English

33.3 C
Dhaka
মঙ্গলবার, জুলাই ২২, ২০২৫
- Advertisement -

পরামর্শ বিবেচনায় নিন: গতানুগতিক বাজেট

- Advertisements -
দেশের শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য—সব ক্ষেত্রেই এক মারাত্মক আস্থাহীনতা বিরাজ করছে। নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে না বললেই চলে। অথচ দেশে বেকার তরুণের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। পুরনো অনেক শিল্প-কারখানাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
অনেকগুলো খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। চলছে শ্রমিক ছাঁটাই। অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের চাপে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠে গেছে। এর মধ্যে সোমবার ঘোষিত হয়েছে গতানুগতিক বাজেট।
অর্থনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাজেটে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলার দিকনির্দেশনা নেই। বিনিয়োগ উৎসাহিত করার কিংবা ঝুঁকিতে থাকা শিল্পগুলোকে পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা নেই। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের জীবনমান উন্নয়নের পদক্ষেপ নেই। বরং জরুরি কিছু ক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রত্যাহার ও অতিরিক্ত করারোপের ফলে চূড়ান্তভাবে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের জীবন আরো দুর্বিষহ হয়ে উঠতে পারে।
গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার উত্খাতের পর মানুষ পুরনো অনেক ব্যবস্থার পরিবর্তন আশা করেছিল। কিন্তু গতানুতিক এই বাজেটে পুরনো প্রায় সব ব্যবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। বরং কিছু ক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপ অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক অর্থনীতিবিদ।কিছু ক্ষেত্রে শুল্ক-কর আরোপের মাধ্যমে বেসরকারি খাতের ব্যবসা করার সুযোগ আরো কঠিন করা হয়েছে। বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে।এর ফলে বিদ্যুৎ-জ্বালানি ব্যয়বহুল হবে। এতে শিল্পের উৎপাদন খরচ বাড়বে।

তখন শিল্পের টিকে থাকা আরো কঠিন হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। অন্যদিকে উৎপাদন খরচ বাড়লে উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়বে এবং তা ভোক্তার ওপর আরো চাপ বাড়াবে। অটোমোবাইল খাতে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক ১০% থেকে বাড়িয়ে ২৫% করা হয়েছে, তাতে এ খাতের স্থানীয় উৎপাদন ব্যয় বাড়বে।

কটন সুতার উৎপাদন পর্যায়ে সুনির্দিষ্ট কর প্রতি কেজিতে তিন টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ টাকা করা হয়েছে। কৃত্রিম আঁশ ও অন্যান্য আঁশের মিশ্রণে তৈরি সুতার সুনির্দিষ্ট কর একই হারে বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া  টার্নওভার কর ০.৬% থেকে বাড়িয়ে ১% করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি করেছেন ডিসিসিআই সভাপতি। ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ কমলেও স্থানীয়ভাবে মোবাইল ফোন উৎপাদনে ভ্যাট বাড়ানোয় এ শিল্পের বিকাশ ব্যাহত হবে বলেও মনে করা হচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘গুণগত দিক থেকে এই বাজেটে আমরা কোনো কিছু পরিবর্তন দেখিনি। শুধু বাজেটের সংখ্যা সামান্য কিছু কমেছে। কিন্তু বাজেট কাঠামো একই রয়ে গেছে। সুতরাং এটা আগামী দিনে সরকারের জন্য খুব একটা সহজ কিছু হবে না।’ অর্থনীতিবিদ সেলিম রায়হান বলেন, এই বাজেটে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য কার্যকর কিছুই নেই। তারা যে সংকটে আছে, সেই সংকটকে চিহ্নিত করেই বাজেট পরিকল্পনা হওয়া উচিত ছিল। মূল্যস্ফীতির কারণে তাদের প্রকৃত আয় কমে গেছে, কিন্তু বাজেটে সেই চাপ লাঘবে কোনো বাস্তব পদক্ষেপ নেই।

আমরা আশা করি, বাজেট নিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে যেসব সমালোচনা হবে, যেসব পরামর্শ আসবে, সেগুলো বিবেচনায় নিতে হবে। বাজেটকে জনপ্রত্যাশার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করতে হবে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/h8c1
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন