এক্ষেত্রে কনজাংটিভা বা চোখের পাতার ভেতরের স্তর আক্রান্ত হয়। কিন্তু সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হলো, এর থেকে রোগীর অন্ধত্ব দেখা দিতে পারে। রোগটির নাম ট্র্যাকোমা।
ট্র্যাকোমা এমন একটি রোগ, যা সামান্য ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ দিয়ে শুরু হলেও, এতে নষ্ট হতে পারে আপনার দৃষ্টিশক্তি।
সময় থাকতে চিকিৎসা করালে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে অবহেলা করলে চিরতরে হারিয়ে ফেলবেন দৃষ্টিশক্তি।
কিভাবে ছড়ায় এই রোগ
সংক্রমিত ব্যক্তির চোখ বা নাক থেকে নিঃসৃত তরল এই রোগ সরাসরি ছড়ায়। এটি মূলত অপরিষ্কার হাত, কাপড়, তোয়ালের মাধ্যমে ছড়ায়।যেসব এলাকায় পর্যাপ্ত স্যানিটেশন বা পানীয় জলের অভাব এবং ঘনবসতিপূর্ণ জীবনযাপন রয়েছে, সেখানেই বেশি দেখা যায়। এই সংক্রমণে চোখের সাদা অংশ এবং চোখের পাতার ভেতরের অংশ ঢেকে রাখা পাতলা পর্দা আক্রান্ত হয়।
রোগের প্রাথমিক লক্ষণ
- চোখ লাল হওয়া ও চুলকানি।
- চোখ থেকে পানি বা পিচুটি বের হওয়া।
- চোখের পাতা ফুলে যাওয়া।
- আলো চোখের ওপর পড়লে অস্বস্তি হওয়া।
অন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা কতটা
ট্র্যাকোমায় একবার আক্রান্ত হলে সম্ভাবনা থাকে বারবার হওয়ার। বারবার সংক্রমণের ফলে চোখের পাতার ভেতরের পৃষ্ঠে দাগ তৈরি হয়। এই দাগের কারণে একসময় চোখের পাতা ভেতরের দিকে উল্টে যেতে শুরু করে, যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলে ট্রিকিয়াসিস।
চোখের পাতা ভেতরের দিকে উলটে গেলে ক্রমাগত ঘর্ষণে কর্নিয়ায় আঘাত লাগে। এই ঘর্ষণের ফলে কর্নিয়া ধীরে ধীরে ঘোলাটে হয়ে যায়। ফলস্বরূপ আংশিক বা সম্পূর্ণ অন্ধত্ব দেখা দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে এই রোগে অন্ধত্ব তৈরি হয়।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই রোগ প্রতিরোধের জন্য ‘এসএএফই’ পদ্ধতির কথা জানিয়েছেন। সার্জারি, অ্যান্টিবায়োটিকস, ফেস ক্লিনলিনেস ও এনভায়রনমেন্টাল হেলথ ইমপ্রুভমেন্ট প্রক্রিয়ায় এই রোগ নিরাময় সম্ভব। সময়মতো চিকিৎসার মাধ্যমে এই সংক্রমণকে সারিয়ে তোলা সম্ভব। সামান্য সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে ট্র্যাকোমার কারণে হওয়া অন্ধত্বকে সহজেই প্রতিহত করা যায়।
