English

31 C
Dhaka
মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
- Advertisement -

কিংবদন্তী চলচ্চিত্র সম্পাদক ও পরিচালক বশীর হোসেন এর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

কিংবদন্তী চলচ্চিত্র সম্পাদক ও পরিচালক বশীর হোসেন-এর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৭৮ সালের ২৩ এপ্রিল, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৪ বছর। গুণী এই চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বের প্রতি বিন্ম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

বশীর হোসেন (মোহাম্মাদ বশীর হোসেন) ১৯৩৪ সালের ২২ নভেম্বর, কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার উপজেলায়, জন্মগ্রহণ করেন। । লেখাপড়া শেষ করে ১৯৫৫ সালে তিনি ঢাকায় আসেন। ঢাকায় এসে তেজগাও পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট-এ এক বছরের ইলেকট্রিক কোর্স সম্পন্ন করেন এবং চাকুরী নেন রেলওয়েতে। এখানে তাঁর ভালো না লাগায়, রেলওয়ের চাকরী ছেড়ে দিয়ে নতুন জীবিকা খুঁজতে থাকেন। এ অবস্থায় তাঁর এক বন্ধুর পরামর্শে এফডিসির তৎকালিন অপারেটিভ ডিরেক্টর নাজির আহমেদের সহায়তায় তিনি যোগদেন তৎকালীন, বিজি প্রেসে অবস্থিত চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের, ইলেকট্রিক বিভাগে। সৃজনশীল কাজের প্রতি তাঁর প্রচণ্ড আগ্রহ থাকায় পরবর্তিতে, এফডিসির তৎকালিন চলচ্চিত্র সম্পাদক আশু ঘোষ নিজের সহকারী হিসেবে বশীর হোসেনকে সম্পাদনা বিভাগে নিয়ে আসেন। আরেক চলচ্চিত্র সম্পাদক প্রনব মুখার্জীর সাথেও কাজ করেছেন বশীর হোসেন।

Advertisements

১৯৫৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, এহতেশাম পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘এ দেশ তোমার আমার’-এর মাধ্যমে চিত্রসম্পাদক হিসেবে আবির্ভূত হন বশীর হোসেন। তাঁর সম্পাদিত অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে- রাজধানীর বুকে, হারানো দিন, সূর্যস্নান, চান্দা, তালাশ, ধারাপাত, নতুন সুর, ইয়ে ভি এক কাহানী, বন্ধন, মেঘ ভাঙ্গা রোদ, মিলন, ক্যায়সে কাঁহু, সাত রং, বেগানা, অনেক দিনের চেনা, দুই দিগন্ত, গোধুলির প্রেম, রুপবান, জানাজানি, ১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন, নবাব সিরাজুদ্দৌলা, অপরাজেয়, উলঝন, নয়ন তারা, শীত বসন্ত, সাত ভাই চম্পা, তুম মেরে হো, সোয়ে নাদিয়া জাগে পানি, এতটুকু আশা, ময়না মতি, নীল আকাশের নিচে, মলুয়া, তানসেন, মধুমিলন, জোয়ার ভাঁটা, তিতাস একটি নদীর নাম, নাচের পুতুল, লালন ফকির, ওরা ১১ জন, আবার তোরা মানুষ হ, আলোর মিছিল, সুজন সখী, লাঠিয়াল, সূর্যগ্রহণ, মাটির মায়া, সীমানা পেরিয়ে, অন্যতম।

তিনি কয়েকটি প্রামাণ্যচিত্রেরও সম্পাদনার কাজ করেছেন যারমধ্যে আছে- বিদ্রোহী কবি, ফ্লাডস এন্ড টিয়ার্স, গঙ্গা ও গঙ্গা, প্রভৃতি।

খ্যাতিমান চিত্রসম্পাদক বশীর হোসেন দুটি চলচ্চিত্রও একটি প্রামাণ্যচিত্র পরিচালনা করেছেন। তাঁর পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘১৩নং ফেকু ওস্তাগার লেন’ মুক্তিপায় ১৯৬৬ সালে। ১৯৭০ সালে মুক্তিপায় তাঁর নির্মিত ‘আপন পর’ চলচ্চিত্রটি। পরিচালনা করেন ‘ফ্লাডস এন্ড টিয়ার্স’ নামে একটি প্রামাণ্যচিত্র, যার জন্য তখন তিনি পুরস্কৃতও হন।

কর্মজীবনে বশীর হোসেন পরপর তিনবার শ্রেষ্ঠ চিত্রসম্পাদক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে ‘লাঠিয়াল’ ১৯৭৬ সালে ‘মাটির মায়া’ এবং ১৯৭৭ সালে ‘সীমানা পেরিয়ে’ চলচ্চিত্রের জন্য এই পুরস্কার অর্জন করেন তিনি।

Advertisements

অসম্ভব গুণী এই চিত্রসম্পাদকে নিয়ে ‘বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ’ একটি বই প্রকাশ করেছে। ‘চিত্রসম্পাদক বশীর হোসেন’ নামে এই বইটি লিখেছেন, মীর শামছুল আলম বাবু।

একজন প্রতিভাবান মেধাবী সৃজনশীল চিত্রসম্পাদক হিসেবে বশীর হোসেন খ্যাতিমান ছিলেন। তাঁর মেধা ও সৃজনশীল কাজ দিয়ে এদেশের চলচ্চিত্রশিল্পকে করে গেছেন সমৃদ্ধ। এফডিসি প্রতিষ্ঠার পর, এ শিল্পের ভিত রচনায় ও চলচ্চিত্রশিল্পকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যারা নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন, তিনি ছিলেন তাঁদেরমধ্যে অন্যতম একজন ।

চলচ্চিত্র অঙ্গনে, একজন নম্র-ভদ্র ভালো মানুষ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন বশীর হোসেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসের পাতায়, ক্ষণজন্মা এই চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বের নাম চিরঅমলিন হয়ে থাকবে।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন