English

31 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
- Advertisement -

গুণী অভিনেতা সিরাজুল ইসলাম-এর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

গুণী অভিনেতা সিরাজুল ইসলাম-এর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১৫ সালের ২৪ মার্চ, ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। প্রয়াত এই গুণি অভিনয়শিল্পীর প্রতি বিন্ম্র শ্রদ্ধা। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

সিরাজুল ইসলাম ১৯৩৮ সালের ১৭ মে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলায়, জন্মগ্রহন করেন। তাঁর বাবা আবদুল হক, একজন সরকারি চাকুরিজীবি ছিলেন। মা আরিফান্নেসা। ছোট্টবেলা থেকেই তিনি কবিতা লিখতেন, পাশাপাশি অভিনয়েও ছিল দারুন আগ্রহ। তাঁর স্কুলের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি ও নাটক মঞ্চস্থ হতো। সিরাজুল ইসলাম নাটকে অভিনয় করতেন আর কবিতা আবৃত্তি করাও ছিল তাঁর অত্যাবশ্যকীয়।

তাঁরা ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগের পর স্বপরিবারে ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকায় এসে কিশোরী ‘লাল জুবিলী স্কুলে’ ভর্তি হন। এখান থেকেই তিনি মেট্রিক পাস করেন। এরপর কায়দে আজম কলেজ (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী কলেজ)-এ পড়াশোনা করেন। তিনি পেশায় একজন প্রকৌশলী (ডিপ্লোমা) ছিলেন।

ঢাকায় তিনি প্রথম মঞ্চনাটকে অভিনয় শুরু করেন। মঞ্চনাটক করতে গিয়ে পরিচয় হয় বেতারশিল্পী রণেন কুশারীর সাথে। তিনিই সিরাজুল ইসলামকে বেতারে অভিনয় করার সুযোগ করে দেন। বেতারে ‘রূপালি চাঁদ’ নাটকে একজন স্কুল শিক্ষকের চরিত্রে প্রথম অভিনয় করেন ।
এরপর নিয়মিত মঞ্চে ও বেতারে অভিনয় করতে থাকেন। ‘বৃষ্টি’ নামে একটি বেতার নাটকের প্রযোজনার মাধ্যমে তিনি প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

১৯৬৩ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘রাজা এলো শহরে’ ছবিতে (‘রাজা এলো শহরে’ মুক্তিপায় ১৯৬৪ সালে) অভিনয়ের মাধ্যমে সিরাজুল ইসলাম প্রথমে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। তাঁর অভিনীত মুক্তি প্রাপ্ত প্রথম ছবি, সালাহউদ্দিন পরিচালিত ‘ধারাপাত’ (১৯৬৩)।
তিনি প্রায় তিনশতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে- নাচঘর, দুইদিগন্ত, শীতবিকেল, অনেক দিনের চেনা, বন্ধন, ভাইয়া, রূপবান , উজালা, ১৩নং ফেকুওস্তাগার লেন , হীরামন, উলঝন, নয়নতারা, আলীবাবা, চাওয়া পাওয়া, গাজীকালু চম্পাবতী, জিনা ভি মুশকিল, কাঞ্চনমালা, বালা, নিশি হলো ভোর, ভাগ্যচক্র, সপ্তডিংগা, জাহা বাজে শাহ নাই, মোমের আলো, ময়নামতি, অবাঞ্চিত, হীরামন, অপরাজেয়, আলোর পিপাসা, আলোমতি, মায়ার সংসার, ভানুমতী, যে আগুনে পূড়ি, দর্পচূর্ণ, মিশরকুমারী, বিনিময়, ছদ্মবেশী, স্বরলিপি, নতুন প্রভাত, ঢেউয়ের পর ঢেউ, সমাধান, নিজেরে হারায়ে খুঁজি, ইয়ে করে বিয়ে, কে তুমি, তিতাস একটি নদীর নাম, সূর্যকন্যা, ডুমুরের ফুল, নতুন বউ, চন্দ্রনাথ, রাজামিস্ত্রী, লাল বেনারশী, রাঙা ভাবী, অবুঝ হৃদয়, অজান্তে, আনন্দ অশ্রু, অন্যতম ।

১৯৮৪ সালে চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘চন্দ্রনাথ’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য পার্শ্বচরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

সিরাজুল ইসলাম দু’টি ছবি পরিচালনাও করেন। তাঁর পরিচালিত ছবি- জননী এবং সোনার হরিণ। এছাড়াও তিনি ২৫টির মতো প্রামান্যচিত্র নির্মাণ করেছেন।

এক সময় করাচির ‘ইস্টার্ন ফিল্মস’ পত্রিকায় ঢাকাস্থ চলচ্চিত্র প্রতিবেদক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।

চলচ্চিত্র ছাড়াও তিনি একাধারে মঞ্চ-বেতার এবং টেলিভিশনের জনপ্রিয় নাট্যশিল্পী ছিলেন। অসংখ্য টিভি নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন। নাট্যশিল্পী হিসেবেও পেয়েছেন জনপ্রিয়তা। হয়েছেন প্রসংশিত ।
ব্যক্তিজীবনে সিরাজুল ইসলাম ১৯৬৫ সালে, অভিনেতা আবুল হায়াতের ফুফাতো বোন সৈয়দা মারুফা ইসলামকে বিয়ে করেন। তাদের এক ছেলে মোবাশ্বেরুল ইসলাম শাহী এবং দুই মেয়ে ফাহমিদা ইসলাম ও নাহিদা ইসলাম।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনের মানুষের কাছে, খুব ভালো মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন সিরাজুল ইসলাম। ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা পেয়েছেন সবার কাছ থেকে। আর নিজের অভিনয় প্রতিভা দিয়ে মন জয় করেছেন, সিনেমা দর্শকদের। নানান ধরণের চরিত্রে সহজ-সাবলীল অভিনয় করে হয়েছেন জনপ্রিয়। পেয়েছেন সিনেমা দর্শকদের ভালোবাসা। মানুষের এই ভালোবাসাই অভিনয়শিল্পী সিরাজুল ইসলামকে, বাচিঁয়ে রাখবে যুগ-যুগ ধরে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন