নাসিম রুমি: গ্যাসের ব্যথায় মাঝেমধ্যেই কি অস্বস্তি ও অস্থির লাগছে? কখনো এমন হচ্ছে যে ওষুধ খেলে ব্যথা একটু কমছে বা কখনো কমছেই না। অনেক সময় এই ব্যথা গ্যাসের ব্যথা নয়, হার্টের ব্যথা, যাকে বলে স্টেবল এনজাইনা। হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণগুলো জানা থাকলে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে যাওয়া ও চিকিৎসা শুরু করা যায়। আবার সব সময় যে হার্ট অ্যাটাকের পূর্বলক্ষণ থাকে, তা–ও কিন্তু নয়।
তবে হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গগুলো জেনে রাখা ভালো:
বুকে ব্যথা
হার্ট অ্যাটাকের প্রথম ও প্রধান উপসর্গ হলো বুকে ব্যথা। একদম বুকের মাঝ বরাবর ব্যথা থাকবে এবং তীব্র হবে। মনে হবে বুক চেপে আসছে বা হাতি পা দিয়ে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে যাকে বলা হয় ‘সেন্ট্রাল কমপ্রেসিভ চেস্ট পেইন’। এই ব্যথা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ব্যথার তীব্রতা এত বেশি থাকে যে রোগীকে মৃত্যুভয় পেয়ে বসে। বুকের ব্যথা ঘাড়ে, চোয়ালে ও বাঁ হাতে ছড়িয়ে পড়ে। একে রেডিয়েটিং পেইন বলে। অনেকের পিঠেও ব্যথা হতে পারে।
অতিরিক্ত ঘাম ও বমি হওয়া
বুকের ব্যথার সঙ্গে প্রচণ্ড ঘাম হয় ও রোগী অস্থির হয়ে পড়ে। বুক ধড়ফড় করে বা প্যালপিটেশন হয়। বুকে তীব্র ব্যথার সঙ্গে বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ।
শ্বাসকষ্ট
হার্ট অ্যাটাকের পর অনেকের হার্ট ফেইলর হয়। ফলে ফুসফুসসহ শরীরে, পেটে ও পায়ে পানি জমে। ফুসফুসে বেশি পানি জমলে শ্বাসকষ্ট ও কাশি শুরু হয়।
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
হার্টের ধমনিগুলোয় রক্ত চলাচল কমে বা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হার্ট দুর্বল হয়ে যায়। অনেকেই এ সময় কলাপ্স বা অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
হৃৎস্পন্দন এলোমেলো হয়ে পড়ে
হার্ট অ্যাটাকের পরবর্তী জটিলতা হিসেবে আসে পালস এলোমেলো হয়ে যাওয়া। যাঁদের অনিয়মিত পালস পাওয়া যায়, তাঁদের দ্রুত চিকিৎসা না দিলে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে।
বেশির ভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই কোনো রকম পূর্বলক্ষণ ছাড়াই হার্ট অ্যাটাক হয়। আবার অনেকের অল্প কিছু উপসর্গ থাকে, যা বিশ্রাম নিলে কমে যায়, একে স্টেবল এনজাইনা বলে।
অনেকের বিশ্রাম নিলেও কমে না। কিছু ওষুধ, যেমন জিবের নিচে জিটিএন ওষুধ স্প্রে করলে কমে, একে আনস্টেবল এনজাইনা বলে। যেকোনো ধরনের হার্ট অ্যাটাক হোক না কেন, লক্ষণ বুঝতে পারলেই অতি দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করা যাবে, রোগীর পরবর্তী জটিলতা ও মৃত্যুর আশঙ্কা তত কমানো সম্ভব।
ডা. আফলাতুন আকতার জাহান, মেডিসিন স্পেশালিস্ট, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা।