English

27 C
Dhaka
বুধবার, মে ৮, ২০২৪
- Advertisement -

চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আমিনুল হক এর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

এ কে আজাদ: আমিনুল হক (নায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রে নাম ছিল আমিন)। আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের প্রথম রোমান্টিক নায়ক। এদেশের চলচ্চিত্রের ভিত মজবুত হয়েছে যাঁদের পদচারণায়, তাদের মধ্যে অন্যতম একজন তিনি। যাঁদের প্রচেষ্টায়, যাঁদের অভিনয় প্রতিভায়, শুরুর দিকে আমাদের চলচ্চিত্রশিল্প সমৃদ্ধ হয়েছে তিনি ছিলেন তাদেরই অন্যতম একজন।

নিজের বর্ণাঢ্য অভিনয়জীবনে, বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পে অনন্য অবদান রেখে যাওয়া চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আমিনুল হক এর মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১১ সালের ৩১ জুলাই, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। প্রয়াত গুণি এই অভিনেতার স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

আমিনুল হক (নায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রে নাম ছিল আমিন) ১৯২১ সালের ১ জুলাই, অবিভক্ত বাংলার রাজশাহী বিভাগের মালদহ (বর্তমান মালদা জেলা,পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)-এ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম জব্দুল হক, পেশায় ছিলেন উকিল, মায়ের নাম গুলফেরনেসা।

Advertisements

তিন ভাই, তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। মালদাহ জেলা স্কুল ও কলেজ থেকে মেট্রিক এবং আই এ পাস করেন আমিনুল হক।

১৯৪৪ সালে কলকাতায় ‘শ্রী রঙ্গণ থিয়েটার’-এ তাঁর অভিনয় জীবন শুরু হয়। সেখানে শিশির কুমার ভাদুড়ীর নির্দেশনায় মঞ্চনাটকে প্রথম অভিনয় করেন আমিনুল হক। কলকাতা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব-এ প্রথম ডিভিশনে ফুটবলও খেলতেন। ফণী বর্মণ পরিচালিত ‘মন্দির’ (১৯৪৭ সাল) নামে কলকাতার একটি চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন । তখন পশ্চিমবঙ্গসহ ঢাকা রেডিওর নাটকেও অভিনয় করতেন তিনি।

১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের সময় ঢাকায় চলে আসেন আমিনুল হক। ঢাকায় এসে রেডিও’তে চাকরি নেন। পাশাপাশি নাটকেও অভিনয় করেন । ১৯৪৮ সালে ঢাকায় নাট্য আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৫০ সালে তিনি গঠন করেন ‘রুপশ্রী’ নাট্যগোষ্ঠি।

১৯৫৬ সালে, আব্দুল জব্বার খান নির্মিত আমাদের দেশের প্রথম বাংলা সবাক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এ একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে পুরোপুরিভাবে চলচ্চিত্রে আসেন আমিনুল হক। এরপরে ফতেহ লোহানীর পরিচালনায় এফডিসিতে নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আকাশ আর মাটি’ ছবিতে প্রথম নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি, ছবিটি মুক্তিপায় ১৯৫৯ সালে।

আরো বেশকয়েকটি ছবিতে নায়কের ভূমিকায় এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন ছবিতে নানা ধরণের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। আমিনুল হক অভিনীত অন্যান্য ছবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- তোমার আমার, জোয়ার এলো, গোধূলীর প্রেম, অপরাজেয়, জয় বাংলা, জানোয়ার, আব কেয়া হোগা (উর্দু-পাকাস্তানি), জীবন সাথি, অচেনা অতিথি, এপার ওপার, নাজমা, দেবর, নসীব, মহানায়ক, সকাল সন্ধ্যা, আগমন, ন্যায়বিচার, উসিলা, চাঁপাডাঙার বউ, দুই জীবন, সন্তান যখন শত্রু, হাজী শরীয়তউল্লাহ, রাবেয়া, প্রভৃতি ।

আমাদের দেশের টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই তিনি অভিনেতা, নাট্যকার এবং নির্দেশক হিসেবে কাজ করেছেন।

Advertisements

১৯৬১ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত আমিনুল হক ‘বুলবুল ললিতকলা একাডেমি’র নাট্য বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশ বিমানে পাবলিক রিলেশান কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। চাকুরীর পাশাপাশি নিয়মিত বেতার-টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে গেছেন।

দীর্ঘ নাট্যজীবনের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৯১ সালে, নাট্যকলা বিভাগে ‘একুশে পদক’ লাভ করেন আমিনুল হক। পেয়েছেন আজীবন সম্মাননা পুরস্কার- চ্যানেল আই চলচ্চিত্র মেলা।

ব্যক্তিজীবনে আমিনুল হক ১৯৫৮ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, ‘মুখ ও মুখোশ’ ছবির অভিনেত্রী পিয়ারি বেগম (নাজমা)-এর সাথে । তাদের একমাত্র ছেলে রবিউল আমিন, বাংশাদেশ বিমানে principal engineer হিসাবে কর্মরত আছেন।

আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের প্রথম দিকের নায়কদের মধ্যে অন্যতম একজন আমিনুল হক। আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের ভিত মজবুত হয়েছে যাঁদের বদান্যতায়, তাদের মধ্যে অন্যতম একজন তিনি। যাঁদের প্রচেষ্টায়, যাঁদের অভিনয় প্রতিভায়, শুরুর দিকে আমাদের চলচ্চিত্রশিল্প সমৃদ্ধ হয়েছে তিনি তাদেরই একজন। বর্ণাঢ্য অভিনয়জীবনের অধিকারী আমিনুল হক, বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পে রেখে গেছেন অনন্য অবদান।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন