকৃতি স্বরূপ- ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে মরণোত্তর একুশে পদক লাভ করেন।
তিনি আরো যেসব সংস্থা কর্তৃক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন- সিটিসেল চ্যানেল আই অ্যাওয়ার্ড, সোলস অ্যাওওয়ার্ড, টেলিভিশন দর্শক ফোরাম কর্তৃক লাইফ টাইম এ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড, নজরুল একাডেমি সম্মাননা-২০০৪, সমর দাস স্মৃতি সংসদ অ্যাওয়ার্ড, বাংলাদেশ বাউল সমিতি আজীবন সম্মাননা অ্যাওয়ার্ড, লোকজ বাউলমেলা পদক-২০০৪, জাতীয় যুব সাংস্কৃতিক সংস্থার সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি স্বর্ণ পদক ও আজীবন সম্মাননা-২০০৫, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির গুণীজন সংবর্ধনা-২০০৬, মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুর সমিতি আজীবন সম্মাননা অ্যাওয়ার্ড, ওস্তাদ মোমতাজ আলী খান সঙ্গীত একাডেমি সম্মাননা পদক-২০০৬, ইউএসএ জাগরণীশিল্পীগোষ্ঠী অ্যাওয়ার্ড, স্বরবীথি থিয়েটার বাংলা নববর্ষ-১৪১২ উপলক্ষ্যে সংবর্ধনা ও সম্মাননা, কায়কোবাদ সংসদ আজীবন সম্মাননা, স্পেল বাউন্ড বিশেষ সম্মাননা, বাংলাদেশ বাউল সংগঠনের গুণীজন সম্মাননা পদক, বিক্রমপুর সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী পদক, সিটি কালচারাল সেন্টার কর্তৃক গুণীজন সম্মাননা পদক, বাউল একাডেমি পদক ও শ্রেষ্ঠ বাউলশিল্পী অডিও ক্যাসেট পুরস্কার।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন